কবি: শিখা চক্রবর্তী
কোভিড বিদায় নেবে যখন
সবাই বসে ভাববে তখন
কেমন ছিলাম আগের দিনে
সেখান থেকে হলাম কেমন
স্কুল, কলেজ আর অফিস ছিল
হাজির হবার তাগিদ ছিল
হপ্তা শেষে রেস্তোরাঁতে
নানান স্বাদের খাবার ছিল
শপিং হতো জিমও হতো
সিনেমা আর নাটক হতো
অনেক রকম ফাংশনেতে
মন ভরানোর রাস্তা কত
পুজো, বিয়ের অনুষ্ঠানে
সাজত সবাই খুব যতোনে
খেলার মাঠে ক্রীড়াঙ্গনে
হাজির হতো হাজার জনে
এর ওপরে উপরি তখন
স্বদেশ এবং বিদেশ ভ্রমন
সুযোগ পেলেই টিকিট কেটে
ট্যুরটা হত যখন তখন
দুঃখ সুখে হেসে খেলে
দিনগুলো তো কাটছিল বেশ
ক্যালেন্ডারের নিয়ম মেনে
বিশ উনিশের দিন হল শেষ
তারপরে এই নতুন বছর
বিষ নিয়ে এই বিশের বছর
করোনা আর কোভিদ নামের
এলো যে রোগ সংক্রমণের
আক্রান্ত ও মৃতের যে হার
লাফিয়ে বাড়ে সংখ্যা তো তার
নাস্তানাবুদ স্বাস্থ্য বিভাগ
টাইমও নেই দমটা ফেলার
আতংকিত জগতজনের
শঙ্কা শুধু সংক্রমণের
এত যে ভয় কারণ কী তার
ওষুধ যে নেই এই করোনার
তাই পৃথিবীর নানান কোণে
ওষুধ খোঁজেন অনেক জনে
ব্যস্ততা তার খুব চরমে
মরবে কোভিড কী ভ্যাক্সিনে
বাঁচার নতুন আইন এলো
দেশ জুড়ে লকডাউন হল
সংগে আরো নিয়ম শেখা
জারি হল নির্দেশিকা
লকডাউনের আইন কঠোর
থাকবে সবাই ঘরের ভেতর
যে ছুঁচিবাই ঠাট্টা ছিলো
সেটাই কিনা দাওয়াই হল
নাক আর মুখে ঢাকনা পরে
হাত ধুয়ে যাও বারংবারে
বিশটি সেকেন্ড ঘড়ি ধরে
হাতটা ধোবে নিয়ম করে
যত্র তত্র থুতু ফেলার
অভ্যেসটা অসভ্যতার
রোগ জীবাণু জুতোয় চড়ে
আসতে পারে সবার ঘরে
সামনেতে কেউ আসলে পরে
পিছিয়ে যাবে তিন হাত দূরে
মাস্কটা পরেই বলবে কথা
দুঃখ সুখ আর মনের ব্যথা
যে সব জিনিস নেই দোকানে
আনিয়ে নেবে অনলাইনে
আসবে যখন সেসব ঘরে
রাখবে ফেলে দুদিন ধরে
সাবান গুলে গামলা ভরে
সবজি ধোবে নিয়ম করে
ঝোলা জুতোও বাদ দিওনা
সবখানেতেই এই করোনা
বয়স হলে ষাটের ওপর
চুপ করে রও ঘরের ভিতর
বাইরে যাবে চাপবে গাড়ি
বন্ধ সেটাও জানতে পারি
মিটিং মিছিল আড্ডা দিলে
পুলিশ তোমায় ভরবে জেলে
যেওনা ওই নাপিত বাড়ি
যতোই বাড়ুক চুল আর দাড়ি
জিনিস দেবেন দোকানদারে
সেটাও ঘড়ি ঘণ্টা ধরে
রোগের ছোঁয়াচ কোথায় কেমন
লাল সবুজ আর অরেঞ্জ যে জোন
রোগের ভয়ে কারফিউ জারি
অবাক হয়ে জানতে পারি
বাইরে যখন ফেলবে নজর
দেখবে যেনো ভূতের শহর
স্কুল কলেজ আর অফিস এনে
বসাও এখন ঘরের কোণে
ছাত্র ছাত্রী সবাই জানে
পড়তে হবে অনলাইন-এ
কষ্টে কেটে এই কটা মাস
পড়ছে সবার মাথায় যে হাত
থাকতে গিয়ে ঘরের কোণে
অর্থনীতি যাচ্ছে নেমে
বেকারী আর পেটের জ্বালা
বাধ্য করে খুলতে তালা
এইবারে ভাই সব কুপোকাত
এক্কেবারে শাঁখের করাত
ভাবো যদি বাইরে যাবে
করনাতে কামড়ে দেবে
সেইটে ভেবে থাকলে ঘরেই
মরবে যে লোক অনাহারেই
সমস্যাটা চক্রাকারে
স্মরণ করি তাই তোমারে।।
লেখকের কথা: শিখা চক্রবর্তী
হাউস ওয়াইফ- নানা ধরনের লেখা পড়তে এবং ভারতবর্ষের বিভিন্ন রাজ্য ঘুরে দেখতে ভালো লাগে। প্রিয় বই তো অনেক। তার মধ্যে মহাভারত একনম্বরে। এছাড়া বঙ্কিমচন্দ্র, রবীন্দ্রনাথ, বিভূতিভূষণ, কালকূট খুবই পছন্দের। নির্মল বুদ্ধি যুক্ত হাস্যরস খুব আকর্ষক লাগে তাই সুকুমার রায় খুব পছন্দের। উপেন্দ্রকিশোর এবং সত্যজিৎ রায় তো আছেনই। সত্যি বলতে আরো কত নাম যে ভালো লাগার লিস্টে আছে তা বলে শেষকরা যাবে না। কবিতার চেয়ে ছড়া একটু বেশিই টানে এবং তাই মাঝে মাঝে একটু চেষ্টা করা হয় আর কি।
Khub bhalo laglo. Boye jayoya nodir moto sabdo gulo moner modhye bastoboter anubhuti chhoriye dilo.
Darun kakima.
Atyanta chandi ebong khoob e unnata maner kavya.Darun tripti pelam.