কবি: রাজীব চক্রবর্ত্তী
প্রসারিত দৃষ্টির সীমা ছাড়িয়ে
কখন যেন একটা শরীর অনেক বড় হয়ে যায়,
ছোট হয়ে পড়ে থাকে আলোয়ানের মাপ।
দেয়ালে ঝোলানো রঙচটা ফতুয়ায় লেগে থাকা ঘামের গন্ধ
সারা পৃথিবীর সোঁদা মাটির নেশা ছড়িয়ে,
ঘাসের বীজ হয়ে বন্ধ ঘরে ঘুরে বেড়ায়।
একটা শরীর অনেক বড় হয়ে যায়,
পিছনে পড়ে থাকে গরম ভাতের সুগন্ধ।
পাঞ্জাবীর পকেটে পড়ে থাকা খুচরো পয়সা,
ভাঁজ করে রাখা খবরের কাগজের হেডলাইনে
রাষ্ট্র ও দেশের লড়াই,
সব ছাপিয়ে জেগে থাকে –
এক জীবন সংগ্রামের অনন্ত অবয়ব।
একটা শরীর চোখ বন্ধ করলেই বড় হয়ে যায়,
অনায়াসে বয়ে চলে
ঘাড়ের উপর লেপ্টে থাকা অপত্য শরীরের ভার,
অজান্তেই সহজ হয় পথ চলা।
শাখা প্রশাখার ভারে বিস্তৃত বট বৃক্ষেও একদিন ক্লান্তি নামে,
নেই সময়ের সাপ লুডো খেলায় পিছিয়ে আসার পথ।
তার অন্তহীন পথচলার শ্রান্তি লাঘব করার সাধ্য
মাটি আঁকড়ে থাকা ঝুরিদের নেই।
তারা শুধু দেখে,
চেতন-অচেতনের মাঝে জেগে থাকা একটা শরীর
কখন যেন ইতিহাসের মত ব্যাপ্ত হয়ে যায়।
ছবি: প্রণবশ্রী হাজরা
লেখকের কথা: রাজীব চক্রবর্ত্তী
জন্ম ১৯৭০ সালের ৩০শে ডিসেম্বর, কলকাতার সিঁথিতে। পেশায় কেন্দ্রীয় সরকারী কর্মচারী। দৈনন্দিনতার ক্লান্তি কাটাতেই মূলত: কলম ধরা। বেশ কয়েকটি লিট্ল ম্যাগাজিনে লিখেছেন গল্প, কবিতা। ২০১৭ সালে প্রকাশিত “সংশ্লেষ” নামক গদ্য সংকলনে স্থান পেয়েছে তাঁর মুক্তগদ্য। ঐ একই বছরে সোনারপুর কাব্যমঞ্চ আয়োজিত স্বরচিত কবিতা প্রতিযোগিতায় তৃতীয় স্থান লাভ করেন তিনি। ২০১৯ সালে প্রকাশিত “অন্য গদ্য” গ্রন্থে স্থান পেয়েছে তাঁর গদ্য। জীবনের বিবিধ অনুভূতি, বাস্তবতাকে ছন্দে বাঁধার প্রয়াসে তাঁর কবিতাচর্চা।
khub bhalo…
অদ্ভুত অনুভূতি। চেনা অথচ অচেনা। রক্তস্রোতের ভেতরে ফল্গুধারা যেন!
Khub bhalo maner lekha eti…aro likhe jao..egiye hai..
ধন্যবাদ
ভালো। ভিতরের অনুভূতির সংযত প্রকাশ। কিছু আটপৌরে দৃশ্য কবিতার মাত্রা পেয়েছে বাক্য ঘটনের মধ্যে। ‘… ইতিহাসের মত ব্যাপ্ত হয়ে যায়।’ আমরা সবাই একদিন ইতিহাস হয়ে যাই।