লেখক : মিটু সর্দার
পৌষ মাসের জাড়, টিকে থাকা ভার
হিমেল শীতল হাওয়ায় কাঁপছে গতর।
পথঘাট ফাঁকা, চারদিকে কুয়াশার চাদরে ঢাকা
এই শীতে ঘুরছে না কলকারখানার চাকা।
গতকাল যে শিশু এসেছে ধরায়—-
টিকে থাকতে পারবে কি এই জাড়ের বিরুদ্ধে করে লড়াই?
এই ভোরে নাম নেই সূর্য ওঠার —
দস্যি ছেলেরা ঘর ছেড়ে হয়েছে বাহির
খড়কুটো কুড়িয়ে জ্বালিয়েছে আগুন
কোকিলের ডাকে আন্দাজ করি এলো বলে ফাগুন।
বৃদ্ধগুলি বুঝি এবার সত্যি মারা যাবে
পুকুরের ঠান্ডা জলে স্নান করে —
এমনিতেই নওজোয়ানের গতর থরথরিয়ে কাঁপে
বৃদ্ধগুলির বুঝি এবার জীবনহানি হবে ধাপেধাপে।
তপ্ত দুপুর, আদিত্যও গায়ে মুড়িয়ে নিয়েছে কুয়াশার চাদর
স্নান করে যে সূর্যালোকের একটু আলো লাগাবে গায়ে
সেই সুযোগটুকু দিচ্ছে না হিমময় পৃথিবীকে।
কৃষক তার চাষের বলদ খোঁয়াড়ে পুরে
টাঙিয়ে দিয়েছে লাঙ্গল-জোয়াল —
সবাই হাতপা গুটিয়ে গরম চায়ে মুড়ি ঢেলে চুমুক দিচ্ছে।
দূরপাল্লার যানগুলো হেড লাইট জ্বেলে —
খুব সতর্কতা অবলম্বন করে ধীরগতিতে ছুটছে গন্তব্যে
গায়ে পলিথিন মুড়িয়ে নেমে পড়েছে রাস্তায় রিকশার প্যাডেল মারতে
রাস্তার মোড়ে খেজুরের রস নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন বিক্রেতা।
যাঁরা এই শৈত্যপূর্ণ উপেক্ষা করে
কর্মের সন্ধানে বেরিয়েছেন —
তাদের ঘরে খাবার নেই, কিছুই অবশিষ্ট নেই চুলায় চড়াবার মতো।
লেখক পরিচিতি : মিটু সর্দার
মোঃ আকাইদ-উল-ইসলাম (মিটু সর্দার)। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলাধীন কসবা উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের অন্তর্গত বড়মুড়া গ্রামে ১৯৮৭ সালের ১০ই নভেম্বর, এক সম্ভান্ত্রশালী মুসলিম পরিবারে কবির জন্ম। কবির পিতার নাম নূরুল ইসলাম (মাষ্টার) আর পিতামহের নাম আলতাব আলী সর্দার। কবির চার ভাই এবং দুই বোন। কবি যখন ছোট তখন মা এবং বড় ভাইকে হারান। ভাইবোনের মধ্যে কবি তৃতীয় এবং ভাইদের মধ্যে দ্বিতীয়। কবির যৌথ কাব্যগ্রন্থ "অনুভবের সব রঙে তুমি, রমজান সংকলন, কাব্যের উঠোনে শব্দ নাচে, ইত্যাদি। কবির ছোট বেলা থেকেই কবিতা লিখা সখ । স্কুল জীবন থেকে মাঝেমধ্যে কবিতা লিখতেন। কবি গ্রামের অন্যায়, অবিচার, নির্যাতন, জোরজুলুমের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী লিখা লিখতেন।