লেখক : ফাহিম আবিদ
রংপুর বিনোদন উদ্যান ও চিড়িয়াখানা, যা শুধু রংপুরের নয় বরং পুরো উত্তরবঙ্গের মধ্যে সর্ববৃহৎ চিড়িয়াখানা। এটি ১৮৮৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৯৯২ সালে সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়। এটি দেশের দ্বিতীয় সর্ববৃহৎ চিড়িয়াখানা। এটি প্রায় ২২ একর সুবিশাল জায়গা জুড়ে অবস্থিত। এতে রয়েছে কৃত্রিম হ্রদ, শিশু পার্ক ও আরও অনেক আকর্ষণ। ছুটির দিনে এখানে রংপুরের মানুষের ভিড় চোখে পড়ার মতো। এটি শহরের হনুতলা রাস্তার পূর্বপাশে অবস্থিত। এতে নানা প্রজাতির পশুপাখি রয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য – সিংহ, উটপাখি, হরিণ, গাধা, গণ্ডার, জলহস্তি, অজগর, হনুমান, বানর ইত্যাদি।এসকল প্রাণীর কলরবে চিড়িয়াখানার পরিবেশ আরও সজীব হয়ে ওঠে। তবে চিড়িয়াখানায় কিছু সীমাবদ্ধতা চোখে পড়ার মতো। যেমন – বাঘের খাঁচায় বাঘ ছিল না। খাঁচাটি শূন্য ছিল। রংপুর চিড়িয়াখানায় কখনও বাঘ ছিলই না বা যা ছিল তা হলো বাঘিনী। যা মারা গেছে। তাই বাঘ শূন্য খাঁচাটিই শুধু পড়ে রয়েছে। জানা যায়,৯০ এর দশকে চিড়িয়াখানার মূল আকর্ষণ ছিল এই রয়েল বেঙ্গল টাইগার। এমনকি পূর্বে ২২টি বাঘ জন্ম নিয়েছে এই চিড়িয়াখানায়। কিন্তু যত্নের অভাবে এবং প্রজননের জন্য সঠিক পরিবেশ না থাকার কারণে আজ চিড়িয়াখানার প্রধান আকর্ষণ রয়েল বেঙ্গল টাইগার শূন্য রংপুর চিড়িয়াখানা। শোনা যায়, পূর্বে ঢাকার চিড়িয়াখানায় বাঘের বাচ্চা নিয়ে যাওয়া হতো এখন তা শুধু সোনালী অতীত। আর এখন চিড়িয়াখানায় একটি মাত্র সিংহ রয়েছে। যার বয়স ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। অর্থাৎ এটিও যেকোনো সময় মারা যেতে পারে। এটির কোনো সঙ্গী নেই। বেশীরভাগ প্রাণীই সঙ্গীহীন অবস্থায়। তাই রংপুরের সর্ববৃহৎ চিড়িয়াখানাটি তার নিজস্বতা হারাচ্ছে। দিন দিন দর্শনার্থী হারাচ্ছে চিড়িয়াখানাটি। প্রাণী সংখ্যা বৃদ্ধি ও বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণীদের অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে চিড়িয়াখানা তার পুরোনো জৌলুশ ফিরে পাবে তাই আশা করা যায়। তবে আরও অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। যেমন- চিড়িয়াখানার ভেতরে চাঁদাবাজীর অভিযোগ রয়েছে। যার জন্য দর্শনার্থীদের আগ্রহ দিন দিন কমছে। আর তাছাড়া দেখা যায় মাঝে মাঝে কিছু লোক খাবার বিক্রি করে যারা ১০ টাকার জিনিস জোর করে দিয়ে ৩০ থেকে ৪০ টাকা রেখে মানুষজনকে হয়রানি করে। তাছাড়া চিড়িয়াখানার ভিতর নানা ধরনের অসামাজিক কাজের নমুনা পাওয়া যায়। আর চিড়িয়াখানায় সঠিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার অভাব রয়েছে। আর প্রাণীদেরও সঠিক পরিচর্যা করা হয় না। খাবারের ক্ষেত্রেও অনেক অনিয়ম লক্ষণীয়। সব মিলিয়ে চিড়িয়াখানার সামগ্রিক পরিবেশ হুমকির মুখে। সকলের প্রচেষ্টা এবং চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের নজরদারি পারে এসকল অনিয়মের সমাধান করে রংপুর চিড়িয়াখানাকে একটি মানসম্মত চিড়িয়াখানা হিসেবে গড়ে তুলতে, পাশাপাশি আরও কিছু প্রাণী যেগুলো দর্শনার্থীদের বিশেষ আকর্ষণ হবে তা যোগ করা।
লেখক পরিচিতি : ফাহিম আবিদ
ফাহিম