লেখক : মোঃ মাসুদ রানা
তারপর নিজেকে জিজ্ঞেস করলাম। ২২ বছরের অতিবাহিত জীবনে আমার স্বার্থকতা কি আমি ছুড়ে ফেলে এসেছি?
এইরকম প্রশ্নে অবচেতন মন একটু উত্তর দিতে খেলা করে।সে সরাসরি আমাকে উত্তর না দিয়ে শুরুতে বললো –
-২২ বছরের মধ্যে কি একবারও তুমি জীবনের নিশ্চয়তা নিয়ে ঘুমাতে পেরেছো?
-ছাত্রজীবনে কি তোমার মাঝে কখনো অনিশ্চয়তা, সংশয় ভর করেনি?
-এই সময়ে পরিবারের কতোটুকু বোঝা কমিয়েছো? সামনে কতটুকু পারবে, বলতে পারো?
-এই সময়ে নিজের চাহিদাগুলো লুকিয়ে রাখার কারণ কি?
-লক্ষ্যে পৌঁছাতে তোমার চারপাশের উপাদান ভারসাম্যে থাকা জরুরি।সেটা আছে?
অবচেতন মন আরো কিছু বলতে চাচ্ছিল আমি থামিয়ে দিয়ে বললাম। আমি যে উত্তর তোমার কাছে আশা করছি সেটা শুনতে চাই।
অবচেতন মন আবার সরাসরি কিছু না বলে বললো:-
-তুমি কি তোমার গ্রামের সেই বন্ধু,যে হাইস্কুল পড়াশোনা শেষ না করার আগে পরিবারের তাগিদে কাজে ঢুকে পড়েছিল;তার থেকে বেশি সময় ধরে তুমি তোমার পরিবারের হাল ধরতে পারবে?
-তোমার গ্রামের সেই বন্ধুর থেকে তুমি কি বেশি তোমার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সময় কাটাতে পারবে?
-তোমার গ্রামের বন্ধুর থেকে তুমি কি খুব বেশি রাজকীয় ভাবে থাকতে পারবে?(এই সময়ে অবচেতন মন, অবস্থানের জন্য গ্রামের আর শহরের খরচ ইঙ্গিত করলে,আমি বুঝতে পেরেছি বলে উত্তর দিলাম)
– ছাত্রজীবন শেষে সবকিছু ক্লিয়ার এই ভয় তোমার বন্ধুর মধ্যে দেখিনি, তোমার মাঝে কি চলে?
-তুমি মারা যাবে আর তোমার বন্ধুও। তুমি বড় অফিসার হলেও শেষে কোনো কাজে দিবে?
-তোমার বন্ধু এখন ছেলের বাবা। তুমি বাবা হতে আর কতো দূরে?
আমি এরপর অবচেতন মনকে বললাম থাক আর অন্তত কিছু বলো না। আমি আমার উত্তর পেয়ে গেছি। শেষে বিয়ের কথা না বলতে পারতা !
অবচেতন মন এবার হেসে উঠলো।
লেখক পরিচিতি : মোঃ মাসুদ রানা
পড়াশোনা করছি শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা