লেখক : শান্ত
অধ্যায় ১: কৌতূহলের দরজা
তানিম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। ইতিহাস বিভাগে পড়ে, কিন্তু ওর কৌতূহল ইতিহাসের বাইরেও — বিশেষ করে অদ্ভুত, রহস্যময় জিনিসের প্রতি।এক রাতে রিসার্চ করতে করতে Reddit-এর একটা পোস্টে ওর চোখ যায়:
“যদি সাহস থাকে, তবেই এই লিঙ্কে ক্লিক করো। কিন্তু সাবধান, একবার ঢুকলে ফেরার রাস্তা থাকবে না।”
নিচে শুধু একটা অদ্ভুত URL, যা সাধারণ ওয়েবসাইটের মত না, বরং ডার্ক ওয়েবের মতো লাগে।
তানিম হাসে, “সব bluff, কিছুই না।”
তবুও, curiosity ওকে তাড়িয়ে নিয়ে যায়। VPN চালু করে, TOR browser ওপেন করে, সেই লিঙ্কে ক্লিক করে।
অধ্যায় ২: স্ক্রিনের ওপারে কে?
লিঙ্কটা খুলতেই স্ক্রিনে আসে একটা লাইভ ভিডিও ফিড — একটা ঘর, কোথায় সে জানে না। ক্যামেরার সামনে বসে আছে মুখঢাকা একজন লোক, কালো হুডি পড়া। হঠাৎ সে কথা বলে:
“তানিম… তুমি এসেছো। আমরা অপেক্ষা করছিলাম।”
তানিম থমকে যায়। “কী? আমার নাম জানে কীভাবে?”
লোকটা আবার বলে, “তুমি ৭ মিনিটের মধ্যে বের না হলে, তুমি আমাদের অংশ হয়ে যাবে — ঠিক আগের সেই ছেলেটার মতো।”
ভিডিওতে হঠাৎ অন্য আরেকটা ফিড চালু হয় — সেখানে দেখা যায় এক যুবক কান্না করছে, কিন্তু গলা বন্ধ করা। ঘরটা যেন তানিমেরই মত কারও!
অধ্যায় ৩: দৌড় শুরুর আগে…
তানিম পিছনে তাকায় — ওর রুমের জানালাটা হঠাৎ করে খুলে যায়… বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে এক অচেনা গন্ধ।
কম্পিউটারের স্ক্রিন কালো হয়ে যায়। এরপর টাইপ হতে থাকে:
“তোমার সময় শুরু হ’ল…”
অধ্যায় ৪: সাত মিনিটের ছায়া
তানিম চোখ বড় বড় করে স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকে। তার হাত ঘামছে। সে উঠে দাঁড়ায়, জানালাটা বন্ধ করতে যায়, কিন্তু খেয়াল করে — জানালাটা বাইরে থেকে লক করা! অথচ সে নিজেই খুলে রেখেছিল।
হঠাৎই, কম্পিউটারের স্ক্রিন আবার জ্বলে ওঠে।
“তুমি যদি বাঁচতে চাও, তোমাকে তিনটি ধাপ পার হতে হবে। প্রথম ধাপ: খুঁজে বের কর তোমার রুমে এমন কী আছে যা আগে ছিল না।”
তানিম ঘরের দিকে তাকায়। সবকিছু প্রায় একইরকম, কিন্তু… বুকশেলফে একটা পুরনো ফাইল। ও সেটা কোনোদিন দেখেনি। তুলে নিতেই ভেতর থেকে একটা পেপার পড়ে — তাতে লেখা:
“Phase One: তুমি এখন তাদের নজরে আছো।”
হঠাৎ, বাইরের করিডরে কার যেন পায়ের আওয়াজ। ধীরে ধীরে এগিয়ে আসছে তার দরজার দিকে…
অধ্যায় ৫: নীরব ডাক
তানিম দম বন্ধ করে দাঁড়িয়ে থাকে। দরজার নিচ দিয়ে কারা যেন আলো ফেলে। সে আস্তে করে দরজার কাছে যায়, কিন্তু খুলে না। কিছুক্ষণ পরে আওয়াজ থেমে যায়।
হঠাৎ ফোনে একটা নতুন মেইল আসে — প্রেরক অজানা। subject line: “তোমার দ্বিতীয় ধাপ এখন শুরু।”
মেইলে শুধু একটা QR code। তানিম তা স্ক্যান করে। এবার আর কোনো ভিডিও না, বরং তার ক্যাম্পাসের একটা পরিত্যক্ত বিল্ডিং-এর ম্যাপ দেখায়।
তানিম ভাবে, “এরা কি চায় আমি সেখানে যাই? আমি না গেলে কী হবে?”
একটু পরে আবার স্ক্রিনে টাইপ হয়: “তুমি যদি না যাও, তবে আমরা আসব। এবার বন্ধুদের নিয়ে।”
অধ্যায় ৬: ডার্ক বিল্ডিং
পরের রাতে তানিম সেই পরিত্যক্ত বিল্ডিং-এ যায়। তার সাথে একটা টর্চ, আর একটি রেকর্ডার।
ভেতরে ঢুকেই অনুভব করে, কেউ একজন তাকেই লক্ষ্য করছে। দেয়ালে আঁকা একটা চিহ্ন দেখে — সেটাই স্ক্রিনে দেখা লোকটার হুডির পেছনে ছিল।
হঠাৎ পেছন থেকে কেউ বলে, “তুমি অনেক দেরি করে ফেলেছ তানিম। এখন আর বের হওয়া সহজ হবে না।”
সে ঘুরে দাঁড়ায় — কিন্তু পেছনে কেউ নেই।
অধ্যায় ৭: শূন্যের ঘর
তানিম যখন সেই পরিত্যক্ত বিল্ডিং-এর ভেতরে এগিয়ে যায়, চারদিকে ভাঙা কাচ, পুরনো ফাইল, দেওয়ালে অদ্ভুত চিহ্ন।
একটা ঘরে ঢুকে সে দেখে — একটা সাদা বোর্ড, তাতে হাতে লেখা একটা মেসেজ:
“যার নাম তুমি জানো না, তাকে ভুলে যেও না।”
এইবার ওর চোখ যায় বোর্ডের পাশে দেয়ালে সাঁটানো ছবি — সব ছবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের।
চোখে পড়ে একটা চেনা মুখ — রিদওয়ান, এক সময়ের বন্ধু, হঠাৎ নিখোঁজ হয়েছিল।
তানিম ফিসফিস করে বলে, “ওর নাম তো মিডিয়া কিছুতেই বলেনি… কিন্তু আমি জানতাম…”
অধ্যায় ৮: তাদের আসল উদ্দেশ্য
হঠাৎই ঘরের দরজা বন্ধ হয়ে যায়। পেছনে একটা স্পিকার থেকে আওয়াজ আসে:
“তুমি এখন শেষ ধাপে পৌঁছেছ, তানিম। যারা জানে, তারাই টার্গেট। যারা কৌতূহলী, তারাই আমাদের পথ। আর তুমি তো আমাদের সবথেকে প্রিয় ক্যান্ডিডেট।”
দেয়ালের পেছনের দরজা খুলে যায় — সিঁড়ি ধরে নিচে নামতে হয়। নেমে দেখে — একটা বেসমেন্ট। একদিকে সারি সারি কম্পিউটার, অন্যদিকে কাচের পেছনে কয়েকজন বসে আছে — যেন ঘুমন্ত অবস্থায়। তাদের মাথায় হেডসেট, শরীর চললেও চোখ বন্ধ।
একজন দাঁড়িয়ে বলে —
“তারা আমাদের নিয়ন্ত্রণে। একবার সংযুক্ত হলে, তারা আর এই জগতে ফিরে আসতে পারে না।”
অধ্যায় ৯: ডার্ক লিঙ্কের বাইরে
তানিম বুঝে যায় — এই পুরো সিস্টেমটা একটা mental trap। তারা কৌতূহলী ছাত্রদের টার্গেট করে, তাদের ডার্ক লিঙ্কে টেনে নিয়ে যায়, আর এরপর তাদের মনযোগ, স্মৃতি, এবং ইচ্ছাশক্তি দখল করে।
তানিম হঠাৎ একটা পোর্টেবল Wi-Fi jammer বের করে — হাসানের দেয়া। সেটা চালু করে… পুরো সিস্টেম ব্ল্যাকআউট!
এক মুহূর্তে বিদ্যুৎ চলে যায়, দরজা খুলে যায়। সে ছুটে বেরিয়ে পড়ে।
অধ্যায় ১০: শেষ অধ্যায় – বাস্তব, না বিভ্রম?
তানিম বাড়ি ফিরে আসে। সে যেইসব ছবি দেখেছিল, নাম যেগুলো জেনেছিল — সব মিডিয়া, পুলিশ, কেউই মানতে চায় না।
তবে নিজের ঘরে ফিরে সে দেখে — ডেস্কে রাখা ওর ল্যাপটপে একটি নতুন ফোল্ডার: “You Escaped, But You’re Marked.”
তারপরই, স্ক্রিনে একটাই লাইন টাইপ হয়: “Level 1: Completed.”
তানিম ফিসফিস করে, “তাহলে এটাই শেষ নয়… এটা তো শুরু।”
হুট করে তানিম অনুভব করে, কে যেন তার গায়ে হাল্কা হাল্কা থাপ্পড় দিচ্ছে, আর অস্পষ্ট শুনতে পাচ্ছে, “ওই বেটা, ওঠ, অফিসে যাবি না?”
আচমকা চোখ মেলে দেখে তার রুমমেট সোয়েব ডাকছে ঘুম থেকে ওঠার জন্য।
কিছুক্ষণ চুপচাপ সব বোঝার চেষ্টা করে টের পায়, ও ঘুমাচ্ছিল এতক্ষণ।
লেখক পরিচিতি : শান্ত
আমি কোন লেখক নই, এমনি শুধু লেখার চেষ্টা করলাম