লেখক: সৌরভ চক্রবর্তী
কুরুক্ষত্রের এক পাশে পিতামহ ভীষ্ম শরসজ্জায় সজ্জিত হয়ে আছেন, কর্ণ মারা গেছে, সূর্য অস্ত গেছে, এই ক্ষনে দুর্যোধন কর্ণের মৃত্যুসংবাদ দিতে গেছে পিতামহকে। দুর্যোধন আজ সম্পূর্নভাবে ভেঙে পড়েছে, তাঁর প্রিয় মিত্র আজ আর তার পাশে নেই, সে কথা রাখেনি। কিন্তু একি! পিতামহ ভীষ্মও কর্ণ রহস্য জানেন, পান্ডব মাতা কুন্তী ও শ্ৰীকৃষ্ণের মতই।
কিছুক্ষন আগেই যুধিষ্ঠির মাতা কুন্তীকে শাপ দিয়েছে। ভীম, অর্জুন ভেঙে পড়েছে, এক চরম সত্য জানার পর। নিজের মায়ের গর্ভজাত ভাইকে আজ আরেক ভাই হত্যা করেছে। দুর্যোধন আর থাকতে না পেরে ছুটে এসেছে পিতামহ ভীষ্মের কাছে। বলছে, ‘হে পিতামহ, আজ কুরুক্ষেত্রে আপনার বংশের সর্বজ্যেষ্ঠ নামক প্রদীপ নিভে গেছে।’ আর ভীষ্ম একুটুকুও সন্দিহান না হয়ে সরাসরি কর্ণের নাম বলে উঠলেন সাথে চোখ দিয়ে অশ্রুধারা বেয়ে আসলো।
দুর্যোধন অবাক বিস্ময়ে পিতামহের দিকে তাকিয়ে আছে – “আপনিও জানতেন পিতামহ, কর্ণ আমাদের সবার জ্যেষ্ঠ। তবুও আপনি মৌন ছিলেন! কেন? কেন পিতামহ? না আপনি, না মাতা কুন্তী, না বাসুদেব কৃষ্ণ, আপনারা কেউ বুঝলেন না; যদি আপনারা আগে বলে দিতেন যে আমাদের সবার জ্যেষ্ঠ কর্ণ, তাহলে হয়তো এই যুদ্ধই না হতো, আমি সারা রাজ্য দিয়ে দিতাম, যুধিষ্ঠিরও কোনো বাধা দিত না। কেন আপনি বলেননি পিতামহ ?”
পুনশ্চ: এবার আপনারা ভাবুন, যদি আগেই, কৌরব-পান্ডবরা জানতে পারত তাহলে কি কর্ণ সর্বগ্রহণযোগ্য হয়ে উঠত ??
লেখকের কথা: সৌরভ চক্রবর্তী
পেশা: ম্যানেজিং ডিরেক্টর, প্রিজমহাব অনলাইন সলুশন্স (Prismhub Online Solutions Pvt Ltd) – একটি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা। তথ্যপ্রযুক্তির সাথে সাথে আগ্রহ সাহিত্য, লেখালিখি ও ভিন্ন স্বাদের সৃজনশীল কাজে। এছাড়া সময় কাটে মহাভারতের উপর বিশ্লেষণমুখী বই ও বিভিন্ন ধরনের বই, বিশেষ করে গান্ধী থেকে মার্ক্স এর দর্শনের বই ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর থেকে গোর্কি, মার্ক টোয়েন, তলস্তয় পড়ে। সমরেশ মজুমদার এর উপন্যাস ‘কালবেলা’ প্রিয় উপন্যাস।
এক কথায় দুঃসাহসিক সাহসী লেখা।