লেখক : অভীক সিংহ
প্রগতির কথা বলতে গেলে প্রথমেই যে প্রশ্নটির কথা মাথায় আসে, সেটি হ’ল, “প্রগতি কথাটির অর্থ কি ?” সহজভাবে অর্থনীতির ভাষায় বলতে গেলে প্রগতি কথাটির অর্থ হ’ল আর্থিক অথবা অর্থনৈতিক প্রগতি । প্রগতি কে না চায় । কিন্তু সেই প্রগতি আসবে কি ভাবে ? কিইবা সেই প্রগতির মূল্য ? অর্থনৈতিক প্রগতি হলেই কি উন্নয়ন সম্ভব ? এই প্রশ্নগুলির উত্তরের মধ্যেই লুকিয়ে আছে প্রগতি-প্রযুক্তি-পরিবেশ – এই ত্রয়ীর ভিতর জটিল সমীকরণটি । তাই আর দেরি না করে চেষ্টা করে দেখে নেওয়া যাক, এই সম্পর্কের জটিলতা কিছুটা হলেও উদ্ধার করা যায়, কি না ।
কোন দেশের অর্থনৈতিক প্রগতির জন্য প্রথমেই যে জিনিসটার সবচেয়ে বেশি দরকার পড়ে, তা হ’ল শিল্পের বৃদ্ধি, উৎপাদনের বৃদ্ধি । আবার এই উৎপাদনের বৃদ্ধির পিছনে অন্যতম বড় কারণ হ’ল বৈদ্যুতিক শক্তির ব্যবহার । এবারে যদি ভারতবর্ষের মত উন্নয়নশীল দেশগুলির দিকে তাকিয়ে দেখা হয়, তাহলে দেখা যাবে যে এই বৈদ্যুতিক শক্তির উৎস হ’ল জীবাশ্ম জ্বালানি । কয়লা, পেট্রল, ডিজেল, গ্যাস – এই ধরণের জ্বালানিগুলিকে জীবাশ্ম জ্বালানির উদাহরণ হিসেবে নেওয়া যেতে পারে । এই ধরণের জ্বালানিগুলি অত্যন্ত সহজলভ্য, এবং ব্যবহারও সুবিধাজনক । কিন্তু সহজলভ্য হলেও এরা কিন্তু মোটেও সহজপাচ্য নয় । এই জ্বালানিগুলির প্রধান উপাদানই হ’ল কার্বন, যেটা উচ্চতাপমাত্রায় জারিত হয়ে জন্ম দেয় বিভিন্ন প্রাণঘাতী গ্যাসের । এদের মধ্যে অন্যতম হ’ল কার্বন ডাইঅক্সাইড । শুধুমাত্র শ্বাসপ্রশ্বাস সংক্রান্ত সমস্যা তো নয়, এই গ্যাস একদিকে যেমন ফাটল ধরিয়ে চলেছে ওজোনস্তরে, অন্যদিকে এই গ্যাসের কারণে বেড়ে চলেছে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতাও ।
এবারে আসি একটু অন্যদিকে । অর্থনৈতিক প্রগতির সাথে শ্রমজীবী মানুষের হাতে আয়ের পরিমাণটাও আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে, এবং একই সাথে বাড়তে থাকে তাদের আর্থিক স্বচ্ছলতা । এই উঠন্ত আর্থিক স্বচ্ছলতা প্রতিফলিত হতে থাকে মানুষের জীবনশৈলীতে । নিজের একটা বাড়ি, একটা গাড়ি, বাড়িতে বৈদ্যুতিন যন্ত্রের সমাহার – এই সব মিলিয়ে মানুষের জীবনে আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে বৈদ্যুতিক শক্তির চাহিদা । এই চাহিদা মেটানোর জন্য আরও বেশি করে ব্যবহার হতে থাকে তথাকথিত জীবাশ্ম জ্বালানির । ফলতঃ বাড়তে থাকে পরিবেশ দূষণের মাত্রা ।
ধাবমানকাল যাবৎ প্রগতির পিছনে দেশ এবং দেশবাসীর এই অন্ধ অনুধাবনের ফলস্বরূপ সাময়িক অর্থনৈতিক উন্নতি হ’লেও সার্বিক উন্নয়নের পথটা কিন্তু ক্রমশঃ সংকীর্ণতর হতে থাকল । আর এই স্বার্থচরিতার্থতার মূল্যের সিংহভাগটাই বহন করতে হ’ল প্রকৃতি এবং পরিবেশকে । উন্নয়নের অর্থই হ’ল সার্বিকভাবে অর্থনৈতিক, পরিবেশগত, এবং সামাজিক উন্নতি । কিন্তু দূরদৃষ্টিহীন, ক্ষণজন্মা, এবং সাময়িক প্রগতির পথে এই উন্নয়নকে খুঁজে পাওয়াটা প্রায় অসম্ভব বললেই চলে । অর্থনৈতিক প্রগতির পথে দৌড়তে থাকলে একদিকে যেমন পরিবেশের গুণগত মান হ্রাস পেতে থাকে, ঠিক একই সঙ্গে পুঁজিবৃদ্ধি হতে থাকে দেশের মুষ্টিমেয় কিছু মানুষের, যাদের হাতে থাকে শিল্পের চাবিকাঠি । এই আর্থিক বৈষম্যের গল্পটায় আসছি একটু পরে । তার আগে পরিবেশের গল্পটা একটু সেরে নিই ।
এই পরিবেশ দূষণ তো আর একটা নির্দিষ্ট স্থানে অথবা দেশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে না, তা আস্তে আস্তে ছড়িয়ে পড়ে ভৌগোলিক সীমানার বাইরে । তার মধ্যে আবার পৃথিবীর উন্নত দেশগুলি নিজেদের পরিবেশের গুণগত মান বজায় রাখার উদ্দেশ্যে নিজেদের পুরনো এবং অচল প্রযুক্তিগুলিকে সস্তায় বেচে দেয় আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া দেশগুলিকে । এবার এই পিছিয়ে পড়া দেশগুলি অর্থনৈতিক প্রগতির আশায় কিনে নিতে বাধ্য হয় সেই প্রযুক্তিগুলিকে । এইসকল অচল প্রযুক্তিগুলির নিরন্তর ব্যবহার সেই দেশগুলিতে সৃষ্টি করতে থাকে আরও পরিবেশ দূষণের । ফলে সাময়িক অর্থনৈতিক প্রগতি পাওয়ার সাথে সাথে এই দেশগুলির শ্রমজীবী মানুষের স্বাস্থ্যের ঘটতে থাকে অবনতি । তাহলে উন্নয়নটা হ’ল কোথায় ?
বিশ্বজুড়ে এই সমস্যা যখন সার্বিক উন্নয়নকে ঠেলতে ঠেলতে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে একেবারে খাদের ধারে, তখনই মানুষ অনুভব করল “আর কতদিন ?” এই জ্বলন্ত প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে আজ পৃথিবীর ১৯৩টি দেশ সমস্ত ভেদাভেদ ভুলে একত্রিত হয়েছে এই ক্রমবর্ধমান সমস্যার মোকাবিলা করতে । ২০৩০ সালের মধ্যেই স্থিতিশীল উন্নয়নের লক্ষ্যে পৃথিবীজুড়ে রাজনীতিবিদ এবং অর্থনীতিবিদরা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন এমন কিছু উপায়ের, যেটার উপরে ভিত্তি করে বিশ্বব্যাপী এই সমস্যার একটা সমাধান হ’তে পারে । এইরকম ১৭টি লক্ষ্যকে সামনে রেখে যে সমস্ত উপায়ের কথা বিবেচিত হয়েছে, তাদের মধ্যে নিঃসন্দেহে একটি হ’ল নবীকরণযোগ্য বৈদ্যুতিক শক্তি । এই শক্তির উৎস হ’ল মূলতঃ সূর্য্যের আলো, বাতাস, সমুদ্রের ঢেউ, জলের ধারা । কিন্তু এর মধ্যেও সমস্যা অনেক । এই শক্তি উৎপাদনের বিপুল খরচ বহন করবার মত ক্ষমতা অনেক দেশেরই নেই । তাছাড়া উচ্চমূল্যে সাধারণ মানুষের কাছে এই বৈদ্যুতিক শক্তিকে পৌঁছে দেওয়াটা অর্থহীন, কারণ এই বৈদ্যুতিক শক্তির মূল্য সাধারণ খেটে-খাওয়া মানুষের ক্রয়ক্ষমতার অনেকটাই ঊর্ধ্বে । আবার অন্যদিকে কলকারখানায় এই শক্তিকে রাতারাতি ব্যবহার করতে বলাটাও গুরুতর বিপদের, কারণ উপস্থিত প্রযুক্তিগুলোকে রাতারাতি পরিবর্তন করে নতুন প্রযুক্তি এনে ব্যবহার করতে শুরু করলে তার বিপুল খরচের ভার যেমন প্রতিষ্ঠানগুলি বহন করতে পারবে না, ঠিক তেমনই শ্রমিকদেরও এই নতুন প্রযুক্তির সাথে মানিয়ে-গুছিয়ে নিতে সময় লাগবে যথেষ্ট । ফলস্বরূপ, প্রতিষ্ঠানগুলি এক এক করে বন্ধ হয়ে যাবে, এবং ভয়ানকভাবে সংকীর্ণ হয়ে যাবে কর্মসংস্থানের জায়গাটা । তাহলে উপায় ?
ঠিক এইখানেই আসে স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তির গল্প । এই উদ্ভাবনটি বৈদ্যুতিক শক্তির ব্যবহারকে আস্তে আস্তে নিয়ে চলেছে এক অন্য উচ্চতায়, যেখানে অপেক্ষাকৃত কম শক্তির ব্যবহারেই বাড়বে উৎপাদন ক্ষমতা, এবং ক্রমাগত বিনিয়োগের দরুণ এর মূল্য হবে ক্রমহ্রাসমান । এখন এই উদ্ভাবনটির উপর ভিত্তি করেই নবীকরণযোগ্য বৈদ্যুতিক শক্তি আসতে চলেছে মানুষের ক্রয়ক্ষমতার ভিতরেই । একদিকে যেমন পরিবেশের গুণগত মানকে উন্নত করার জন্য এই উদ্ভাবনের অবদান অনস্বীকার্য, অন্যদিকে ক্রমবর্ধমান বিনিয়োগের ফলে বাড়ছে কর্মসংস্থান । এইদু’টি কারণের জন্যই হয়ত ভবিষ্যতের উন্নয়নের পথটিকে মসৃণ বলে ধরে নেওয়া যেতে পারত ।
কিন্তু আবার বিপদ বাধল অন্য জায়গায় গিয়ে । স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তির বিকাশের অর্থই তো হ’ল শ্রমজীবী মানুষকে প্রতিস্থাপন করা । ভেবে দেখুন একবার, যদি ওলা-উবেরের মত সংস্থাগুলি কাল থেকে স্বয়ংক্রিয় গাড়ির প্রচলন করে, তাহলে কি হতে পারে । অবশ্যই তেলের ব্যবহার কমবে, বৈদ্যুতিক শক্তির ব্যবহারে পরিবেশ দূষণ কমবে, রাস্তায় যানজট এবং দুর্ঘটনার সংখ্যা কমবে । কিন্তু সমস্ত গাড়িচালকদের কর্মসংস্থানের জায়গাটা কিন্তু অনেকাংশেই বন্ধ হয়ে যাবে । অন্যদিকে জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বৈদ্যুতিক শক্তি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলি চাহিদার অভাবে আস্তে আস্তে বহিষ্কার করতে থাকবে তাদের শ্রমিকদের । ওলা-উবেরের সাথে সাথে স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তির সূত্রধরদের আয় বাড়বে, কিন্তু কর্মসংস্থানের অভাবে নিঃশেষিত হয়ে যাবে আরও অনেক বেশি মানুষ । এবারে এই ব্যাপারটা অর্থনীতির দিক থেকে বিচার করে দেখা যাক । কোন সংস্থা যখনই কোন পণ্যসামগ্রী উৎপাদন করে, তার পিছনে থাকে ক্রেতাদের চাহিদা । সেই চাহিদাটা আসে সেই ক্রেতাদের ক্রয়ক্ষমতা থেকে, আর ক্রয়ক্ষমতা আসে তাদের বেতন অথবা মজুরি থেকে । এবারে যদি কর্মসংস্থানটিই না থাকে, তাহলে তাদের কাছে আর বেতন অথবা মজুরি আসার সম্ভাবনাটাই বাতুলতামাত্র । তাই দিনগত পাপক্ষয় করার উদ্দেশ্যে সেই বেকারদের কাছে রাস্তা থাকবে একটাই – অবৈধ পথে আয়ের চেষ্টা । এর ফলটা হতে পারে মারাত্মক । সমাজের একটা বিশাল সংখ্যার মানুষ যখন এই অবৈধ পথে আয়ের চেষ্টা করবে, তখন সবার আগে ক্ষতিগ্রস্ত হবে সামাজিক ভারসাম্য । আরও একটু এগিয়ে যদি ইউরোপিয়ান দেশগুলির দিকে তাকানো যায়, তাহলে দেখা যাবে এই প্রযুক্তির বিকাশের সাথে মেয়েদের কর্মসংস্থানের জায়গাটা হয়ে যাচ্ছে আরও অনেক বেশি সংকীর্ণ । ছেলেদের সাথে মেয়েদের বেতনের ফারাকটা ক্রমশঃই বেড়ে চলেছে, এবং যার ফলে বৈজ্ঞানিক গবেষণার পথ থেকে মেয়েরা ক্রমাগত পিছিয়ে আসছে । ফলে বৈজ্ঞানিক চিন্তাধারার মধ্যে থেকে বৈচিত্র এবং মূল্যবোধ ক্রমশঃ হারিয়ে যাচ্ছে । অর্থনৈতিক স্বাধীনতার পথটা বন্ধ হয়ে যাওয়ার সাথে সাথেই এই দেশগুলিতে মেয়েদের উপরে অত্যাচারের পরিমাণ বেড়ে চলেছে, যেটা নিঃসন্দেহে আরেকটি ভয়ের কারণ । তাহলে কি পরিবেশকে বাঁচাতে গিয়ে সামাজিক ভারসাম্যটাই নষ্ট হয়ে যাবে ? তাহলে কি যে প্রযুক্তি আমাদের উন্নয়নের স্বর্ণযুগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, সেই প্রযুক্তিই কি আবার আমাদের টেনে নিয়ে চলেছে মধ্যযুগের দিকে ?
প্রশ্নগুলি কঠিন, কিন্তু এর উত্তর খুঁজে পাওয়া হয়ত আরও কঠিন । এর উত্তর খুঁজতে গেলে দেশগুলিকে প্রথমেই এটা ঠিক করে নিতে হবে তারা কোনটা চায় – প্রগতি নাকি উন্নয়ন ? কারণ এই দু’টি জিনিস একসাথে অর্জন করা সম্ভবপর নয় । যদি প্রগতিলাভ করতে হয়, তাহলে আপাতত কিছুটা সময়ের জন্য উন্নয়নের কথা ভাবলে চলবে না । আর যদি সার্বিক উন্নয়নটাই লক্ষ্য হয়, তাহলে প্রগতির গতিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে । এক্ষেত্রে “মনের সাধ” সাধিতে গিয়ে “পরমাদ” ঘটালে চলবে না । স্থিতিশীল উন্নয়নের লক্ষ্যের কক্ষপথে সঠিকভাবে স্থাপন করতে হবে নিজেদের স্বপ্নের উপগ্রহটিকে । দেশের বর্তমান আর্থসামাজিক এবং রাজনৈতিক প্রেক্ষি থেকে দেখা এই স্বপ্ন কিন্তু সামাজিক ভারসাম্য বজায় রেখে প্রগতি-প্রযুক্তি-পরিবেশ সংক্রান্ত সমীকরণের জটিলতাকে অনেকাংশেই সমাধানের পথ দেখতে পারে । স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশগুলিকে কিন্তু এই বিষয়ে পথপ্রদর্শক বলা যেতে পারে । এদের অর্থনৈতিক প্রগতির হার খুব বেশি না হলেও উন্নয়নের দিক থেকে এরা কিন্তু অনেকের থেকেই বেশ কিছুটা এগিয়ে । যদিও সাংগঠনিক পার্থক্যের কারণে আমরা তাদের সমাধানগুলিকে সরাসরি গ্রহণ করতে পারব না, কিন্তু এদের কর্মধারার কয়েকটা বিষয়ের দিকে একটু দৃষ্টিপাত করাই যায় । যেমন, জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বৈদ্যুতিক শক্তি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলিতে কর্মরত শ্রমিকদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা সরকারকে করতে হবে, যাতে তারা নবীকরণযোগ্য বৈদ্যুতিক শক্তি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলিতে অনায়াসে নিয়োজিত হতে পারে । অন্যদিকে সরকারের তরফ থেকে স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তিনির্ভর সংস্থাগুলিকে নির্দেশ দেওয়া যেতে পারে, যাতে তারা কোন সময়েই একটা নির্দিষ্ট অনুপাতের উপর কর্মীদের ছাঁটাই না করতে পারে । এর সাথে প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে সহজলভ্য ঋণের ব্যবস্থা করতে হবে । সর্বোপরি, স্কুল এবং কলেজগুলিতে শিক্ষাব্যবস্থার মধ্যে একটা পরিবর্তন আনতে হবে, যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম শুধু চাকুরিনির্ভর না হয়ে স্বাবলম্বী হতে শেখে, এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে সক্ষম হয় ।
এই সমাধানের পথ কিন্তু ইউরোপের অথবা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দেশগুলির জন্য নয়, এই পথ সর্বৈবভাবে ভারতবর্ষের, তথা দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলির । প্রতীচ্যের অন্ধ অনুকরণ না করে নতুন করে লেখা এই গল্প হয়ে উঠুক প্রাচ্যের । তাহলেই হয়ত এই একদিন না-বলা গল্পটার হাত ধরে পৃথিবীকে “শিশুর বাসযোগ্য” করে তোলার প্রতিশ্রুতিটা দৃঢ় অঙ্গীকারে পরিণত হতে পারে ।
লেখক পরিচিতি : অভীক সিংহ
প্রবন্ধটির লেখক ড: অভীক সিংহের জন্ম পশ্চিমবঙ্গে। পেশায় অর্থনীতির অধ্যাপক এবং গবেষক, যুক্ত আছেন লিভারপুল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে, বর্তমান বাসস্থান চীন। তবে ভালবাসাটা আজও লেখালিখি, পেন্সিল স্কেচ, যন্ত্রসংগীত, এবং নিত্যনতুন রান্নাবান্নার সাথেই রয়ে গিয়েছে। প্রথম বই "R.E.CALL: এক Recollian-এর গল্প" প্রকাশিত হয় ২০১৪ সালে। দাদুর হাত ধরে কবিতা দিয়ে লেখালিখির সূত্রপাত হলেও এখন প্রবন্ধ এবং গল্পতেই মনোনিবেশ করেছেন।