লেখক : শংকর বিশ্বাস
ভগবান নয়, ধর্ম সৃষ্টি করেছে মানুষ। এক এক জায়গায় এক এক রকম। বিজয়ী দল তাদের সুবিধা মত ধর্মকে পাল্টিয়েছে। একথা আপনারা সবাই পড়েছেন, বিভিন্ন সময়ে। আমি শুধুমাত্র একবার আপনাদের স্মৃতিকে জাগিয়ে তুললাম। কিন্তু ধর্মের কচকচানিতে আমি পড়ব না এখানে, কোনখানেই। আমার কথা শুধু ভগবানকে নিয়ে।
মাত্র একজন ভগবানই দরকার পৃথিবীতে, তার বেশি নয়। যে ছিল, আছে এবং থাকবে। কিন্তু সে ভাল কাজ করার জন্য কাউকে একঘড়া মোহর দেয় না বা খারাপ কাজ করার জন্য শাস্তি স্বরূপ কাউকে ফাঁসি দেয় না। চতুর্দিকে অসংখ্য উদাহরণ আছে আমার কথাকে সত্য বলে প্রমাণ করতে।
খারাপ–ভালো ঘটনা ঘটে, কারণ– “কাজ -> ফলাফল -> সিদ্ধান্ত -> কাজ -> ফলাফল -> সিদ্ধান্ত” এই সিকোয়েন্সে বারবার আবর্তিত হয়। ভগবান তাতে হাত বাড়ায় না, এটা চলে প্রাকৃতিক নিয়মে। তাহলে ভগবান কি করে?
ভগবানের কাছে বিশাল এক ভান্ডার আছে, আশা/ইচ্ছার। আমার বাচ্চার শরীর খারাপ, আমি তাকে ভাল করার ‘আশা’ চাইতে পারি। আমার প্রমোশান হচ্ছে না অফিসে, আমি ‘আশা’ চাইতে পারি তা হবার জন্য। অবশ্য সবাই যে সবার ভাল হবার জন্য ‘আশা’ চাইবে তা নয়, কেউ কেউ খারাপ উদ্দেশ্যেও ‘আশা’ চায়। ভগবান কাউকে ফেরায় না। যে ভগবানের কাছে তা মন দিয়ে চায়, ভগবান তার ভান্ডার থেকে কিছুটা তুলে দেয় তাকে। যে কোন জায়গায় (অফিসে, বাড়িতে, বাসে চলতে চলতে), যে কোনো অবস্থায় (আনন্দে, দুঃখে বা সাধারণ অবস্থায়), যে কোন সময়ে (সকালে, দুপুরে, বিকালে, রাতে) তার কাছে ‘আশা’ চাওয়া যায়। তবে চাইতে হবে মন দিয়ে, সে নিজে এসে কুরিয়ার বয়–এর মত দরজায় টোকা মেরে আপনাকে ঘুম থেকে জাগিয়ে ‘আশা’ দিয়ে যাবে না।
ব্যাস, এইটুকুই মনে রাখতে হবে। ভগবানকে নিয়ে ঝগড়া–ঝাটি মারামারি না করে, এই এক দাতা–কর্ণ ভগবানের কনসেপ্ট কি আমরা মানতে পারি? এখানে এটাও বলে রাখি, আমার এত মনের জোর নেই যে পরিচিত দেব–দেবীদের দেখলে তাদের প্রণাম করব না বা তাদের দিক থেকে মুখ ঘুরিয়ে নেব।
লেখক পরিচিতি : শংকর বিশ্বাস
পেশায় একসময় লেখক ছিলেন এখন সাহিত্য সৃষ্টি করে সময় অতিবাহিত করছেন।