নৈব নৈব চ
লেখক : এস. আজাদ (সেখ মহঃ সানি আজাদ)
(এক)
বাইরে একটানা হিম ঝরছে। রাস্তা ড্রেন ছাদ গাছ সবাই বরফের শ্বেত শুভ্র সাজে সেজেছে ও মেতে উঠেছে। সেই রাগে সূর্য ও দেখা দেয়নি কয়েক দিন। তার উত্তাপ হীন জীবনের সাথে টেনসির …
(এক)
বাইরে একটানা হিম ঝরছে। রাস্তা ড্রেন ছাদ গাছ সবাই বরফের শ্বেত শুভ্র সাজে সেজেছে ও মেতে উঠেছে। সেই রাগে সূর্য ও দেখা দেয়নি কয়েক দিন। তার উত্তাপ হীন জীবনের সাথে টেনসির …
শহরের বাইরে, পাহাড়ের গা ঘেঁষে একটি ছোট্ট গ্রাম ছিল। গ্রামের নাম ছিল ভাষা — একটি শান্ত, নির্জন গ্রাম, যেখানে আকাশে মেঘেরা মিষ্টি কথা বলত, আর নদী তার সঙ্গীত বাজাতো। কিন্তু এই শান্তির মাঝেও এক …
পথ চলতে চলতে একদিন শেষ হয় সাময়িক পথ চলা, কিন্তু যেখানে শেষ হয় সেখান থেকে শুরু হয় নতুন করে চলা, আবার নুতন রাস্তা,নুতন নুতন মানুষ, এ এক অদ্ভুত চলার নেশা, কত রকম মানুষ, কত রকম অভিজ্ঞতা জমা হয় ঝুলিতে, তাদের মধ্যেই কেউ কেউ মনে দাগ কেটে যায়। আমার মধ্যে নিজস্বতা বলে কিছু নেই, যা আছে তা এই রাস্তায় চলতে চলতে মানুষের কাছে পাওয়া, প্রকৃতির কাছে পাওয়া।গত কালকেই মুরি তে এসেছি, সন্ধার পর পৌছে কিছুই বুঝতে পারিনি। গেস্টহাউস এর চারদিকে সবুজের সমারোহ, সকালে উঠে অফিসে যাওয়ার জন্য তৈরি হয়েছি, নঈম বলল স্যার গাড়ি ডেকে দিচ্ছি, আমিই বললাম না থাক হেঁটেই যাব।সূবর্ণরেখা নদীর ধার দিয়ে পাকা রাস্তা, এপাশে মুরি ওপাশে তুলিন, পশ্চিমবাংলা আর ঝাড়খণ্ডের সীমানা।
এখন আগস্ট মাস, মাঝে মাঝেই বৃষ্টি হচ্ছে, সুবর্ণরেখা কানায় কানায় পূর্ণ। হিন্ডালকো কারখানা এবং কলোনি কে ইউ আকৃতিতে বেষ্টন করে বয়ে গেছে সুবর্ণরেখা। শুনেছি একসময় সুবর্ণরেখার বালি থেকে সোনা পাওয়া যেত। রাস্তা থেকে একটু নামলেই নদীর ঘাট, ওপাশে একটা মন্দির আর নদীর তীরে শ্মশান। বড় বড় পাথর জলের উপর পর্যন্ত মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। এ নদী যে আমার অনেক দিনের চেনা, জামশেদপুরএ দোমোহানিতে সুবর্ণরেখা আর করকাই একসাথে মিলে সুবর্ণরেখা এগিয়ে গেছে, আবার ঘাটশিলার কাছে ঘালুডি তে অতি মনোরম সুবর্ণরেখা।নদীর ধার পর্যন্ত নেমে যাই, জলে হাত দিয়ে ফিরে আসি।ছটায় অফিস থেকে ফেরার সময় অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে দেখি বয়ে যাওয়া জলের দিকে, পাখিরা ফিরে যাচ্ছে যে যার আপন ঘরে। ওরা জানে না মাটির বিভাজন। ওই দূরে বানসা পাহাড়ের ওপাশে সূর্য অস্ত যাওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছে। ধীরে ধীরে জলের উপর হামাগুড়ি দিয়ে সন্ধ্যা নামছে। এ ভাবেই শেষ হয় দিন, মাস ও বছর।
হঠাৎ মহামারী গ্রাস করে পৃথিবীকে, কোভিড এর ভয়ে সারা পৃথিবীর মানুষ বিভ্রান্ত, মানুষ যে কত অসহায় তখন বুজলাম। সারা পৃথিবী যেন হঠাৎ থমকে গেল। প্রকৃতির কাছে বিজ্ঞান কত অসহায়।
বয়ে যায় সুবর্ণরেখার ধারা একই ছন্দে, মানুষ ছাড়া এই গ্রহের সবকিছু স্বাভাবিক। মানুষেরই সবসময় কিছু হারানোর ভয়।আমি মাঝে মাঝেই গিয়ে বসি জলের ধারে, এখন বুজলাম মৌনতার মধ্যেই সবচেয়ে বেশি সরব থাকে আমাদের অন্তরতা। ওপারে আজও শশ্বানে জ্বলছে চিতা, স্বচ্ছ জলের মধ্যে আকাশের জলছবি, পাখিরা ফিরে গেছে যে যার আপন ঘরে।হঠাৎ মোহভঙ্গ হয়, পিছন থেকে কেউ যেন বলে একটা বিড়ি দিবি। আমি পিছন ফিরে দেখি একজন লোক, মুখে খোঁচা দাড়ি, খালি গায়ে কংকালসার শরীর, মাথায় রুখু চুল। আমি প্রথমে হতবম্ব, তারপর ওর দিকে সিগারেট এর প্যাকেট বাড়িয়ে দিলাম, …
প্রথম পিরিয়ডের বেল পড়তেই ক্লাসে রেজিস্ট্রার খাতা হাতে প্রবেশ করলেন সৌম্যদীপ্তা ম্যাম। সবাই যখন দাঁড়িয়ে তাকে গুড মর্নিং বলতে যাচ্ছে তখনই ম্যামের ছায়া অনুসরণ করে অন্য একজন ক্লাসে প্রবেশ করলো। টিচার্স টেবিলে রেজিস্টার খাতা রেখে ম্যাম …
-“ঘটি বাড়ির মাইয়া, ওই কতগুলো চিনির সিরা বানানো ছাড়া কি শিখছস রে? থু থু, তুই খা এই খাবার।”
-“জন্ম সময় তো মা তোমার মুখে মধু দেয় নি। তাই কাঁটা তার পার করে যখন এখানে এসেই …
“পঞ্চাশ কেজি দই নিয়ে সামনের রবিবার তোদের বাড়ি যাচ্ছি। তোরা সকলে বাড়ি থাকিস।”
বন্ধু অনিকেতের হোয়াটস-অ্যাপ মেসেজটা পড়ে বেশ অবাক হল কাঁঠাল খান। নর্থ বেঙ্গল থেকে হঠাৎ পঞ্চাশ কেজি দই নিয়ে আসার কারণটা বোধগম্য হল না …
আর্ট কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র চন্দ্রচূড়। খুবই সাদামাটা স্কুল থেকে পাশ করে মামার কাছ থেকে পাওয়া একটা নীল রঙের শার্ট পরে কলেজে আসে। দ্বিতীয় বর্ষের দাদা-দিদিদের হম্বিতম্বি একেবারেই সহ্য করতে পারে না সে। মফঃস্বল বলে
হু হু করে গাড়ি ছুটছে, মাথার মধ্যে শূন্যতা। এক জলোচ্ছ্বাসের আবেগ নিয়ে কাল থেকেই বড় মন কেমন করছে ঝোরার জন্য। এতদিন পর গিয়ে কী বলবে মেয়েটাকে? কেন সেদিন সকালের আলো ফুটতে পালিয়ে এসেছিল তাকে কিছু না …
জুন মাসের এক বিকেলবেলায় পাহাড়ের ঢাল বেয়ে নামতে গিয়ে আচমকা বাঁ পা-টা পিছলে গেল অনীকের। এক্ষেত্রে বেশ বড়সড় একটা ক্ষতি হতে পারত। ঢালের একপাশে খাদও ছিল বেশ গভীর মতন, তবু শেষ মুহূর্তে হাত দিয়ে কোনরকমে একটা …
“দাদা চেঞ্জটা দিন। আমার স্টপ এসে গেছে।” বাসের গেটের কাছে উঠে এসে কন্ডাক্টারকে বললেন অবনীশ হালদার। কন্ডাক্টার তার হাতের আঙুলটা থেকে পাঁচটা মোড়া নোট বার করে অবনীশ হালদারের হাতে দিলেন। অবনীশের স্টপ এসেই গেছিল, নোট …
তুহিন বাবু মেদিনীপুরের একটি কলেজে পার্ট টাইম পড়াতেন। বেশ কয়েকদিন হলো তিনি বীরভূমের লাভপুরের কোনও একটি নতুন কলেজে পার্মানেন্ট অধ্যাপক হিসাবে যোগ দিয়েছেন। কিন্তু বিধাতার একি পরিহাস! তাঁর স্ত্রীর ক্যান্সার ধরা পড়ায় তিনি কিছুটা বিমূঢ়, চিন্তিত। …
একে গল্পের মতো মনে নাও হতে পারে কারণ এটি একটি জীবন যুদ্ধের আখ্যান। যুদ্ধের পরিস্থিতির মধ্যে একজন কর্মরত সৈনিক ও বাপ মা মরা মেয়ের কাহিনী।
আফগানিস্তানের একটি অজানা গ্রামের অজানা একটি ছোট মেয়ে আলিয়া বাবা মাকে …