লেখক : মিজানুর রহমান সেখ
“Yes, what we are witnessing now is probably the emergence of a second-wave,” cautions Anurag Agrawal, director of CSIR Institute of Genomics and Integrative Biology (IGIB).
গত বছরে সমগ্র বিশ্বব্যাপী ১২৭ মিলিয়ন মানুষ আক্রান্ত হন নোভেল করোনা ভাইরাসে। এই অতিমারি কেড়ে নিয়েছে ২.৭৮ মিলিয়ন মানুষের প্রাণ। ২০২১ সালের শুরুতে করোনা ভাইরাসের প্রকোপ কম থাকলেও আমাদের দেশে মার্চ থেকেই শুরু হয়ে যায় করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। এবার পরিস্থিতি আরও জটিল ও ভয়াবহ। তার কারণ নতুন স্ট্রেনের এই ভাইরাস কে আবার নতুন করে চিনতে ও বুঝতে অনেকটা সময় লাগবে। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন L452R এবং E484Q এই দুই ‘immune-escape mutation’ করোনাকে আরও সংক্রামক করে তুলেছে এবং এর সাথেই অ্যান্টিবডিও এদের উপর কার্যকরী হচ্ছে না। Mutation কথার অর্থ ডটার ভাইরাসের জিনোমিক গঠনে পূর্ববর্তীর গঠন থেকে প্রকৃত অর্থে কোন না কোন পরিবর্তন ঘটেছে। variant বলতে বোঝায় আলাদা জিনোমিক গঠন যুক্ত ভাইরাস। SARS-CoV-2 RNA জিনোম মানুষের কোষে প্রতিরূপ বা কপি করতে গিয়ে এই মিউটেশন প্রতিনিয়ত ঘটাচ্ছে ।
“Take N440K mutation. This helps the virus evade the human immune system much better. We have identified 19 such genetic variants in India that exhibit immune evasion. We must watch out for such variants,” says Vinod Scaria, senior scientist, CSIR- Institute of Genomics and Integrative Biology (IGIB). জিনোমিক মনিটোরিং এর মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা শুধু ভারতেই ২২ রকমের variant পেয়েছেন। ভ্যাকসিন সমস্ত ধরনের variant এর উপর সমান কার্যকরী নয়। যেমন Oxford-AstraZeneca’s Covisheild এবং Bharat Biotech’s Covaxin পরীক্ষাগারে প্রমানিত যে UK variant এর উপর ভীষণ কার্যকরী। কিন্তু বাকী variant এর উপর কাজ করবে কিনা সে বিষয়ে বিজ্ঞানীদের মধ্যেই যথেষ্ট মতপার্থক্য আছে। তবে ভ্যাকসিন immune response বাড়িয়ে দেয় ও নানান অ্যান্টিবডি তৈরিতে সাহায্য করে।
প্রকৃতিগত ভাবেই এবং ভ্যাকসিন নেওয়ার কারণে শরীরে ভাইরাস এলে টি-সেল কার্যকরী হয় এবং তা পরবর্তী পর্যায়ে আক্রান্ত কোষকে চিহ্নিত করে ও ধ্বংস করে। টিকা কীভাবে কাজ করে জানার জন্য এখানে দেখুন।
“The proportion of B.1.618 has been growing significantly in recent months in Bengal,” said Vinod Scaria, who researches genome mutations at the CSIR-Institute of Genomics and Integrative Biology (IGIB) on Twitter adding, “along with B.1.617 it forms a major lineage in West Bengal”.
করোনা ভাইরাসের নতুন স্ট্রেন নিয়ে বিজ্ঞানী মহলে যথেষ্ট বিতর্ক থাকলেও ভারত GISAID নামক আন্তর্জাতিক সংস্থাকে যে তথ্য দিয়েছে তার থেকে স্পষ্ট দেশের বিগত দুমাসে ১২% করোনার জন্য দায়ী ট্রিপল মিউটেটেড B.1.618। অনেক বিজ্ঞানী এটিকে “বেঙ্গল স্ট্রেন” নামে অভিহিত করছেন। বিশেষজ্ঞরা এই নতুন স্ট্রেনে ভয় পাচ্ছেন কারণ ব্রাজিল ও দক্ষিণ আফ্রিকার “E484K” নামক “immune escape variant” এর অনেক বৈশিষ্ট এই স্ট্রেনে পাওয়া যাচ্ছে। এর অর্থ শরীরে থাকা আগের স্ট্রেনের উপর কার্যকরী অ্যান্টিবডি বা ভ্যাক্সিন থেকে প্রাপ্ত অ্যান্টিবডির এই স্ট্রেনের ভাইরাসের আক্রমন প্রতিহত করার ক্ষমতা কম বা নেই। অর্থাৎ আপনি আগে করোনা ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হলেও কিংবা ভ্যাক্সিন পেলেও পুনরায় নতুনভাবে আবার আক্রান্ত হতে পারেন। যদিও এক সাথেই B.1.617 ডবল মিউটেটেড স্ট্রেনের প্রকোপ খুব বেশি বিশেষ করে দিল্লি, গুজরাট, পাঞ্জাব, উত্তরপ্রদেশে ।
করোনা আক্রান্ত সব রুগীর মেডিকেল অক্সিজেন দিতে হয় না। কিন্তু আপদকালীন পরিস্থিতিতে অক্সিজেন আবশ্যক। নোভেল করোনা ভাইরাস শ্বাস প্রশ্বাসের পথ ধরে ফুসফুসে পৌঁছানোর পর ফুসফুসের এপিথেলিয়াল কোষে প্রবেশ করে। আমাদের সেলুলার মেকানিজমকে ব্যবহার করে আরএনএ(RNA)-র বহু সংখ্যক কপি বা প্রতিরূপ তৈরি করে। সাথে এর গঠনগত চার প্রকার প্রোটিনও তৈরি করে। এই ভাবেই আক্রান্ত কোষের মধ্যে আরও ভাইরাস সৃষ্টির কাজ চলতে থাকে। গবেষণা ও প্রতিটি আক্রান্ত কোষ দশ ঘণ্টায় প্রায় একশোটা পর্যন্ত ভাইরাস তৈরি করে ফেলতে পারে। সেই ভাইরাসগুলি বাকি কোষগুলিকে গুণোত্তর হারে আক্রান্ত করে। এই রকম অবস্থায় আমাদের প্রতিরোধী ব্যবস্থা (immune system) ঐ সব আক্রান্ত কোষকে মেরে ফেলে ও ধ্বংসাবশেষ অ্যালভিওলাইতে জমা হতে থাকে। যদি ভাইরাস লোড বেশি হয় অর্থাৎ ফুসফুসে অনেক পরিমাণে ভাইরাস ঢোকে তাহলে দেহের প্রতিরোধী ক্ষমতা লড়াইয়ে হেরে যায়। মাস্ক ব্যবহার করলে ভাইরাস লোড কম হয় ও দেহের প্রতিরোধ ক্ষমতার জয়ী হওয়ার সম্ভবনা বাড়ে। ফুসফুসের ব্রংকিয়ালটিউব এর শেষ প্রান্তে থাকা ৪৮০ মিলিয়ন অ্যালভিওলাই শ্বাস প্রশ্বাসের মাধ্যমে বাতাস থেকে অক্সিজেন টেনে নেয় ও কার্বন-ডাই-অক্সাইড ছেড়ে দেয়। সঙ্কটজনক করোনা আক্রান্ত রোগীর বহু সংখ্যক অ্যালভিওলাই কাজ করা বন্ধ করে দেয়, এর ফলে শুরু হয় শ্বাস কষ্ট। চলে আসে নিউমোনিয়া। তখনই প্রয়োজন হয় মেডিকেল অক্সিজেনের। ফুসফুস কার্যকরী থাকলে ভেন্টিলেটর এর প্রয়োজন নেই। অবস্থা সংকটজনক হলে ভেন্টিলেটর এর সাহায্য নিয়ে অক্সিজেন দিতে হয়। দীর্ঘসময় অক্সিজেনের অভাব হলে হৃৎপিন্ডসহ দেহের অনান্য অঙ্গসমূহ কাজ করা বন্ধ করে দেবে। আক্রান্ত রুগীর মৃত্যুও ঘটতে পারে। তাই শ্বাস কষ্ট দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ অবশ্যই নিতে হবে।
কোভিডের আগে আমাদের দেশে প্রত্যেক দিন ৭০০ MT (মেট্রিক টন) মেডিকেল অক্সিজেন লাগতো।কোভিড এর প্রথম ঢেউয়ে সেই চাহিদা পৌঁছায় ২৮০০ MT প্রতি দিন। কিন্তু দ্বিতীয় ঢেউ আসতেই এই চাহিদা তুঙ্গে ওঠে। বর্তমানে ২০২১ এর এপ্রিলের মাঝামাঝিতে এই চাহিদা পৌঁছায় প্রত্যহ ৬৬০০ MT । অভিজ্ঞ রা বলছেন এই চাহিদা খুব শীঘ্রই প্রত্যহ ৮০০০ MT তে পৌঁছে যাবে।
সারা বিশ্বজুড়ে কোভিড-19 এর অতিমারীর মধ্যেই এই ভাইরাস, তার চিকিৎসা, মাস্ক ব্যবহার, স্যানিট্যাইজার ইত্যাদি নিয়ে নানা রকম ভ্রান্ত ধারণা ও ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়েছে। এই ভাইরাস ও তার চিকিৎসার বিষয় নিয়ে সারা পৃথিবীর বিজ্ঞানীরা নিরন্তর গবেষণা করে চলেছেন । তাই আগামী দিনে আরও নতুন তথ্য আমারা জানবো । এখন অবধি প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশাবলী অনুযায়ী কিছু বিষয় আলোচনা করা হলো।
করোনা ভাইরাসের আকার কেমন?
ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র এই ভাইরাসের জিনোমের আকার প্রায় 26-32 কিলোবেসেস(approximately 26 to 32 kilobases).রাইবোনিউক্লিক অ্যাসিড(RNA) যুক্ত এই ভাইরাসের আকার এতটাই ক্ষুদ্র যে আমাদের দেহকোষকে ফুটবল মাঠের সাথে তুলনা করলে এই ভাইরাস সেই মাঠে পড়ে থাকা একটা ছোট মোবাইল ফোনের মতো।
ভাইরাস প্রথমে শরীরের কোথায় প্রবেশ করে?
University Medical Centre Groningen, Wellcome Sanger Institute (UK) গবেষণা অনুযায়ী দুধরনের কোষে কোভিড-19 ভাইরাস প্রাথমিক পর্যায়ে আস্তানা জমায়। এরা হলো গবলেট কোষ ও সিলিয়েটেড কোষ। গবলেট কোষ (Goblet cells)শ্বাসনালী ও নাকের মধ্যে শ্লেষ্মা সৃষ্টিকারী কোষ। অপরদিকে সিলিয়েটেড কোষ( Ciliated cells) চুলের মতো দেখতে যা আমাদের গলার মধ্যে আসা মিউকাস ও ধুলো ইত্যাদি দূর করতে সাহায্য করে। অর্থাৎ এই অংশে সংক্রমের সম্ভাবনা সর্বাধিক। আরও কয়েকটি গবেষনায় উঠে এসেছে চোখের রেটিনা ও অন্ত্রের আস্তরণ( eye’s cornea and the lining of intestine)দিয়েও করোনা ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করতে পারে।
ভাইরাস রুখতে সাবান জল নাকি স্যানিট্যাইজার ?
যেহেতু আমরা হামেশাই হাত নিয়ে চোখ,মুখ ও নাকে দি,তাই হাত পরিষ্কার রাখা খুব দরকার। সাবান জল ও স্যানিট্যাইজার দুটোই করোনা ভাইরাস কে নষ্ট(denaturation) করতে পারে। বাজারে পাওয়া যাচ্ছে এমন যেকোনো হ্যান্ডওয়াশ বা সাবান ও জল নিয়ে অন্তত 30সেকেন্ড ধরে হাতে ভালো করে ফেনা নিয়ে ঘষলেই করোনা ভাইরাসের বাইরের লিপিড আস্তরণ নষ্ট হয়ে যায়। ঠিক যেভাবে সাবান ময়লার বা তেল পরিষ্কার করে। বাড়ির বাইরে সাবান-জল না পেলে 60-70% আলকোহল যুক্ত স্যানিট্যাইজার নিয়ে ভালো ভাবে ধীরে ধীরে হাতে ঘষে নিতে হবে। মনে রাখা দরকার খুব দ্রুত হাত ঘষলে, হাত গরম হয়ে গিয়ে স্যানিট্যাইজার তাড়াতাড়ি উবে যেতে পারে। সেক্ষত্রে ভাইরাস নষ্ট হওয়ার আগেই স্যানিট্যাইজার বাষ্পীভূত হয়ে যাবে। একই ভাবে আলকোহল বেশি মাত্রায় থাকলে সেই স্যানিট্যাইজারও তাড়াতাড়ি বাষ্পীভূত হয়ে যাবে। সাবান-জল কিংবা আলকোহল ও জল যুক্ত স্যানিট্যাইজার দুই ক্ষেত্রেই জলাকর্ষী ও লিপিড-আকর্ষি অংশ থাকে এরা টানাটানি করে করোনা ভাইরাসের বাইরের আস্তরণ নষ্ট করে দেয় ফলে ভাইরাস আর জৈব কার্যাবলী করতে পারে না। সাবান দিয়ে হাত ধুলে
সাবান গোলা জল নিয়ে হাত ধুলে হবে?
সাবান গোলা জলে ভাইরাস বাঁচতে পারে না।তাই সাবান গোলা জলে ভালো করে হাত ধুয়ে নিলেও হবে।
স্যানিট্যাইজার, ত্বক ও শিশু:
স্যানিট্যাইজার কেবল মাত্র বাড়ির বাইরে ব্যবহার করাই ভালো। বাড়িতে সকলে সুস্থ ও বাইরে থেকে কোনো জিনিস না আসলে, বিনা কারণে বার বার হাত ধোয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। যেকোনো রাসায়নিক ত্বকে কম বা বেশি নেতিবাচক প্রভাব ফেলতেই পারে। তবে সাবান বা স্যানিট্যাইজার খুব ঘন ঘন ব্যবহার না করলে ত্বকের কোনো ক্ষতি হয় না। শিশুরা যেহেতু বাইরে খুব বেশি যায় না,তাই সব সময় হাত ধোয়ার দরকার নেই। প্রয়োজন হলে দিনে দু চারবার হাত ধুয়ে দিলে কোনো ক্ষতি হবে না। হাত খসখসে হতে থাকলে রাতে ক্রিম মাখা যেতে পারে।
খবরের কাগজ,পার্সেলের মাধ্যমে কি ভাইরাস আসতে পারে?
সাধারণ ভাবে কাগজের তেল শোষক ধর্ম আছে। তাই খবরের কাগজ, ঠোঙা কিংবা কাগজের পার্সেলের আস্তরণ দিয়ে করোনা ভাইরাস ছড়ানোর সম্ভবনা প্রায় নেই। আবার অন্যদিকে প্লাস্টিকের প্যাকেট, কাঁচ বা ধাতব জায়গায় দীর্ঘ সময় এই ভাইরাস বেঁচে থাকতে পারে।
খাদ্য সামগ্রী থেকে ভাইরাস কি ছড়ায়?
বাইরে থেকে আনা শাক সব্জি ভালো করে ধুয়ে রান্না করলে ভাইরাস দূর হয়। উষ্ণতা ৭০ ডিগ্রীর উপরের উঠলে করোনা ভাইরাস নষ্ট হয়ে যায়। তাই রান্না করা বা গরম খাবারের মাধ্যমে ভাইরাস সংক্রমণের সম্ভবনা নেই । কিন্তু ঠান্ডা ও ফ্রীজের খাবারের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
হলুদ, নিম বা আদা কি ভাইরাস দূর করে?
হলুদ,নিম বা আদা এগুলোর নিজস্ব বেশকিছু ভালো গুণ আছে আমাদের শরীরে। কিন্তু করোনা ভাইরাসের উপর এদের প্রভাব কোনো গবেষণা দ্বারা প্রমাণিত হয়নি। হলুদের অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল ধর্ম আছে। কিন্তু হলুদ ভাইরাস নষ্ট করতে পারে না। একই রকমভাবে নিম জৈব জীবাণুনাশক হলেও ভাইরাসের উপর কোনো ঋণাত্মক প্রভাব নেই। আদার কিছু অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল ধর্ম আছে কিন্তু করোনা দূর করার ক্ষমতা প্রমাণিত হয় নি।
মশা,মাছি কি করোনা ভাইরাস ছড়াতে পারে?
কোভিড-19 আক্রান্ত মানুষের হাঁচি,কাশি, থুতু বা কথা বার্তার সময়ে বেরিয়ে আসা ড্রপলেট বা জলবিন্দু ভাইরাসের সংক্রমণের একমাত্র কারণ। মাছি,মশা এই ভাইরাস ছড়াচ্ছে এরকম কোনো তথ্য এখনো পর্যন্ত গবেষণায় উঠে আসেনি।
অ্যান্টিবায়োটিক কি এই রোগে দেওয়া যায়?
এখন অবধি সরাসরি কোভিড-19 রোগের চিকিৎসার কোনো ওষুধ আবিষ্কার হয়নি। সারা বিশ্বের সমস্ত দেশের বিজ্ঞানীরা নিরন্তর চেষ্টা চালাচ্ছেন। অ্যান্টিবায়োটিক ব্যাকটেরিয়ার উপর কাজ করে,ভাইরাসের উপর নয়। কিন্তু এই রোগের পাশাপাশি অন্যান্য কিছু রোগও থাকলে, তবেই বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা রুগীকে অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে থাকেন।
কোভিড-19 কি বয়স মানে?
করোনা ভাইরাস জাত,ধর্ম,বর্ণ এমনকি বয়স ও মানে না।ছোট শিশু থেকে বয়স্ক মানুষ যে কেউ আক্রান্ত হতে পারে। আবার হাঁপানি,ডায়াবেটিস,ফুসফুস ও হার্ট ইত্যাদির অসুস্থ্যতা আগে থেকেই থাকলে তারা যদি এই রোগে আক্রান্ত হন, তবে গুরুতর সমস্যা দেখা দেয়।
গরম সুপ, জলের গড়গড়া বা আলকোহল যুক্ত মাদক কি ভাইরাস দূর করে?
গরম সুপ বা পানীয় অথবা গরম জলে গড়গড়া করোনা ভাইরাস দূর করে, এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। আলকোহল যুক্ত মাদক করোনা ভাইরাস দূর তো করেই না উল্টে স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে।
রোদে দাঁড়ালে বা গরম জলে স্নান করলে কোভিড-19 এর সম্ভবনা কি কম?
রোদে নিয়মিত দাঁড়ালে কোভিড-19 হবে না এমন কোনো কথা নেই। বিশ্বের বহু শীত ও গ্রীষ্মপ্রধান দেশের অনেক জনগণ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত। আর গরম জলে স্নান করলেও শরীরের স্বাভাবিক উষ্ণতা কিন্তু 36.5-37 ডিগ্রী থাকে। কাজেই ঠান্ডা বা গরম যেমন জলেই স্নান করা হোক, এর সাথে করোনা ভাইরাস মুক্তির কোনো সম্পর্ক নেই।
থার্মাল স্ক্যানার কি কোভিড-19 রুগী চিহ্নিত করতে পারে?
থার্মাল স্ক্যানার শরীরের উষ্ণতা বুঝতে ব্যবহার করা হয়। এই রোগের একটা উপসর্গ জ্বর।কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে থার্মাল স্ক্যানার কোভিড-19 সব রুগীকে চিহ্নিত করতে পারে। উপসর্গহীন আক্রান্ত দের থার্মাল স্ক্যানার কিছুতেই ধরতে পারবে না।
রাসায়নিক জীবাণুনাশক গুলো শরীরে স্প্রে করা কতটা নিরাপদ:
রাসায়নিক জীবাণুনাশকগুলো কখনই শরীরে স্প্রে করা উচিত নয়। বিশেষ করে চোখ ও ত্বকের মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে এই সমস্ত রাসায়নিক। এগুলো শুধুমাত্র বস্তু সামগ্রী,মেঝে ও দেয়ালের জীবাণু ধ্বংস করতে ব্যবহার করা উচিত।
মাস্কের যথাযথ ব্যবহার, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ও হ্যান্ড হাইজিন–এই তিনমন্ত্রেই করোনা ভাইরাস থেকে নিজেকে ও পরিবার পরিজনকে রক্ষা করুন।
তথ্যসূত্র:
1) http://timesofindia.indiatimes.com/articleshow/82188085.cms?utm_source=contentofinterest&utm_medium=text&utm_campaign=cppst
2) oxygen:The gasping reality behind the crisis by T.V.Venkateswaran
3) https://www.insider.com/why-soap-is-better-defense-against-coronavirus-than-hand-sanitizer-2020-3
4) https://www.who.int/emergencies/diseases/novel-coronavirus-2019/advice-for-public/
5) The second wave, emerging variants and the vaccines by T.V.Venkateswaran
লেখক পরিচিতি : মিজানুর রহমান সেখ
মিজানুর পেশায় শিক্ষক এবং একজন সমাজসেবক। বিজ্ঞানকে জনপ্রিয় করার জন্যই মূলত লেখালিখি। লেখক পদার্থবিদ্যা ও শিক্ষাবিজ্ঞানে মাস্টার্স।