লেখক : শিশির বিন্দু
আজ, এই দিনে হামাগুড়ি দিতে শিখেছিল এক শিশু,
বিকট শব্দে সেই শিশু নিহতের নাম হলেও রক্তের এক একটি ফোঁটা বিষাক্ত বিস্ফোরক হবে একদিন মনে রেখ, ছুঁতে দেব না সেদিন সেই মাটি, আশার উপর মাথা রেখেছে হাজার বেদনার্ত কবিতারা, একটি শব্দ, একটি বাক্য! ততক্ষনে অনেকের পিতা মাতা আর নেই হয়ত
এই দুনিয়ায়, আগ্নেয়গিরির মত লেলিহান
শিখায় আকাশ নিষিদ্ধ হবে। আমি আরব দেখিনি,
দেখেছি যুদ্ধ শিশুর চোখে স্রষ্টার প্রতি মায়া,অভিযোগ
আমাদের প্রতি ক্ষুদা, দূর্বা ঘাস, ইফতার, নামাজ,
দেশের পতাকা সব যেন চিৎকার করছে। নিস্তেজ
দেহে নিজের ভাইকে বাঁচাতে এক শিশু এগিয়ে এসেছে
বিশ্বের সব দেশ কি ঠিক একি কাজ করতে পেরেছে?
আমরা কি পরিবার নই? আজ এই দিনে একজন মায়ের
কান্নার পানি আমাকে দিয়ে দিন, কাঁদতে চাই,সহস্র
যোজন দূরে থেকে আর্তনাদ শোনাতে চাই আমার।
যুদ্ধ আমাকে ডাকছে, যুদ্ধ নাদের নিকৃষ্টতম নামে
ডেকে নিয়েছে যেইসব পেয়াদা আমি তাদের মধ্যে গিয়ে
নিজেকে এটমিক জোনে ফেলে দিয়ে বিস্ফোরিত হতে চাই! কিছু শত্রুর জীবননাশের কারন না হলে নিজেকে বড্ড ধূর্ত মনে হচ্ছে! এখনো যারা বিদ্ধস্ত হয় নি,যারা মারা গেছেন,যারা আহত তাদের প্রার্থনায় আমি নিজেকে অব্যাহতভাবে নিহতদের মাঝে অকাতরে বিলিয়ে দিতে চাই।আপনারা কি শুনছেন আমি একজন বাংলাদেশের কবি।আমি নিজেকে উৎসর্গ করতে চাইছি! আমাকে মেরে ফেলুন নির্দ্বিধায়, নিঃসংকোচে!
আমি যুদ্ধ শিশুর মা হতে চাই, ব্যাথাতুর কানে শুনতে চাই সেই কন্ঠ “আমি বেঁচে আছি মা”!যখন সবাই বলেছিল কবিতা প্রতিবাদের ভাষা, আমি বুঝি নি। এখন আমি তা বুঝে গেছি। কেউ কি আছো যে আমাকে আমার বাচ্চাদের কাছে পৌছে দিতে পারো? যদি হিসেব না থাকে আমার পরিবারের আমি কোথায় আছি। তবে আমার মা জানবে আমিও মা হয়েছি! আমি আর ফিরব না। আমি দোজখের ফুল হয়ে একটি দেশ উপহার দেব আমার হাজার শিশুকে। যেমন আমার দেশ একদিন লড়েছে, আজ এই লড়াকু দেশের একজন। হয়ে
আমি দেশ উপহার দেব আমার হাজার যুদ্ধ শিশুদের। যুদ্ধ তুমি থেমে যাও, আমি আসছি।
লেখক পরিচিতি : শিশির বিন্দু
শিশির বিন্দু একজন কবি,উপন্যাসিক,প্রাবন্ধিক ও গীতিকার। তার প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ২৩ টি।
তিনি বাংলা,ইংরেজি, হিন্দি, উর্দু ও ফার্সিতে কবিতা লিখেছেন।