লেখক : মিটু সর্দার
মা নেই
মায়ের কথাগুলো খুউব মনে পড়ে।
মায়ের কথা না শুনে —
বাউণ্ডুলের মতো যখন চলতাম, ঘুরতাম
মা রেগে গিয়ে বলতো
একদম বাপটার মতো হ’য়েছে
কানি নখ কিছুই ফালাইনি।
হাতে ছোট্ট একটা ঢাং লয়ে দৌড়াতেন মা
নাগাল না পেয়ে বকতেন আর বলতেন
আজকে বাড়িতে আসিস
তোর একদিন কি আমার একদিন
ভাতের বদলে খেতে দেবো ফ্যান
কাজের ফাঁকে ফাঁকে করতেন মা প্যান-প্যান।
মা নেই
খুউব মনে পড়ে
মায়ের শাসনের আড়ালে লুকিয়ে রাখা ভালোবাসা
অভিমানের স্বরে কথাগুলো।
যখন রাগ করে ভাত না খেয়ে কাঁথা মুড়িয়ে শুয়ে যেতাম
মা মাথায় হাত বুলিয়ে বুলিয়ে কাঁদতেন
আর বলতেন “আয় বাবা খেয়ে নে”
ঝারি মেরে সরিয়ে দিতাম মায়ের হাত
মা-ও না খেয়ে কাটাতেন রাত।
সেইদিন মা কেঁদে ছিলেন —
চোখের জলে বালিশ ভিজিয়ে ছিলেন —
তার আদরের সন্তানেরা ভাত খায়নি ব’লে
আজ মা কেঁদে কেঁদে চোখের কোনে ঘা করছেন
চোখের জলে বালিশ ভিজিয়ে দীর্ঘশ্বাসে শোকাচ্ছেন
তার আদরের সন্তানেরা ভাত দেয়নি ব’লে।
মা নেই
মা-কে সেবা করে জান্নাত অর্জনের সুভাগ্য আমার হয়নি
ছোট্ট থাকতেই মা লোকান্তরিত হয়েছেন
ঘর বেঁধেছেন নিঝুম নির্জন স্থানে।
লেখক পরিচিতি : মিটু সর্দার
মোঃ আকাইদ-উল-ইসলাম (মিটু সর্দার)। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলাধীন কসবা উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের অন্তর্গত বড়মুড়া গ্রামে ১৯৮৭ সালের ১০ই নভেম্বর, এক সম্ভান্ত্রশালী মুসলিম পরিবারে কবির জন্ম। কবির পিতার নাম নূরুল ইসলাম (মাষ্টার) আর পিতামহের নাম আলতাব আলী সর্দার। কবির চার ভাই এবং দুই বোন। কবি যখন ছোট তখন মা এবং বড় ভাইকে হারান। ভাইবোনের মধ্যে কবি তৃতীয় এবং ভাইদের মধ্যে দ্বিতীয়। কবির যৌথ কাব্যগ্রন্থ "অনুভবের সব রঙে তুমি, রমজান সংকলন, কাব্যের উঠোনে শব্দ নাচে, ইত্যাদি। কবির ছোট বেলা থেকেই কবিতা লিখা সখ । স্কুল জীবন থেকে মাঝেমধ্যে কবিতা লিখতেন। কবি গ্রামের অন্যায়, অবিচার, নির্যাতন, জোরজুলুমের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী লিখা লিখতেন।