লেখক : সবুজ পরিমল
স্বপ্নটা থমকে গেছে রিমলির, জীবনটা নয়;
কমনওয়েলথের ফিনিশিং লাইন থেকে সটান দরজায়-দরজায়…
পোডিয়ামে জাতীয় সঙ্গীত শোনা হয়নি,
ছবি তোলা হয়নি সোনার মেডেলে দাঁত চেপে;
লড়াইটা ট্র্যাকের থেকে বদলে গিয়েছে ভাতে…
পাতা ঝরা ফাগুনে ওর মনেও কেন যে বসন্ত এসেছিল!
বসন্ত নয়, পল্টু;
ইটভাটায় কাজ করত,
সেই খুচরো রোজগারে রিমলির জুটত কখনও কাঁটা ক্লিপ,
আবার কখনও কাঁটা-চামচের চাউমিন;
কালোর মাঝেও সাদা দাঁতগুলো তখন ঝকমকিয়ে উঠত…
সেই পল্টুর মাছি ভনভনে লাশটা দেখে
বমি এসেছিল রিমলির,
শুধুই ঘেন্নায় নয়;
সংসারের স্বপ্ন আর পেটের ভেতর ছোট্ট কুঁড়িটার উপস্থিতি টের পায়নি কেউ,
শুধু বলেছিল, “বড় বাড় বেড়েছিল পল্টু, নেতা হবার খুব শখ!
জলে নেমে কেউ লড়ে কুমিরের সাথে!”
হ্যাঁ কুমিরের কান্না-ই সেদিন কেঁদেছিল লকাইদা,
হলুদ পার্টির উঠতি জননেতা,
রিমলিকে উঠিয়েও নিয়ে গিয়েছিল।
তবুও থেমে যায়নি রিমলি,
থেমে যায়নি ওই ছোট্ট চারাটার জন্য,
কোলে করে বাড়ি বাড়ি ফেরি করে,
ছেলেটা কাঁদলে সরস বৃন্তটা মুখে ঠেসে ধরে;
সময়ে-অসময়ে পণ্যের আড়ালে নিজেও পণ্য হয়ে যায়…
লেখক পরিচিতি : সবুজ পরিমল
সবুজ পরিমল, কর্মসূত্রে আসানসোল নিবাসী। গল্প, ছড়া, কবিতা বিভাগে স্বচ্ছন্দ। বই পড়তে ভালোবাসেন। সামাজিক মাধ্যমর সঙ্গে সঙ্গে পত্র-পত্রিকায় তাঁর লেখা প্রকাশ পেয়েছে। সাহিত্য বিষয়ক বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় স্থান প্রাপ্ত হয়েছেন। কলকাতা বইমেলায় তাঁর দুটি কাব্যগ্রন্থ 'নাও বাইছি হৃদমাঝারে' ও 'আট বারোর সবুজ কথা' পাঠক মহলে ইতিমধ্যেই সমাদৃত।