সত্যিকারের মানুষ

লেখক : অজয় কুমার দত্ত

ঢাকুরিয়ার কাছে মিশনারি গার্লস স্কুলটার পাশের রাস্তা দিয়ে কিছুটা গেলে একটা ব্যাঙ্কের কোয়ার্টার। সেখানেই একটা ফ্ল্যাট পেয়ে গেল অরিন্দম। ব্যাঙ্কের ম্যানেজার, নানা রাজ্যে নানা ঘাটের জল খেয়ে এবার পোস্টিং পেয়েছে কোলকাতায়। ব্র্যাঞ্চটা অবশ্য হাতের কাছে হয়নি। হয়েছে সেই লালবাজারের কাছে। যাই হোক অটোতে রবীন্দ্রসরোবর গিয়ে মেট্রো ধরলে বিশেষ সময় লাগে না। বাঙালি হলেও সে বড় হয়েছে মফস্বলের বাড়িতে। সেখানেই স্থানীয় স্কুল কলেজে পড়াশোনা। চাকরির বাধ্যবাধকতায় অন্যান্য শহরে থাকতে হলেও কোলকাতায় এই প্রথম। রাস্তাঘাট বিশেষ চেনে না। আর চিনেই বা কী লাভ! ব্যাঙ্কে যা কাজের চাপ, ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ আছে না কি?

বেড়ানো আপাতত মাথায় থাক, প্রধান সমস্যা হচ্ছে ছেলেটাকে স্কুলে ভর্তি করা। মেয়েকে নিয়ে কোন অসুবিধে হয়নি। পড়াশোনায় ভাল। দিল্লী মুম্বাইয়ে ছোটবেলাটা কাটানোয় মেয়ে তার ইংলিশে তুখোড়। চান্স পেয়ে গেছে রাস্তার পাশে মিশনারি স্কুলটায়। নিজে বাংলা মিডিয়ামে পড়াশোনা করলেও ইংরেজি মিডিয়াম স্কুলের প্রতি অরিন্দমের একটা মোহময় মুগ্ধতা আছে। বিভিন্ন রাজ্যে তার সহকর্মীদের ছেলেপিলেরা প্রায় সবাই ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে পড়ে। তাই মেয়েটা মিশনারি স্কুলে ভর্তি হতে পারায় সে খুব খুশি শুধু নয়, মনে মনে ভীষণ গর্বিতও। কিন্তু ছেলেটার মাথা তেমন নয়। দেশের বাড়িতে দাদুর বড়ো প্রিয় এই নাতি। তিনি বলতেন– আহা, পড়াশোনায় ভালো নয় তাতে হয়েছেটা কি? ভালো ছাত্রের থেকে বেশী দরকার ভাল মানুষ হওয়া। সত্যিকারের মানুষ হওয়া।       

ক্লাস ফাইভে ভর্তি করতে গিয়ে একদম নাজেহাল হয়ে গেল অরিন্দম। খুব ইচ্ছে ছিল বালিগঞ্জ সার্কুলার রোডে বা পার্কস্ট্রীটের নামী মিশনারি স্কুল দুটোর কোন একটায় পড়াবে ছেলেকে। কিন্তু ব্যাটার মাথা এত নিরেট যে গুছিয়ে সব প্রশ্নের উত্তরগুলো লিখতেই পারল না। ভাইভাতেও একই অবস্থা। নামধাম বলবার পর ফাদার প্রিফেক্টের পরের প্রশ্নে সে শুধু হাঁ করে চেয়ে থাকে। কথাই বলতে পারে না। ইন্টারভিউয়ের পর রাস্তায় বেরিয়ে বলল সে নাকি বুঝতেই পারেনি তাকে কী জিজ্ঞেস করা হয়েছে। শুনে অরিন্দম মুখ কালো করে ফেলে। বাংলা মিডিয়ামের মধ্যে দেশপ্রিয় পার্কের উল্টোদিকের স্কুলটাতেও যখন ছেলে চান্স পেল না, সত্যিই হতাশ হয়ে পড়ল অরিন্দম। শুনেছে এ স্কুলে তার ছেলেবেলার ফুটবল মাঠের হিরো চুনী গোস্বামী পড়তেন। ভর্তি হলে মনে মনে হারানো দিনগুলোকে ছুঁতে পারবে ভেবেছিল। তাও হলো না। শেষ পর্যন্ত শিকে ছিঁড়লো ঢাকুরিয়া স্টেশনের দিকে একটা স্কুলে।

টুবলু, মানে ওর ছেলের এতে কিছু যায় আসে না। একেকটা স্কুল বাদ হয়ে যাওয়ায় সে খুশিই ছিল। ভাবত, কোন স্কুলই না পেলে কী ভালই যে হয়! শেষ স্কুলটাতে চান্স পেয়ে মনটাই খারাপ হয়ে গেল ওর। দুষ্টুও বটে ছেলেটা। পড়াশোনায় মনই নেই।

যেদিন ওরা এই ফ্ল্যাটে এল, মালপত্র টানাটানির সময় দাঁড়িয়ে দেখছিল রেলবস্তির একটা ছেলে, টুবলুরই বয়সী। কোলে তার গলায় লাল রিবন বাঁধা এক বাচ্চা নেড়ি কুকুর। এই ছোকরাই হয়ে গেল টুবলুর বেস্ট ফ্রেন্ড। করপোরেশন স্কুলে পড়ে। টুবলু কোন ক্লাস জিজ্ঞেস করায় বলতেই পারল না। বলে, ‘যাই-ই তো না স্কুলে। ক্লাসফ্লাস মনে নেই।’ টুবলুর খুব মনে ধরলো কথাটা। আঃ এমনি যদি ওর জীবনটাও হতো! কিন্তু মা-বাবা বড্ড কড়া। স্কুলে পাঠাবেই রোজ।

ওই ছেলেটার নাম পটকা। তা পটকাকে একদিন টুবলু বলল- ‘এই আমাকে একটা কুকুর এনে দিবি রে? পুষব।’ পটকা খুব খুশি হয়ে মহা উৎসাহে আর একটা নেড়ির বাচ্চা যোগাড় করে আনলো। ওদের পাড়ায় কুকুরের চাষ। সবক’টাই পটকার বন্ধু। সে তো কিছুতেই টুবলুদের ফ্ল্যাটে ঢুকবে না। কুঁই কুঁই করে পরিত্রাহী চিৎকার জুড়ে দিল। পটকা হাতে ধরে শেখাল টুবলুকে কী করে পোষ মানাতে হয়, কী করে খাওয়াতে হয়, এইসব। নেড়ি কুকুরগুলো বাচ্চা থাকতে ভারি সুন্দর হয় দেখতে। টুবলুর মায়েরও বেশ পছন্দ হয়ে গেল। বিস্কিট, কাঁটা বেছে বেছে মাছ, দুধ সব উনিই সাপ্লাই দিলেন। বিকেলে স্কুল থেকে ফিরল ওর দিদি। প্রথমটায় এম্মা, নেড়ি এনেছে ছিঃ, নোংরা কোথাকার…বলে নাক সিঁটকোলেও পরে আস্তে আস্তে সেও ভালবেসে ফেললো বাচ্চা কুকুরটাকে। কিন্তু বাবাকে নিয়ে ওদের বড্ড ভয়। অরিন্দম কোন প্রাণীই ঘরের মধ্যে সহ্য করতে পারে না। এর আগে টুবলুর দিদি পাখি, রঙিন মাছ এসব পুষবার আবদার করে খুব বকুনি খেয়েছে। মা আর  ছেলে-মেয়ে মিলে লুকিয়ে রাখল কুকুরটাকে বারান্দায় জুতোর র‍্যাকের পেছনে।

 অরিন্দম রাত সাড়ে ন’টায় অফিস থেকে ফিরল। চা খেয়ে খবরের কাগজটা নিয়ে দশ মিনিট হয়েছে কী হয়নি, শুনতে পেল কুঁই কুঁই মৃদু আওয়াজ।  প্রথমটায় গা করেনি। কিন্তু নেড়ির গলাসাধা কিছুক্ষণের মধ্যেই উচ্চগ্রামে উঠতে অরিন্দম নড়েচড়ে বসলো। স্ত্রীকে জিজ্ঞেস করলো — ‘কোথায় ডাকছে বলো তো? ঘরের মধ্যেই মনে হচ্ছে যেন!’ টুবলু তখন ভয়ে সিঁটিয়ে চেয়ারে বসে আছে আর দিদি তো অন্য ঘরে বইয়ের পাতায় ঝুঁকিয়ে দিয়েছে মাথা। টুবলুর মা ধীরেসুস্থে ঘটনাটা বোঝাতে বোঝাতেই অরিন্দম রেগে ফায়ার। এঘরে ওঘরে খুঁজে ব্যালকনিতে গিয়ে আবিষ্কার করল আওয়াজের উৎস আর ঘাড়টা চিমটি দিয়ে তুলে চললো নীচে নির্বাসন দিতে। টুবলুর হাত-পা ছুঁড়ে কান্নায় কোন লাভই হলো না। দৌড়ে নীচে যাওয়ার উপক্রম করতেই গেটে তালা পড়ল।

রাত বাড়ছে। মা ডাকল – ‘টুবলু খাবি আয়।’ উত্তর না দিয়ে সে মুখ গুঁজে শুয়ে রইল বিছানায়। ডাইনিং টেবিলে সবাই অপেক্ষায়। কিন্তু টুবলু এল না হাজার ডাকাডাকিতেও। তখন ওর মা অরিন্দমকে বললেন- ‘তোমারই বা অত জেদ করার কী আছে? ছোট ছেলের শখ হয়েছে, পুষুক না! দু’দিন বাদে আপনিই শখ চলে যাবে। নিজেরই তো ছেলে! সারারাত না খেয়ে থাকলে ভাল লাগবে?’ শুনে অরিন্দম মুখ গম্ভীর করে ডাকল- ‘চল, দেখে আসি নীচে।’ সঙ্গে সঙ্গে টুবলু এক লাফে বাবার সাথে নীচে এলো। কুকুরছানাটা তখন গ্যারেজের এক কোণে লেপটে আছে, আর হাজার মশা পোঁ-পোঁ করছে তার গায়ে। টুবলু কোলে করে বাচ্চাটাকে নিয়ে বাবার সাথে উপরে এল আর যত্ন করে শুইয়ে দিল জুতোর খালি বাক্সে। মা একটু দুধ এনে দিতেই বাচ্চাটা চুকচুক করে খেতে আরম্ভ করে। টুবলুর মুখে তখন জয়ের হাসি।

বছর দুই পার হয়ে গেল এমনি করে। টুবলু আর পটকা তাদের দুই পোষ্যকে নিয়ে পাড়া দাপিয়ে বেড়ায়। ওদের নাম দিয়েছে- রকেট আর পকেট। সকালে স্কুলে যাওয়ার আগে কুকুর নিয়ে থাকে, আর বিকেলে ফিরেও তাই। ছুটির দিনে তো কথাই নেই, নাওয়া খাওয়া বাদে প্রায় সারাক্ষণই রকেট-পকেটের গলার দড়ি ধরে পাড়ায় ঘুরে বেড়ায় দুই মূর্তিমান। ফলস্বরূপ টুবলু একবছর পাশ করতে না পেরে এখন ক্লাস সিক্স। আর পটকার তো ওসব পাটই নেই। অরিন্দম লজ্জায় মুষড়ে আছে। ওর অফিস কলিগদের ছেলেমেয়েরা নামী স্কুলের স্ট্যান্ড করা স্টুডেন্ট। ভবিষ্যৎ কতো উজ্জ্বল ওদের। আর নিজের ছেলেটা অধঃপাতে যাচ্ছে। পটকার সংস্পর্শ থেকে কিছুতেই মুক্ত করা যাচ্ছে না ওকে। মেয়ে অবশ্য ভালোই করছে। ফার্স্ট সেকেন্ড না হলেও মার্কস ভালোই পায়। মাধ্যমিক দেবে এবার। শিশু সারমেয় দু’টো খাবার, যত্ন-আত্তি পেয়ে রীতিমত বড়সড় চেহারা। টুবলুর মা ওদের নিয়ম করে খেতে দেয়। পটকার কুকুরের খাওয়াদাওয়াও একই সঙ্গে। ওদের তাড়ায় পাড়াতে বেড়াল, ফেরিওয়ালা, ভিখিরী, একতারা বাজানো বাউল, সেলসম্যান কেউ ঢুকতে পারে না। দু’টো মিলে এমন ঘেউঘেউ শুরু করে যে ওরা পালাতে পথ পায় না। কেন যেন কুকুর দু’টোর সবচেয়ে বেশি রাগ বাইক চালানো ছেলেদের প্রতি। অ্যামাজন ফ্লিপকার্টের ডেলিভারী বয়রা তো বাইকে চড়েই আসে। ওরা পড়েছে ভীষণ বিপদে। এছাড়া টুবলু-পটকা জুটি রাস্তায় ইট সাজিয়ে উইকেট বানিয়ে ক্রিকেট প্র্যাকটিসও করে প্রায়ই। ওদের ছয়-চারের ঠ্যালায় পড়শীদের কাচের জানালা ভেঙে যাওয়া তো নৈমিত্তিক ব্যাপার। পটকার সাহচর্যে বস্তির প্রচলিত গালাগালও টুবলুর মুখে উঠে এসেছে কিছু কিছু।

অরিন্দমকে মাঝে মাঝেই অফিসে যাওয়া আসার পথে শুনতে হয় – আচ্ছা ম্যানেজার বাবু, আপনার ছেলেকে……। লজ্জায় মাথা নীচু হয়ে আসে অরিন্দমের। তাছাড়া ওরা তো এ পাড়ার আদি বা স্থায়ী বাসিন্দা নয়, সবাই অত সমীহ করেও কথা বলে না। একে অফিসে এত চাপের মধ্যে কাজ, তার ওপর এইসব উটকো ঝামেলা ওর মাথা স্থির থাকতে দেয় না। বাড়ীতে ফিরে প্রায়ই ছেলের ওপর ধমক, চেঁচামেচি ঘরের দেয়াল পেরিয়ে শোনা যায় পাশের ফ্ল্যাট থেকে। মাঝে মাঝে তা প্রহার পর্যন্তও গড়ায়। ছেলের মাকেও গরম বাক্য শোনাতে ছাড়ে না অরিন্দম। গৃহশান্তি মোটের ওপর বিঘ্নিত।

একদিন সকাল তখন প্রায় সাড়ে সাতটা। অরিন্দম চা-টা খাওয়ার পর বাথরুমে ঢুকব ঢুকব করছে। অফিসের জন্য তৈরী হতে হবে তো! টুবলু যথারীতি কুকুর নিয়ে বড় রাস্তায় হাঁটাহাটিতে ব্যস্ত। সঙ্গে অবশ্যই আছে পটকা তার পোষ্যকে নিয়ে। পেট ভরে দুধভাত, মাছ-মাংস খেয়ে আর দৌড়োদৌড়ি করে দুটো কুকুরেরই বড়সড় চেহারা। রাস্তায় আরো প্রাতঃভ্রমণকারীরা রয়েছে। নানা ভঙ্গিতে হাঁটছে দৌড়োচ্ছে। কেউ পড়েছে বারমুডা টি-শার্ট, আবার কেউ রঙিন টাইটফিট সিন্থেটিক গেঞ্জী-ফুলপ্যান্ট। সবারই পায়ে স্নিকার। মোটামোটা ভুঁড়িওলা লোকগুলোর শরীরচর্চার বহর দেখে টুবলু-পটকার হাসি দেখে কে!

এদের পাশ দিয়েই রাস্তা দিয়ে হাঁটছিল এক ভিখারি এমন সময় ফাঁকা রাস্তায় প্রচন্ড বেগে বেরিয়ে গেল একটা মোটরবাইক ভিখারিটাকে ধাক্কা মেরে। সবাই হৈহৈ করে উঠল, কিন্তু রক্তাক্ত লুটিয়ে পড়া মানুষটির দিকে এগিয়ে গেল না একজনও। বাইকওয়ালার উদ্দেশ্যে খানিক বাংলা-ইংরেজী মেশানো গালাগাল দিয়ে পথচারীরা এগোল যে যার পথে। মুখ চাওয়াচাওয়ি করে টুবলু আর পটকা। রাস্তায় বসে পকেটের রুমাল দিয়ে টুবলু রক্ত মোছার চেষ্টা করল জ্ঞানহারা ভিখারির শরীর থেকে। পটকা দৌড়ে ডেকে আনল একটা রিক্সা। তাতে চাপিয়ে ওরা নিয়ে গেল ঢাকুরিয়া ব্রিজের পাশে হাসপাতালটায়। এবার কী করবে বুঝতে না পেরে টুবলু মোবাইলে খবর দিল বাবাকে।

 খাওয়ার টেবিলে বসেই অরিন্দম ফোনটা পায়। প্রথমটায় খুব বিরক্ত হলেও কর্তব্যবোধে এবং টুবলুর মায়ের তাড়নায় দুজনেই সোজা গেল হাসপাতালে। তারপর কাগজ পত্রের বাহানা সামলে ভর্তি করা গেল এমার্জেন্সী কেস হিসেবে। টুবলুর মুখে তখন স্বর্গীয় হাসি।  আর একটা কথা এখানে উল্লেখ না করলে অন্যায় হবে। দুর্ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গে নেড়ি কুকুর দুটো ঘাতক মোটরবাইকটাকে ধাওয়া করে ছুটতে ছুটতে যাদবপুরের কাছাকাছি গিয়ে ধরে ফেলল আর ঝাঁপিয়ে পড়লো চালকের উপর। জামা ছিঁড়ে ফালাফালা করে দিল একেবারে। আতঙ্কিত ছোকরা ছেলেটা বাইক সামলাতে না পেরে পড়ে গেল মাটিতে। চোখে এই সাতসকালেই সানগ্লাস থাকলেও তার মাথায় হেলমেট ছিল না। মুহূর্তে ভিড় জমে গেল ওখানে। রাস্তা আটকে বিপরীতমুখী বাস অটোগুলো হর্ন বাজিয়ে শোরগোল বাঁধাতে দৌড়ে এলো মোড়ের ট্রাফিক পুলিশ আর সিভিক ভলান্টিয়ার। ততক্ষণে থানায় খবর চলে গেছে। জনগণ ও পুলিশের হাতে বেপরোয়া আহত বাইকওয়ালার ঠাঁই হলো যাদবপুর থানায়। আর নেড়িরা হয়ত বুঝতে পেরেছে যে ওদের কর্তব্য শেষ, পেছন ফিরে দৌড় লাগালো ফিরতি পথে।

টুবলু পটকা‌ তো হসপিটালেই ছিল ততক্ষণ। রাস্তায় তারস্বরে ভৌ-ভৌ ডাক শুনতে পেয়ে হঠাৎ খেয়াল হল কুকুর দুটোর কথা। পটকা বেরিয়ে ওদের নাম ধরে ডাকতেই রকেট-পকেট দৌড়ে চলে এলো কাছে আর তারপর চারজনের আদর, আদর আর আদর। ওদের মাথায় হাত রাখলো অরিন্দম। এতদিন সে জানত না মানুষ হওয়া কাকে বলে। তার চোখে লেখাপড়া শিখে একটা ভাল চাকরি করা ছেলেই ছিল আদর্শ মানুষ। আজ ওদের মুখের দিকে চেয়ে অরিন্দম বুঝল আর কিছু না হোক, সত্যিকারের ভাল মানুষই তৈরি হয়েছে তার ছেলে। 


লেখক পরিচিতি : অজয় কুমার দত্ত
অবসরপ্রাপ্ত ব্যাঙ্ক ম্যানেজার

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to Top
error: লেখা নয়, লিঙ্কটি কপি করে শেয়ার করুন। ধন্যবাদ।

লেখা আহ্বান - বিস্তারিত জানতে ছবিতে ক্লিক করুন

দীপায়ন