কবি: সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়
ইচ্ছেপোশাক, চাঁদ রঙের সন্ধে
যখন একা লাগে
নিজেকে উড়িয়ে দিই
ফুরিয়ে দিই…
আর কখন আমার
কথাজন্ম
টুপ করে গিয়ে বসে পড়ে
তোমার ডিপ ইউয়ের নীচে…
তুমি না-জেনেই ভাসিয়ে দাও সব!
তোমার চুলের ডগায় লেগে থাকা
অল্প-একটু স্বপ্নজল মেখে
আমি যখন
একপশলা বৃষ্টি নিয়ে ফিরি
তোমার চোখেই
তুমি ঘাড় কাত করে হাত রাখো চাদরে…
কিংবা রেলিংয়ের কাচ লাগাতে
ভুলে গেছ বলে
বৃষ্টির ছাঁট এসে জড়ো হয় যখন ওই
গোলাপি বারান্দায়…
অথবা সন্ধে হলে, মাথায় একটা টাওয়েল জড়িয়ে
জাস্ট আনমনে ঘুরে বেড়াও যখন
তুমি…
তোমার ইচ্ছেপোশাক এসে মাঝে মাঝে
ছুঁয়ে দ্যাখে আমাকে
এবং
একটা চাঁদরঙের সন্ধে এসে কেমন
বৃষ্টি কুড়িয়ে রাখে
সারা আঁচল!
সাইড লাইনের ধারে
অথচ একটা-কিছু ঘটতেই পারত!
এই যে তুমি ভগ্নাংশ সেকেন্ডের ব্যবধানে
যেভাবে ফিস্ট করে বল পাঠালে
সাইড লাইনের ধারে —
তা দেখে গ্যালারি তো উত্তাল হলই
দূরে, এই ধ্রুবদেশে বসে আমিও কম
স্তম্ভিত নই…
আজই একটা-কিছু ঘটে যেতে পারত!
ঘটল না কারণ তারা তৈরি ছিল,
জমাট ডিফেন্স কেটে বেরনোর কৌশল
কেউ
অনেক আগেই পড়ে ফেলেছিল
নিখুঁত অভ্যাসে —
তাই কী-একটা না-প্রাপ্তি নিয়ে এখনও
মেঘ বাঁধার নেশা ধারাবাহিক…
এই বুঝি ভেসে যাব সব —
এই বুঝি হাতে চলে আসবে বিশ্বকাপে
খেলার টিকিট!
দেশের গায়ে সূর্যের আলো খসে পড়ছে
যতক্ষণে —
তার চেয়ে অনেক-অনেক বেশি
সময় এবং স্বপ্ন
আমাদের খোয়া গিয়েছে…
কেন পারি না, কেন পারি না
একশো বছর পরেও
অন্তত দুটো গোল বেশি দিয়ে রাখতে!
লেখক পরিচিতি: সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়
সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্ম ১৯৮৬-তে। বাবা গুরুপ্রসন্ন বন্দ্যোপাধ্যায়। মা পুরবি চট্টোপাধ্যায়। মূলত বাবার কাছে ঠাকুমার কাছে প্রেরণা পেয়ে ক্লাস সেভেন থেকে সৌরভের প্রতিভার প্রকাশ। পশ্চিম বর্ধমানের পানশিউলি উচ্চ বিদ্যালয়ের স্কুল ম্যাগাজিন থেকে উঠে আসা সৌরভের সৃজন দেশ, সানন্দা, শুকতারা, কবিসম্মেলন, কবিতা আশ্রম, কলেজস্ট্রীট, আলোর ফুলকি, অল্প কথায় গল্প, চান্দ্রমাস, জলার্ক, রোদরং, রোদের ডানা, লুব্ধক, আলো, কেতকী, বর্ষালিপি ইত্যাদি অসংখ্য পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়ে আসছে। দৌড় প্রকাশনের প্রথম দশকের কবিতা, বীরুৎজাতীয় সাহিত্য সম্মিলনীর শান্তিনিকেতনের কবিতার মতো কয়েকটি উৎকৃষ্ট সংকলনেও সাগ্রহে প্রকাশিত হয়েছে তাঁর লেখা। কবিতার পাশাপাশি গান, গল্প, চিঠি-ও তাঁর চর্চার আশ্রয়। রোদ্দুরে যাই চলো, একফাল্গুন শ্যাম্পুসকাল, শূন্যের উৎসব, রোদফুল ও প্রসন্ন ওড়াউড়ি এখনও পর্যন্ত তাঁর প্রকাশিত কবিতার বই। পশ্চিমবঙ্গ যুবকল্যাণ দপ্তরের আয়োজনে সরাসরি রাজ্যস্তরে অনুষ্ঠিত স্বরচিত কবিতার প্রতিযোগিতায় একবার তৃতীয় স্থান পেয়েছেন সৌরভ।বাংলাদেশের চোখ কবিতাপত্রের পক্ষ থেকে আন্তরিক সাক্ষাৎকার গ্রহণ তাঁর দুর্লভ পাওয়া।বর্তমানে বীরভূমে থাকা সৌরভের পেশা একটি বেসরকারি কলেজে পড়ানো। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করা, খেলায় ধারাভাষ্য দেওয়া সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অন্যতম শখ।
অসাধারণ।লেখা।সৌরভ আমার প্রিয় কবি
অত্যন্ত মননশীল কবিতা। ভীষণ ভালো লাগলো।