লেখক : ইচ্ছেমৃত্যু
এফ.আই.আর
সকাল থেকেই মেঘলা – কখনও ঝিরঝির বৃষ্টি, দেখে যেন মনে হয় বর্ষা এসে গেছে। থানার অফিসের সামনে কনস্টেবল সুদীপ, ড্রাইভার নিতাই আর দুজন সিভিক পুলিশ চা খেতে খেতে গুলতানি মারছিল, অকালবর্ষার অলসদিন যেমন হয় আরকি। সেই সময় অফিসঘরের সামনে এসে দাঁড়ালেন এক প্রৌঢ়। পাজামা-পাঞ্জাবি পরা, মাথার মাঝখানে টাক, চারপাশে এলোমেলো ধূসর চুল – বৃষ্টির জলে ভেজা। হাতের বন্ধ ছাতা মনে হয় খুলতে ভুলে গেছেন ভদ্রলোক। পায়ে চপ্পল, পাজামায় জল-কাদার ছিটে। থানা চত্বরে ঢোকার সময়ই কনস্টেবল সুদীপ তাকে লক্ষ করেছিল, আর তার পুলিশি চোখে প্রৌঢ়ের চেহারা-চালচলনের খুঁটিনাটি এড়ায়নি। তবে সে এবং সঙ্গীরা গল্পগুজবেই মেতে ছিল যতক্ষণ না প্রৌঢ় নিজে এগিয়ে এসে বললেন, “একটা এফ.আই.আর করব। বড় বাবু কোথায়?”
সুদীপ গম্ভীর গলায় বলে “যা বলার আমাকেই বলুন, এখন বড়বাবু নেই।”
কিন্তু বৃদ্ধ আবার বললেন, “যা বলার আমি বড়বাবুকেই বলব।”
“যা বলার বড়বাবুকেই বলব!” মুখ বেঁকিয়ে এক সিভিক পুলিশ মন্তব্য করে। “বড়বাবু যেন ওনার গোলাম, এই ওয়েদারে ওনার জন্য বসে আছেন!”
“ঠিক আছে, আমি একপাশে বসে অপেক্ষা করছি,” প্রৌঢ় ভাবলেশহীন গলায় বললেন।
“আচ্ছা, আচ্ছা, ঠিক আছে। কী হয়েছে বলুন, তেমন হলে ছোটবাবু ডাইরি লিখে নেবে,” অবস্থা সামাল দিতে সুদীপ বলল।
“আমি খুন করেছি।” সেই একই রকম ভাবলেশহীন উত্তর।
“ইয়ার্কি হচ্ছে! আষাঢ় মাস পড়ল না, শুধু বৃষ্টি দেখেই আষাঢ়ে গল্প ফাঁদতে চলে এসেছেন? আচ্ছা পাগলের পাল্লায় পড়া গেল মাইরি!”
“বলছি না খুন করেছি! দয়া করে বড়বাবুকে ডাকুন।”
সুদীপদের মুখের হাসি মিলিয়ে গেল। সুদীপ ভিতরে ঢুকে কিছুক্ষণ পর বেরিয়ে এলো। প্রৌঢ়কে বলল, “আপনি ভিতরে এসে বসুন, বড়বাবুকে ফোন করা হয়েছে। পাশেই কোয়াটার্সে আছেন, কিছুক্ষণের মধ্যেই আসছেন।”
আধঘন্টার মধ্যেই অফিসার-ইন-চার্জ “বড়বাবু” অরিন্দম ঘোষ বেজার মুখে অফিসে ঢুকলেন। নিজের টেবিলে যাওয়ার আগে আড়চোখে মেপে নিতে চাইলেন প্রৌঢ়কে। এক ঝলক বৃদ্ধকে দেখে থেমে গেলেন। লোকটা একেবারে ভেঙে পড়া মানুষের প্রতিচ্ছবি। দেখে মনে হচ্ছে যেন কোনও শক্তিশালী ঝড় পেরিয়ে এসেছেন প্রৌঢ়। চোখে মোটা ফ্রেমের চশমা, তোবড়ানো গাল, নিরীহ থমথমে মুখের মধ্যে তবুও একটা আভিজাত্যের ছাপ লোকানো আছে। বড়বাবু নিজের টেবিলে গিয়ে ডেকে পাঠালেন প্রৌঢ়কে। প্রৌঢ় এলে তাঁকে বসতে দিয়ে অরিন্দমবাবু জিজ্ঞাসা করলেন, “আপনার নাম?”
প্রৌঢ় উত্তর দিলেন, “শ্রীযুক্ত বিনয় চট্টোপাধ্যায়। বয়স ঊনসত্তর। আমি খুন করেছি। আমার স্ত্রীকে।”
অরিন্দমবাবু বললেন, “আপনি এখন স্বাভাবিক আছেন তো?”
“স্বাভাবিক! কে স্বাভাবিক আর কে নয়, বলুন তো? আমি হয়ত ‘অসাধারণ’ বোধ করছি। চার বছর ধরে একজন মানুষকে দিনে দিনে মরতে দেখার পরে, মানুষ ঠিক যতটা স্বাভাবিক থাকতে পারে আমি ঠিক ততটাই স্বাভাবিক আছি।” একটু থেমে বললেন, “আমার স্ত্রী, লীলা। বয়স একষট্টি। চার বছর আগে ওর জরায়ুতে ক্যান্সার ধরা পড়ে। প্রথমে অপারেশন, তারপর কেমো, তারপর রেডিওথেরাপি – সব করেছি। কলকাতা, ভেলোর, টাটা মেমোরিয়াল – যেখানে বলা হয়েছে, গেছি। আমার জীবনের সঞ্চয় যা ছিল, শেষ হয়ে গেছে। তাও কিছু বলিনি। আমি বিশ্বাস করতাম, যদি মন থেকে ভালোবাসা দিয়ে সেবা করি, ঈশ্বর দেখবেন।
প্রতিদিন ওর পছন্দের খাবার তৈরি করতাম। যদিও ও খেতে পারত না, কেবল এক চামচ করে দিতাম মুখে। মাঝরাতে যখন ব্যথায় কাতরাতো – চিৎকার করত, আমি ওর কপালে হাত রেখে ওকে শান্ত করার চেষ্টা করতাম। বহুকষ্টে ও ব্যথাটা গিলে নিত, হয়ত আমার কথা ভেবেই! ওর প্রতিটা ওষুধ, ইনহেলার, পেইন কিলার, ডাক্তারের অ্যাপোয়েন্টমেন্ট… সব কিছু লিখে রাখতাম, কোনও ভুল না হয় যেন। আয়া রাখার সামর্থ্য ছিল না, ওর সব কিছু আমাকে করতে হত। যখন হেঁটে বাথরুম যেতে পারত না, ঘর নোংরা করে ফেলত, আমি পরিষ্কার করতাম। কেমো নেওয়ার পরপর বমি হত খুব, কখনও কখনও ঘরে, বিছানায় করে ফেলত – সেসবও আমিই পরিষ্কার করতাম। কখনও কোলে করে নিয়ে যেতাম বাথরুমে। জানেন, এই বয়সে একজন বৃদ্ধ স্ত্রীকে কোলে তোলার মানে কী? শরীর টানতে পারে না, মনই টানতে থাকে।
ওর চুলে তেল মাখাতাম, হাতে পায়ে মালিশ করতাম, পুরনো সিনেমা চালিয়ে দিতাম, যাতে সে কিছুটা হাসে। সে যখন ঘুমিয়ে পড়ত, আমি চুপ করে বসে থাকতাম পাশে, ওর নিঃশ্বাস গুনতাম। প্রতিটা নিঃশ্বাস যেন এক যুদ্ধজয়ের রসদ। আর আমি সেই যুদ্ধের অতন্দ্র প্রহরী। কখনও যদি একটু বেশি ব্যথা করত, চিৎকার করত আমার উপরেই – আর কেই বা ছিল ওর চিৎকার করার মত! আবার যখন ব্যথা কমলে শান্ত হত, সে আমার দিকে তাকিয়ে থাকত – কিছু বলত না, শুধু চোখে যেন একটা প্রশ্ন, ‘তুমি কেন আমাকে বাঁচিয়ে রাখছ?’
গত কয়েকমাস ও শুধু বিছানাতেই থাকত। কথা বলত না, কেবল তাকিয়ে থাকত জানালার বাইরে। আমি জানি, ও জানত — ওর আর সময় নেই। কিন্তু আমিই হয়ত ভুল করতাম। ভাবতাম, আমি বাঁচাতে পারব। আমি যেন শুধু স্বামী নই, আমি ঈশ্বর… আমি রক্ষা করব ওকে।
কাল রাতটা খুব শান্ত ছিল। হঠাৎ ঘুম ভেঙে দেখি, ও কাঁপছে। খুব কষ্ট পাচ্ছে। ওষুধ দিলাম, মাথায় হাত বুলিয়ে দিলাম। তারপর… জানি না কী হ’ল… ওর মুখটা একবার ভাল করে দেখলাম, খুব সুন্দর লাগছিল। সেই বাসররাতের কথা মনে হ’ল – সারাদিনের শেষে ক্লান্তিতে সেদিন ও ঘুমিয়ে গেছিল – ঠিক একই রকম সুন্দর লাগছিল ওকে। আর সহ্য হ’ল না। ওর কপালে চুমু খেয়ে বালিশটা তুলে নিয়ে ওর মুখের উপর রাখলাম। কিছুক্ষণ চ্যাপ্টা করে চেপে ধরলাম। ও হাত তুলেছিল, আমাকে খামচে ধরতে চেয়েছিল, কিন্তু জোর ছিল না। কয়েক সেকেন্ড… সে যেন অনন্তকাল… তারপর আর নড়ল না। বিছানায় শুয়ে রইল, একেবারে চুপচাপ। মুখে শান্তির ছাপ।
আমি অনেকক্ষণ বসে ছিলাম পাশে। জানতাম না ঠিক করেছি কি ভুল। বসে থাকতে থাকতে চোখে ঘুম লেগে গিয়েছিল। চটকা ভাঙলে ভোরের আলোয় বুঝলাম, ও চলে গিয়েছে। কিন্তু আমি তখনও জানি না, আমি কি সত্যিই মারলাম ওকে? নাকি ও এমনিই চলে গেল? ভেবে দেখলাম, আমার আর তো কিছু করার নেই। আমার বেঁচে থাকার তো আর কোন কারণ বেঁচে রইল না, রইল না বাঁচার অবলম্বন… থানায় চলে এলাম – শেষ বিচারের আশায়।”
সরেজমিনে
অরিন্দমবাবু বিনয়বাবুকে নিয়ে নিজেই গেলেন তাঁর বাড়িতে, সঙ্গে কনস্টেবল সুদীপ ও ড্রাইভার। জায়গাটা শহরেরই এক পুরনো পাড়া। একতলা বাড়ি, হলদে রঙের দেওয়াল, পুরনো কাঠের দরজা, দেওয়ালের রং, জায়গায় জায়গায় রংচটা, শ্যাওলা দেখেই বোঝা যায় দীর্ঘ কয়েক বছর বাড়ির মেরামত হয়নি। বাড়িতে ঢুকতেই একটা নিস্তব্ধতা। যেন থমকে গিয়েছে সময়। ভিতরে একটি ঘরে গিয়ে দেখা যায়, লীলা দেবী বিছানায় শুয়ে আছেন। চোখ বন্ধ, মুখে শান্তির ছাপ – যন্ত্রণার কোন চিহ্ন নেই। গলার চারপাশে কোনও দাগ নেই, শরীরে কোনও নখের আঁচড় বা ছটফট করার চিহ্ন নেই। বিছানার চাদর পরিপাটি, বালিশ যেখানে থাকার কথা ঠিক সেখানেই।
অরিন্দমবাবুর মনে হলো, লীলাদেবী যেন ঘুমন্ত। ঘরের সাজসজ্জা, ছবির ফ্রেম, বইয়ের তাকে স্ত্রীর মেডিকেলের এক গাদা ফাইল, টেবিলে বেশ কিছু ওষুধ – সব কিছু ভালোবাসার সাক্ষ্য বহন করছে। তিনি প্রশ্ন করলেন, “আপনি নিশ্চিত আপনি খুন করেছেন?”
বিনয়বাবু চুপ করে থাকলেন কিছুক্ষণ, তারপর বললেন, “হ্যাঁ, আমি বালিশ চাপা দিয়ে মেরেছি। আমি নিশ্চিত। তারপর আমি বসেছিলাম ওর পাশে, কখন যেন ঘুম এসে গেছিল – শ্রান্তি নাকি শান্তির ঘুম জানি না। ঘুম ভাঙার পর প্রথমে মনে হ’ল বালিশ চাপা দেওয়ার ঘটনাটা স্বপ্ন। কিন্তু দেখি ওকে ডাকলেও আর উঠছে না, মরে গিয়েছে। আমিই তো মারলাম, তাই না, বালিশ চাপা দিয়ে…?”
ময়নাতদন্ত
নিয়মমাফিক ডেডবডি নিয়ে যাওয়া হয় মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগে। রিপোর্ট আসে পরদিন। অরিন্দমবাবু নিজেই রিপোর্ট হাতে নিয়ে দ্রুত চোখ বোলাতে থাকেন। তদন্ত রিপোর্টে শ্বাসরোধ করে হত্যা বা বাহ্যিক চাপের কোনও প্রমাণ নেই, নেই কোনও আঘাতের চিহ্নও। মৃত্যুর কারণ হিসেবে হৃৎপিণ্ডজনিত কারণে স্বাভাবিক মৃত্যু উল্লেখ করা হয়েছ।
রিপোর্ট দেখে থমকে যান অফিসার-ইন-চার্জ অরিন্দম ঘোষ। নিজের চোখকেও বিশ্বাস করতে পারেন না। তিনি এত বছর চাকরি করেছেন, এত খুন দেখেছেন, মিথ্যা স্বীকারোক্তিও দেখেছেন — কিন্তু এমন সত্যিকারের আত্মসমর্পণ আর এমন ধোঁয়াশা কোনদিন দেখেননি। বৃদ্ধকে বড় অসহায় মনে হয় তাঁর! রিপোর্ট পেয়ে নিজেই যান বৃদ্ধের কাছে, বলেন, “রিপোর্ট বলছে, আপনার স্ত্রী স্বাভাবিকভাবেই মারা গেছেন। আপনি কোনও খুন করেননি। আপনি হয়ত স্বপ্নই দেখেছিলেন…”
বিনয়বাবু বড়বাবুর কথা থামিয়ে বলেন, “আমি স্পষ্ট মনে করতে পারছি, আমি ওর মুখে বালিশ চাপা দিয়েছিলাম। আমার হাত একটুও কাঁপেনি। সকালে স্বপ্ন মনে হ’ল ঠিকই, কিন্তু আমি… নইল কী হ’ল, ও মরে গেল কী করে? ওর তো মরে যাওয়ার কথা নয়। ওকে তো আমি প্রাণ দিয়ে সেবা করছিলাম। তবে… তবে ও কী আমার মনের কথা বুঝতে পেরেছিল?”
অন্তর্দ্বন্দ্ব
সপ্তাহ কয়েক কেটে গেছে। বিনয়বাবু রোজ বিকেলে গিয়ে চুপচাপ থানার বেঞ্চে বসে থাকেন। কখনও কোন অভিযোগ করতে আসেন না, শুধু বসে থাকেন। কনস্টেবল সুদীপ, সিভিক পুলিশ, ড্রাইভাররা অভ্যস্ত হয়ে গেছে। তাদের গুলতানির বিষয় হয় বিনয়বাবু। কেউ বলে, “মালটা খুন করতে চেয়েছিল, পারেনি…” কেউ আবার বলে, “বুড়ো খুব সেয়ানা… সত্যিই মেরেছে… ওষুধের কিছু হেরফের করে দিয়েছে হয়ত – পোস্ট মর্টেমে তাই ধরা পড়েনি কিছু।”
অরিন্দমবাবুও প্রতিদিনই লক্ষ্য করেন বৃদ্ধকে, কিন্তু যেন দেখেননি এমন ভান করে থাকেন। ভেবেছিলেন, দিন কয়েক পরে হয়ত বৃদ্ধ আর আসবেন না। কিন্তু কয়েক সপ্তাহ রোজ এইরকম হতে দেখে একদিন তিনি গিয়ে বিনয়বাবুর পাশে গিয়ে বসলেন। বিনীতভাবে বললেন, “আপনি রোজ এভাবে এসে বসে থাকেন কেন? কেস তো ক্লোজড…”
বিনয়বাবু নিরুত্তর।
“বাড়ি যান, এবার একটু ভাল করে বাঁচার চেষ্টা করুন, পারলে কোথাও ঘুরে আসুন…”
বিনয়বাবু নিশ্চুপ।
“…আর আপনি যদি চান, আমি কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করে দিতে পারি। মানসিক চাপ অনেক সময় বিভ্রম তৈরি করে।”
যেন পাথরের সঙ্গে কথা বলছেন! কিছুক্ষণ বৃদ্ধের পাশে চুপচাপ বসে থেকে ওনাকে একা ছেড়ে দিয়ে অরিন্দমবাবু ফিরে যান নিজের ডেস্কে। কী যেন মনে হতে ডেস্কে বসে রিপোর্টগুলো দেখেন আবার। চোখ বন্ধ করে পুরো ঘটনাটি ভাবতে থাকেন – চোখের সামনে ঘোরে লীলা দেবীর মুখ — শান্ত, নির্মল। তাঁর গলায় কোনও দাগ ছিল না, কিন্তু বিনয়বাবুর চোখে ছিল অপরাধের ছাপ – অপরাধীর অন্তর্দ্বন্দ্ব। এখনও সেই অপরাধবোধ অপরাধীকে গ্রাস করে আছে। তাঁর হঠাৎ মনে পড়ে, মৃতার ডান হাতের তর্জনীর নখ একটু ভাঙা ছিল। ফরেনসিক দেখবে বলে তখন গা করেননি এ বিষয়ে। কথাটা মনে পড়তেই দ্রুত ফোন হাতে ডায়াল করেন ফরেনসিক ডাক্তারকে।
“হ্যালো, আমি ওসি অরিন্দম ঘোষ বলছি।”
“হ্যাঁ, হ্যাঁ বলুন।”
“লীলা চট্টোপাধ্যায়ের কেসটা…”
“সেই ক্যান্সার পেশেন্ট তো?”
“হ্যাঁ হ্যাঁ ওনার বিষয়েই। আচ্ছা, ওনার আঙুলের একটা নখ ভাঙা ছিল। রিপোর্টে সে নিয়ে কিছু লেখা নেই।”
“ওটা তেমন কিছু নয়। আসলে, দীর্ঘদিন ক্যান্সারে ভুগলে, কেমো, রেডিয়েশনের সাইড এফেক্টে নখ এমনিও ভেঙ্গে যায়…”
“কাউকে খামচে ধরতে গেলেও তো ভাঙতে পারে!”
“হ্যাঁ তা পারে, তবে কনক্লুসিভ কিছু বলা যায় না এটুকু দিয়ে। বুঝতেই পারছেন, অহেতুক কেস কমপ্লেক্স করে কী হবে!”
“আচ্ছা, ধন্যবাদ।”
ফোন নামিয়ে রেখে অরিন্দমবাবু জানলার বাইরে তাকান, বৃদ্ধ তখনও বসে একই ভাবে। সন্ধে নেমে আসছে। এখন এমন এক সময় যখন না-দিন, না-রাত্রি – ঠিক এই মৃত্যুরহস্যের মতোই অনির্ণেয়।
লেখক পরিচিতি : ইচ্ছেমৃত্যু
জন্ম বর্ধমানের বর্ধিষ্ণু গ্রামে। পেশায় নরম তারের কারিগর আর নেশায় - রীতিমত নেশাড়ু, কী যে নেই তাতে - টুকটাক পড়াশোনা, ইচ্ছে হলে লেখা - সে কবিতা, গল্প, রম্যরচনা, নিবন্ধ যা কিছু হতে পারে, ছবি তোলা, বাগান করা এবং ইত্যাদি। তবে সব পরিচয় এসে শেষ হয় সৃষ্টিতে - পাঠক যেভাবে চিনবেন চিনে নেবেন।