লেখক : অলভ্য ঘোষ
সকলে তাকে পাগল মনে করত। টিচার্স রুমে বসে কখনো গপ্পো করতেন না। ক্লাসে কখনো দেরি করে আসতেন না। দেরি করে এলে নিজে কান ধরে ছাত্রদের সামনে উঠবস দিতেন। ক্ষমা চাইতেন, তার পর পড়াতেন। আমরা দেরি করে এলেও যেহেতু এই বিধান তাই বিধানদাতা নিজের বেলায়ও তার অন্যথা করতেন না। টিফিন পিরিয়ডেও ছাত্র পড়াতেন। ধুতি পাঞ্জাবি ছাড়া অন্য পোশাকে কখনো দেখিনি ওঁকে। স্যারের একটা ব্রহ্ম অস্ত্র ছিল “বগা”। ডান হাতটাকে সাপের ফনার ছোবল মারার মত করে বগা দেখাতেন। যাকে বগা দেখাতেন তার পিঠে পড়তো কিল। আমার বাংলা বানানের জন্য কিল পড়তো পিঠে।
আমি সেকেন্ড হয়েছিলাম ক্লাস টুতে একবারই। কখনো ফাস্ট হইনি। ফেলও করেছি দুই বছর, ক্লাস থ্রি আর সেভেন। যদিও ফেল করার বড় কারণ ছিল শিক্ষকের অভাব, গাইডেন্সের অভাব। সেসব অন্য সময় বলা যাবে। আমি স্যারদের কাছে ছিলাম খুব লাজুক, মুখচোরা। ফার্স্ট বেঞ্চ এবং লাস্ট বেঞ্চ উভয় বেঞ্চেই আমাকে দেখা যেত ক্লাস অনুসারে। অঙ্ক,সংস্কৃত,ব্যাকরণ পরবর্তী কালে যোজ্যতা বা কেমিস্ট্রি ক্লাসে আমি আড়াল খুঁজতাম। আমার অংকের খাতা ভরা থাকতো হিউম্যান ফিগারে।মানুষের শরীরের ভাস্কর্য আমায় টানতো।অংক স্যার শচীনবাবুর টিয়া পাখির মত নাক কত যে এঁকেছি। সংস্কৃত ক্লাসে একবার ধরা পড়লাম বলরামবাবুর ছবি এঁকে তার টিকি এঁকেছি টিকিতে গাঁদা ফুল।পাশের ছেলেটা সব ফাঁস করে দিল। ঢ্যাঙা চেহারা আমার ক্লাস সেভেনেই; বেঁটে খাটো স্যারকে টপকে গেছি। স্যার টান দিলেন হাত ধরে, আমি শক্ত করে বেঞ্চ ধরে রইলাম। কিছুতেই নাড়াতে পারলেন না। না পেরে ভাঙা টেবিলের পায়া দিয়ে দিলেন উত্তম মধ্যম। এহেন আমি ভালো ছেলেদের মধ্যেই গণ্য হতাম স্কুলে। তার কতগুলো কারণ ছিল ছবি আঁকতে পারতাম। বৃষ্টির দিনে স্যারদের মুগ্ধ করে দিতাম আবৃত্তি করে।তাৎক্ষণিক বক্তৃতায় ইলেভেন টুয়েলভ এর দাদাদেরও কাত করে দিতাম।চুপচাপ থাকা আমি ছেলেটি ছোট থেকেই অন্যায় দেখলে অগ্নি শর্মা। স্কুলের সবচেয়ে বাজে ছেলেটাকে একদিন কোমরের বেল্ট খুলে পাট পাট করে দিয়ে ছিলাম। আমাকে আর সে ঘাঁটাত না। ফুটবলের মাঠে মারামারি করতে আমায় ভাড়া করা হত। আমার গাঁটছিল সুবিখ্যাত। অনেকে বলত পা’টা কি লোহা দিয়ে তৈরি!
এহেন আমাকে ছাত্রদের মধ্যে সবচেয়ে উচ্চ স্থানে বসিয়ে দিলেন আমার বাংলা স্যার। সমরেশ বাবু! যার পদবী আমি আজও জানিনা। তিনি মৃণাল সেন,সত্যজিৎ রায়ের মত পরিচালকদের কয়েকটি বাংলা সিনেমার পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করেছেন ।ক্লাস নাইন, আমি সেদিন স্কুলে যাইনি। হাফ ইয়ারলি পরীক্ষার খাতা দেখিয়েছেন স্যার। জানি না এখন দেখানো হয় কিনা। আমাদের দেখানো হত ভুলগুলো শুধরে নেবার জন্য। বাংলায় সর্বাধিক নম্বর আমার। সেটা বড় কথা নয়। পরের দিন স্কুলে যেতেই ফার্স্ট বয় থেকে সেকেন্ড বয় সবাই আমার ন্যাওটা হয়ে গেল।
-কি লিখেছিলি স্যার এতো প্রশংসা করল!
অগত্যা স্যার আদেশ করলেন ক্লাসে আমার খাতাই হবে মাধ্যমিকের প্রশ্ন উত্তরের খাতা। সবাই সেটাই ফলো করবে। আজ ৪৮ ঘণ্টায় ১ লক্ষ লোক ফলো করছে আমায় অনলাইনে। সেদিন ছিল এর শুরু। স্যার ডেকে আলাদা করে বলেছিলেন, শোন, তুই সঠিক বানান লিখতে পারলে শুধু আমাদের স্কুল নয় এই দুনিয়ার মাস্টারি করবি।
চোখে জল এসে যাচ্ছে।সে যোগ্যতা আমার আজও হয়নি স্যার। আমার এক দাদাকে পোস্টকার্ডে আন্দামানে চিঠি লিখেছিলাম খুব ছোটবেলায়। চিঠির প্রতিউত্তরে সে বলেছিল এটা আমার লেখা হতেই পারে না।
স্যার, তাই আপনিই ছিলেন আমার লেখার প্রথম প্রশংসক।
মাধ্যমিক কর্মশিক্ষা পরীক্ষার দিন কর্মশিক্ষার তাৎপর্য জানতে চাইলেন পরীক্ষক। দীর্ঘ বক্তৃতা শুরু করলাম। মাও সেতুং, শ্রমের মর্যাদা এসব টেনে। পরীক্ষক হাঁ। শেষমেষ বললেন- তুমি কি ফাস্ট বয়?
আমি নির্দ্বিধায় বললাম, না লাস্ট বয়।
তারা নিশ্চয়ই ভাবছিলেন লাস্ট বয়ের যদি এই নমুনা হয় ফাস্ট বয় কিনা জিনিস। এই কনফিডেন্সটা আপনার দেওয়া স্যার।আমি সারা জীবন আপনার মত পাগল হতে চেষ্টা করছি। পাগল না হলে যে মানুষ হতে পারব না স্যার।
আমি যখন ছাত্র তখন বাম জামানা একথা বলার অবকাশ থাকেনা। আমাদের কয়েকজন নতুন স্যার আসলেন স্কুলে। এরা বিশেষত মেদিনীপুর থেকে এসেছিলেন, তাদের ভাষায় মেদিনীপুরের প্রভাব ছিল সুস্পষ্ট। আরও একটি প্রভাব ক্রমে ক্রমে সুস্পষ্ট হয়ে উঠতে লাগল সেটি হল স্কুলটা তলায় তলায় একটি রাজনৈতিক আখড়া হয়ে উঠতে চাইল। সিনিয়র স্যাররা কেউই চাইছিলেন না স্কুলে কোনো ছাত্র ইউনিয়ন গড়ে উঠুক। আর জুনিয়র স্যাররা অলরেডি একটি বামপন্থী ছাত্র সংগঠনের কর্মী।সিনিয়র জুনিয়র শিক্ষকদের মধ্যে স্কুলের ভিতর একটি মতানৈক্য তৈরি হয়েছিল। চাঁদা তুলতে ঢুকে পড়ছিল বাইরের ছেলেরা।
এই সময় স্থানীয় রাজনৈতিক একটি বিক্ষোভ সমাবেশ সংগঠিত হয়েছিল আমাদের স্কুল গেটে ঝন্টুদা নামে এক বামপন্থী নেতার নেতৃত্বে। মাদুর চাটাই পেতে তাদের মহিলা কর্মীরা দরজায় বসে পড়েছেন। ছাত্র শিক্ষক কেউই স্কুলে ঢুকতে পারছেন না। হেড স্যার সামনের চায়ের দোকানে চা খাচ্ছেন আর মাইকে শাসানি শুনছেন- আপনার যদি কলিজায় জোর থাকে স্কুলে ঢুকে দেখান।
সমরেশ বাবু হেড স্যার কে জিজ্ঞেস করলেন, বিমল বাবু কি করব?
বিমল বাবু বললেন, বাড়ি চলে যান।
সমরেশ বাবু বললেন, কাশীপুর থেকে ঠেঙিয়ে এত দূর এসেছি স্কুলের খাতায় সই না করে তো আমি যাব না।
বিমল বাবু বললেন, দেখছেন তো স্কুলে ঢুকতে দিচ্ছে না!
সমরেশবাবু ধুতিটা মালকোঁচা দিয়ে বেঁধে পাঁচিল টপকে স্কুলে ঢুকে স্কুলের খাতায় সই করে ছিলেন।
তখন টিচার্স রুমের উল্টোদিকেই ছিল আমাদের ক্লাস রুম। প্রথম ক্লাসটা করে সমরেশ বাবু এটেনডেন্স খাতা রেখে দ্বিতীয় ক্লাসের জন্য চক ডাস্টার নিয়ে বেরোতে যাবেন, গৌতমবাবু যিনি কিনা কলকাতা দূরদর্শনে খবর পড়তেন, গম্ভীর কণ্ঠস্বর, উত্তমকুমার উত্তমকুমার দেখতে। যার হাটার স্টাইলটা এত স্মার্ট আমার মনে হত সভ্য ভদ্র লোকেরা ওভাবেই হাঁটে! শিরদাঁড়া সিধে রেখে এমন ভাবে পদচারণ যেন বসুন্ধরারও আঘাত না লাগে। আমি স্যারের এই হাঁটাটা আজও হাঁটার চেষ্টা করি ভদ্রস্ত কোথাও গিয়ে পড়লে। যাই হোক এই গৌতমবাবু টিচার্স রুমে বসে গল্প করছিলেন অন্য একজন স্যারের সাথে।সমরেশ বাবু হন্তদন্ত হয়ে প্রথম ক্লাস করে এসে দ্বিতীয় ক্লাস করতে যাবার সময় গৌতম বাবুর সাথে কি একটা কথা কাটাকাটি হয়।আমি ক্লাস রুম থেকে দেখতে পাচ্ছি স্যার এটেনডেন্স খাতাটা ছুঁড়ে মারলেন গৌতম বাবুকে।তীব্র গোলযোগ বেঁধে গেল রেগে গেলে সমরেশ বাবুকে আটকানো ছিল মুশকিল।ছাত্রদের সামনে শিক্ষকরা মারামারি করছে এতো শোভনীয় নয়।হেড স্যার বিমল কৃষ্ণ রায় যার মুখের গঠনটি ছিল নেতাজী সুভাষ-চন্দ্র বোসের মত; তিনি নিজের রুম থেকে ছুটে এসে টিচার্স রুমের দরজাটা ভেতর থেকে বন্ধ করে সমরেশ বাবু কে ঠাণ্ডা করতে লাগলেন।স্যারদের গোলযোগের কারণ তো ছাত্ররা জানতে পারে না।কানা ভুস শুনে ছিলাম গৌতম বাবু তার চাইতে বয়স জ্যেষ্ঠ সমরেশ বাবু কে নিয়ে কোনো রসিকতা করেছিলেন।
সমরেশ বাবু তাতে চটে যায়।
-আপনাদের লজ্জা করেনা মাইনে নিচ্ছেন আর টিচার্স রুমে গল্প করে কাটাচ্ছেন।
আর একটা ঘটনা; দক্ষিণ কলকাতায় যারা থাকেন তারা প্রদীপ সিনেমা সকলেই চেনেন।এখানে বি গ্রেড সিনেমা দেখানো হত।আর পোস্টারে যত আলকাতরা পড়তো ততো হতো ভিড়।আমাদের স্কুলের একটি ছেলে সে আবার আমার ক্লাসমেট ও পাড়ার বন্ধুও বটে;প্রায় দিন দুটো চারটে বই নিয়ে যেত আর বই গুলো আমাকে গচিয়ে এটেনডেন্স দিয়ে স্কুলের গ্রিল হীন জানালা; দেয়াল টপকে পলাতক হতো সিনেমা দেখতে।এক দিন হলো কি সমরেশ বাবু তাকে তাকে ছিলেন।যেই না ক্লাসের ফাঁকে জানালা টা টপকাতে যাবে ছেলেটি স্যার পড়া থামিয়ে শিকারি বাঘের মত তার পেছনে ধাওয়া করলেন।সারা স্কুলে হই হই কাণ্ড।আমরা ক্লাস ফেলে দু তলার বারান্দা দিয়ে ঝুঁকে দেখলাম আমাদের বন্ধু বুড়ো ছুটছে আর তার পেছনে স্যারও ছুটছে এক সময় তাকে ধরে ফেলে উত্তম মধ্যম মার দিতে লাগলো।স্যাররা সকলে মিলেও সমরেশ বাবুকে আটকাতে পারছেন না এত রেগে গেছেন।
টিফিনের সময় স্যার একেবারে অন্য মানুষ; এসে বুড়োর মাথায় হাত বোলালেন ;
-বাবা মা কত আশা নিয়ে স্কুলে পাঠায় ;একটু মানুষ হবার চেষ্টা করবিনা বাবা।
বুড়কে পাশের মিষ্টির দোকানে নিয়ে গেলেন স্যার।আর বুড়ো পেট ভরে মিষ্টি খেয়ে এসে একগাল হেসে বলে ছিল।
-স্যার আমাকে মেরে হাতের সুখ করে নিয়েছে।আর আমি মিষ্টি খেয়ে সুখ করে নিয়েছি ভাই।স্যারের যা খসিয়েছি না সারা জীবন মনে রাখবে।
বুড়োর নাকটা তখনো স্যারের কাছে মার খেয়ে ফোলা ছিল।
আমার স্যার সমরেশ বাবুর পদবী বন্দ্যোপাধ্যায় এই গ্রুপের সদস্যদের মাধ্যমে জানতে পারলাম।আরও জানতে পারলাম তিনি শেষ জীবনে কাশীপুর থেকে দিল্লী নিবাসী এক মাত্র ছেলের কাছে গিয়ে উঠেছিলেন এবং ওখানেই প্রয়াত হয়েছেন। আসলে আর সকল স্বার্থপর ছাত্রের মত স্কুল জীবনের পর স্যারের সাথে আর আমার কোনো যোগাযোগ ছিল না।বহু বছর বাদে একবারই কুতঘাট বাস স্ট্যান্ডে স্যারের সাথে দেখা হয়।ঠক করে একটা প্রণাম সেরে নিই।
-স্যার চিনতে পারছেন তো।
আমার মত নগণ্য ছাত্র দের মনে রাখার দায়িত্ব স্যারের নেই।কম ছাত্র তিনি পড়াননি।
বলেছিলেন;
– কোন ব্যাচ তুমি?
আমি আমার ব্যাচ নাম্বার বলতে চাইনি সেখানে অনেক মুখের ভিড়।আমি সিগনিফিকেন্ট এমন একটা কিছু বলতে চেয়েছিলাম যাতে আর সকলের থেকে স্যারকে আমাকে আলাদা ভাবে তক্ষুনি মনে করিয়ে দেয়।
আমি বলেছিলাম;
-আমি সেই ছেলেটি স্যার যে ইন্দ্রজিৎ হতে চেয়েছিল।
স্যার চোখ কপালে তুলে সেই পরিচিত বিদ্রূপাত্মক হাসিটি মুখে ধরে বহু বছর পর আবার বললেন;
-পার্থ ঘোষ খায় পচা মোষ।কিন্তু তুইতো বেটা খুব রোগা ছিলি। চেহারাটা এমন বানালি কি করে।
না স্যার ভোলেননি।
ইন্দ্রজিৎ ব্যাপারটা হলো নবম না দশম শ্রেণীতে মেঘনাদবধ কাব্যের কিছুটা অংশ আমাদের পাঠ্য ছিল আর স্যার এতো ডিটেলে এটি বুঝিয়ে ছিল যে এমএ ক্লাসের ছাত্রদেরও ওভাবে বোঝানো হয় কিনা আমার সন্দেহ আছে। বীর ইন্দ্রজিৎ!পিতৃব্য বিভীষণ গোপন পথে যজ্ঞাগারে লক্ষণ কে নিয়ে এসেছেন মেঘনাদ কে হত্যা করার জন্য।আমার দৃষ্টিতে অত্যন্ত ঘৃণ্য হয়ে উঠেছিল বিভীষণ ও লক্ষণ।রামানন্দ সাগর লোকটা তো ঢপ-বাজ।রাম লক্ষণ কে হিরো করে দেখায়।কর্ণ কিংবা ইন্দ্রজিৎ এর মত ট্র্যাজিক চরিত্র আমার খুব প্রিয়।আমার হিরো ইন্দ্রজিৎ। বিশেষত করুণ-রসে নিমজ্জিত হয়ে আবেগ আপ্লুত ভাবে আমার বাংলা প্রশ্ন উত্তরের খাতার ওপরের মলাটে আমি লিখেই ফেলেছিলাম আমি ইন্দ্রজিৎ।লেখাটি স্যারের দৃষ্টি এড়ায়-নি।তিনি তার তলায় লিখে দিয়েছিলেন।
– You’ll be killed.
তুমি মারা পরবে বা তোমাকে হত্যা করা হবে।সেই সময় আদেও এই উত্তরের তাৎপর্য আমি বুঝিনি।ভেবেছিলাম মলাটে ভুলভাল লেখায় স্যার বগা দেখাচ্ছেন বা মারবেন বলছেন।আজ এই উত্তরের তাৎপর্য আমি বুঝি।তুমি সর্বশক্তিমান প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধাচরণ করলে প্রয়োজনে ছলে বলে কৌশলে প্রতিষ্ঠান তোমাকে এলিমিনেট করবে।
-পার্থ ঘোষ খায় পচা মোষ।ইন্দ্রজিৎ হতে চায়।ওরে বেটা ডাক্তার,উকিল,ইঞ্জিনিয়ার,আমার মত ফেকলু মাস্টার,রাম,লক্ষণ এসব হওয়া অতি সহজ। ইন্দ্রজিৎ হওয়া মুখের কথা নয়।
আমি শুনতে পাচ্ছি; সমস্ত ক্লাসরুম এখনো যেন আমাকে নিয়ে হো হো করে হাসছে। আর অপমানে,লজ্জায়, ক্ষবে দুঃখে আমার ভেতরটা যেনও ফেটে যাচ্ছে।এখন বুঝি ওটাই ছিল স্যারের টেকনিক; আগুণ টা জ্বেলে দেবার।
না স্যার আমি মাইকেল মধুসূদন দত্তের ইন্দ্রজিৎ তো দূর; বাদল সরকার এর ইন্দ্রজিৎও হতে পারিনি। আবার কেউ বলে বসবেন স্যারের কথা বলছেন নাকি নিজের গুণগান গাইছেন। তা গ্যাসের আগুন না হলে ; আগুনের তুলনায় ধোঁয়া সব সময় বেশিই হয়। স্মৃতির সরণি বেয়ে হাঁটতে গেলে নিজেকে অশরীরী ভাবা যায় না।
লেখক পরিচিতি : অলভ্য ঘোষ
শ্রী রবি ঘোষ ও কমলা ঘোষের তিন পুত্রের মধ্যে মধ্যম পুত্র অলভ্য ঘোষ ১৯৭৬ সালের ১০ জুন কলকাতার টালিগঞ্জে জন্ম গ্রহণ করেন ; ছোট থেকেই একরোখা অলভ্য প্রথাগত শিক্ষা সমাজ ব্যবস্থার প্রতি অনাস্থাশীল-প্রতিবাদী । শিল্প কলা তার উপজীব্য হলেও ব্যতিক্রমী এই মানুষটি নিজেকে একজন সৈনিক বলে মনে করেন যার অস্ত্র কালি মাটি কলম । দেশে বিদেশের পত্র পত্রিকায় তার কাব্য ,ছোটগল্প ,প্রবন্ধ সসম্মানে প্রকাশিত হবার পর তিনি স্বাধীন চলচ্চিত্র নির্মাণে আত্মমগ্ন ।