আত্ম ভাস্কর্য
লেখক : শৌনক ঠাকুর
শূন্যতার শূন্যতম গর্ভে
আমি এক জন্মহীন ভাস্কর
নিজের ছায়াকেই খনন করে চলি
গাঁইতি আর কোদাল দিয়ে।
রক্ত ঝরে না
জেগে ওঠে শব্দহীন এক প্রত্নপ্রশ্ন
যার ব্যুৎপত্তি আজও অনাম্না।
ছেনি নয়
ব্যবহার করি বিস্মৃতির আলোকছায়া
হাতুড়ি নয়…
শূন্যতার শূন্যতম গর্ভে
আমি এক জন্মহীন ভাস্কর
নিজের ছায়াকেই খনন করে চলি
গাঁইতি আর কোদাল দিয়ে।
রক্ত ঝরে না
জেগে ওঠে শব্দহীন এক প্রত্নপ্রশ্ন
যার ব্যুৎপত্তি আজও অনাম্না।
ছেনি নয়
ব্যবহার করি বিস্মৃতির আলোকছায়া
হাতুড়ি নয়…
দমক হাওয়া চমক দিয়ে ছুটে বেড়ায় কাঁপিয়ে ভূমি-
গাছে পাতায় ঘরের চালে ডাক দিয়ে যায়
‘আমার তুমি’।
কানের পাশে ফিসফিসানি লোকের মুখে কানাকানি-
বাসের স্টপে পাড়ায় পাড়ায় রোদে ছায়ায়
জানাজানি-
নদীর বাঁকে আটকে থাকে সোহাগ ভরে…
হে মহান!
তব বান্দা অগণিত,
তবু আমার মত অপরাধী নাই।
ক্ষমা চাই শুধু, তড়িৎ নাহি চাই।
এ জগতে নিকৃষ্ট এক জীব তোমার।
তবু করনি কভু তব দয়া হতে বাহার।
শুনিয়াছি, তুমি থাকো অতি নিকটে,
গোনাহগার প্রাণের …
ভোর বেলার ঐ শুনে
মুগ্ধ হয়ে রই
পৃথিবীর সবচেয়ে মধুর ধ্বনি
আজানকে আমি কই
ঘুমের চেয়ে নামাজ উত্তম
জেনে রেখ ভাই
ঘুম থেকে উঠে সবাই
মসজিদে যাই
চলো মসজিদে যাই
পাচঁ ওয়াক্ত আজানেই শুনি
আল্লাহ মহান…
ক
আমার জন্ম হস্তিনাপুর
এবং আমি এক নীচ ভিখারি
উপোসী কুকুর।
দেয় যদি কেউ টুকরো মাংস
আমি চুপ হারামখোর-
চোখের সামনে দেখি ধ্বংস!
খ
যখন তুমি অর্ধোলঙ্গ রজঃস্বলা
কামোন্মত্ত দুঃশাসন
বেশ্যা, বেশ্যা! আয়, ঊরুতে বোস্
উল্লসিত …
ধোঁয়াহীন চিতার সারি
পোড়া কাঠের স্তূপ,
মানুষ আর জঞ্জালে পেটভরা কূপ।
আগুনের শিখা থেকে কোনক্রমে বেঁচে
কিছু স্নেহের হাতে গড়া গৃহস্থালী,
স্বার্থপরের আঁখি তাকিয়ে পোড়া বাড়ির পানে।
সতেজ দেউল হারিয়েছে প্রাণ কার হাতের টানে?
দু’দিন আগেও …
স্বপ্নরা বিনা টিকিটে আসে শিয়ালদা লোকালে
অসহায় টিটিরা ছোটে এপাশ ওপাশ
অনেক অনেক পরে উত্তরপুরুষের হাতে
ছিঁড়ে যাবে গতানুগতিকতার নাগপাশ।
বিনিমাসি তোমার শাড়ির আ়চলে মুছে নেয়
নন্দিতা ঘাম, হামেশাই, স্বপ্নরা মুচকি হাসে
পোটোম্যাক টেমসের ভাসমান নৌকায় …
সভ্যতার জন্ম দিতে-দিতে-
নারী…
আলোকময় উঠান-
ভরেছে অন্ধকার,
চৌচির হতে হতে –
হাতে নিয়েছে ভার,
তবু নিঃস্ব,
সকল পারাবার।
ভূলুণ্ঠিত… বিবস্ত্র…
শুষ্কতা মেখেছে…
ইন্ধন এনেছে অহরহ,
রাত্রির কালো মোছাতে মোছাতে –
নিংড়ে দিয়েছে সহস্র জ্বালা,
তবুও …
প্রত্যেকটি দিন রাত এখন এক দুঃস্বপ্নে পরিণত
মাঝে মধ্যে মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে পুরনো ক্ষত।
সামনে আছে এক অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ
আর খোলা যাচ্ছে না বেদনাবিষাদের জট
নেই বর্তমানের ঠিকানা
জীবনের সাথে যুদ্ধ চলছে একটানা
জীবনে সুখ …
ধূসর সময় বেয়ে সময় নিজেই সুবাস ছড়ায়
এ দ্বীপে ও দ্বীপে।
বনভূমি থেকে দুখ পাখি কাকভোর আকাশ ভিজিয়ে আঁধার
দরিয়ায় তালাশ করে তৃষ্ণার্ত
কোন সে প্রেমিকাকে?
আমি তো তোফা আছি মসিঢালা
হৃদয়কন্দরে একা একা
প্রলয়বাণ সামলে…
যাদের রক্তে সাতচল্লিশে,
স্বাধীন হল এ দেশ,
তারা কি জানত, এই পরিণতি,
দলাদলি বিদ্বেষ!
নানান দলের নানান পতাকা,
তেরঙ্গার জন্য দু’দিন!
ছাব্বিশে আর পনেরই
জাতীয় পতাকা উড্ডীন।
তারপর সারাবছর জুড়ে
কাদা ছোঁড়াছুড়ি, দোষা-দোষী।
সাদা কাপড়ে, হাত …
আমি তাকে ভালবেসেছিলাম,
সাহস করে বলিনি কথা।
হয়ত সে বুঝেছিল কিছু,
তবুও ছিল চোখে ব্যথা।
প্রতিটা দিনে খুঁজেছি তাকে,
নীরবে গেছি তার পাশ দিয়ে।
ভাবতাম একদিন বলব বুকে,
ভয় পেতাম — সে ফিরবে গিয়ে।
হয়ত সে হেসেছিল …