মনস্টার

লেখক : সুস্মিতা সরকার

“হুমম্, ইটস্ এ ডেভিলস কার্ড উইথ হার্ট হোল্ডিং এ ম্যান। ইটস্ কলিঙ্ ফর এ ম্যান চার্মিঙ বাট উইল বী লাইক এ ডেভিলস ক্যারেক্টার। দিস রিলেশনশিপ উইল গীভ ইউ বোথ জয়েস্ এন্ড সরোস্। দ্য ম্যান হ্যাজ্ হিজ্ …

রূপকথার বইমেলা

লেখক : প্রীতি চক্রবর্তী

ছোট্ট রূপকথা আজ ভীষণ খুশি। এই প্রথমবার সে বইমেলায় এসেছে তার বাবার হাত ধরে। আর পাঁচটা বাচ্চার মতো সে স্বাভাবিক নয়। এই অল্প বয়সেই নাকের উপর ভার জমেছে মোটা কালো ফ্রেমের চশমা আর হাতে ওয়াকিং স্টিক। …

ফরওয়ার্ড

লেখক : অভীক সিংহ

“দুত্তোর, সক্কাল সক্কাল জ্বালিয়ে দিল একেবারে।” বলে বিরক্তির সাথে সান্যালদা মোবাইল ফোনটা টেবিলে খবরের কাগজের উপরে একরকম ছুঁড়েই ফেলল।
“কী হয়েছে সান্যালদা?” আমি জিজ্ঞাসা করলাম, “ভর সক্কালবেলা এত মাথা গরম কেন?”
সান্যালদা কপালের দু’পাশে রগদুটো বুড়ো …

অজানাপুরের অজানা কথা

লেখক : ভাস্কর সিন্হা

অজানাপুর পশ্চিমবঙ্গের এক ছোট তবে বেশ প্রাণোচ্ছল গঞ্জ । ছোট হলেও ক্ষুদ্রবৎ ভারতবর্ষের বৈসাদৃশ্য এখানে খুব প্রকাশমান। এর উচ্ছল শ্যামলিমা ধীরে ধীরে পরিবেশ দূষণের প্রকোপে পড়ে বিলুপ্তির পথে। দীর্ঘ বটের ছায়ায়, রাস্তায়, খোলা বাজারে, পাকা বাড়িতে, …

একটা গোটা আকাশ

লেখক : গৌতম ঘোষ-দস্তিদার

পকেটে হাত ঢুকিয়ে কামসূত্রের প্যাকেটটার কলার চেপে ধরে কোনোমতে ওটাকে টেনে হিঁচড়ে বার করল উদ্দালক। প্রাণপণ দলামোচা কোরে সেটাকে যতদূর ছুঁড়ে ফেলা যায়, ফেলে দিল আদিগঙ্গার জলে। একটানা কিছুক্ষণ অপলক চেয়ে রইল এক কালের ওই একটা …

গন্ধ

লেখক : মধুমিতা ঘোষ

‘হরিণখুড়ি ধানের গন্ধ পাও ঠাকুমা?’

শোভাদেবী বড় করে নিশ্বাস নিয়ে বললেন, ‘না কই? আর সে ধানের গন্ধ তোকে বলে দিতে হবে না। ঘরে থাকলে আপনিই টের পাব।’

বাপ্পাই ওরফে ডঃ সায়ক মিত্র শোভাদেবীর চোখের সামনে মেলে …

অনুরঞ্জিত

লেখক : ইন্দ্রাণী তুলি

সবুজে সবুজ ‘স্নেহনীড়’এ পা রেখেই আপ্লুত হয়ে গেলেন বাসন্তী রুদ্র। তাঁর নজর কাড়লো রঙ-বিরঙ্গী ফুলে ভরা বাগানটা। শীতের রোদ পোয়াতে সেখানে জমায়েত আশ্রমের আবাসিকবৃন্দ। পার্কের সীমানা ঘেরা ঝাঁপালো বৃক্ষরাজির ফাঁকে-ফাঁকে উঁকি দিচ্ছে দুধসাদা একতলা কটেজের সারি।

স্বপ্ন

লেখক : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী

দ্বারটি সবসময় বন্ধ থাকত বোস বাড়ির। তিনতলা বাড়ি। লাল রঙের। জানলা দরজা সব সবুজ রঙের। তাতে বাড়িটার আকর্ষণ যেন আরও বেড়েছে। লোহার মোটা মোটা গরাদ। কোনও দুর্গের প্রবেশ পথের মতো দু’পাশে মোটা দেওয়াল, একটু উঁচুতে জানলা। …

নৈব নৈব চ

লেখক : এস. আজাদ (সেখ মহঃ সানি আজাদ)

(এক)

বাইরে একটানা হিম ঝরছে। রাস্তা ড্রেন ছাদ গাছ সবাই বরফের শ্বেত শুভ্র সাজে সেজেছে ও মেতে উঠেছে। সেই রাগে সূর্য ও দেখা দেয়নি কয়েক দিন। তার উত্তাপ হীন জীবনের সাথে টেনসির

সুবর্ণরেখার বাঁক

লেখক : শান্তিস্বরুপ চক্রবর্ত্তী

     

পথ চলতে চলতে একদিন শেষ হয় সাময়িক পথ চলা,  কিন্তু যেখানে শেষ হয় সেখান থেকে শুরু হয় নতুন করে চলা, আবার নুতন রাস্তা,নুতন নুতন মানুষ, এ এক অদ্ভুত চলার নেশা, কত রকম মানুষ, কত রকম অভিজ্ঞতা জমা হয় ঝুলিতে, তাদের মধ্যেই কেউ কেউ মনে দাগ কেটে যায়। আমার মধ্যে নিজস্বতা বলে কিছু নেই, যা আছে তা এই রাস্তায় চলতে চলতে মানুষের কাছে পাওয়া, প্রকৃতির কাছে পাওয়া।গত কালকেই মুরি তে এসেছি, সন্ধার পর পৌছে কিছুই বুঝতে পারিনি। গেস্টহাউস এর চারদিকে সবুজের সমারোহ, সকালে উঠে অফিসে যাওয়ার জন্য তৈরি হয়েছি, নঈম বলল স্যার গাড়ি ডেকে দিচ্ছি, আমিই বললাম না থাক হেঁটেই যাব।সূবর্ণরেখা নদীর ধার দিয়ে পাকা রাস্তা, এপাশে মুরি ওপাশে তুলিন, পশ্চিমবাংলা আর ঝাড়খণ্ডের সীমানা।

এখন আগস্ট মাস, মাঝে মাঝেই বৃষ্টি হচ্ছে, সুবর্ণরেখা কানায় কানায় পূর্ণ। হিন্ডালকো কারখানা এবং কলোনি কে ইউ আকৃতিতে বেষ্টন করে বয়ে গেছে সুবর্ণরেখা। শুনেছি একসময় সুবর্ণরেখার বালি থেকে সোনা পাওয়া যেত। রাস্তা থেকে একটু নামলেই নদীর ঘাট, ওপাশে একটা মন্দির আর নদীর তীরে শ্মশান। বড় বড় পাথর জলের উপর পর্যন্ত মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। এ নদী যে আমার অনেক দিনের চেনা, জামশেদপুরএ দোমোহানিতে সুবর্ণরেখা আর করকাই একসাথে মিলে সুবর্ণরেখা এগিয়ে গেছে, আবার ঘাটশিলার কাছে ঘালুডি তে অতি মনোরম সুবর্ণরেখা।নদীর ধার পর্যন্ত নেমে যাই, জলে হাত দিয়ে ফিরে আসি।ছটায় অফিস থেকে ফেরার সময় অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে দেখি বয়ে যাওয়া জলের দিকে, পাখিরা ফিরে যাচ্ছে যে যার আপন ঘরে। ওরা জানে না মাটির বিভাজন। ওই দূরে বানসা পাহাড়ের ওপাশে সূর্য অস্ত যাওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছে। ধীরে ধীরে জলের উপর হামাগুড়ি দিয়ে সন্ধ্যা নামছে। এ ভাবেই শেষ হয় দিন, মাস ও বছর।

হঠাৎ মহামারী গ্রাস করে পৃথিবীকে, কোভিড এর ভয়ে সারা পৃথিবীর মানুষ বিভ্রান্ত, মানুষ যে কত অসহায় তখন বুজলাম। সারা পৃথিবী যেন হঠাৎ থমকে গেল। প্রকৃতির কাছে বিজ্ঞান কত অসহায়।

বয়ে যায় সুবর্ণরেখার ধারা একই ছন্দে, মানুষ ছাড়া এই গ্রহের সবকিছু স্বাভাবিক। মানুষেরই সবসময় কিছু হারানোর ভয়।আমি মাঝে মাঝেই গিয়ে বসি জলের ধারে, এখন বুজলাম মৌনতার মধ্যেই সবচেয়ে বেশি সরব থাকে আমাদের  অন্তরতা। ওপারে আজও শশ্বানে জ্বলছে চিতা, স্বচ্ছ জলের মধ্যে আকাশের জলছবি, পাখিরা ফিরে গেছে যে যার আপন ঘরে।হঠাৎ মোহভঙ্গ হয়, পিছন থেকে কেউ যেন বলে একটা বিড়ি দিবি। আমি পিছন ফিরে দেখি একজন লোক, মুখে খোঁচা দাড়ি, খালি গায়ে কংকালসার শরীর, মাথায় রুখু চুল। আমি প্রথমে হতবম্ব, তারপর ওর দিকে সিগারেট এর প্যাকেট বাড়িয়ে দিলাম, …

ফ্রেন্ডশিপ ব্যান্ড

লেখক : রোহিত দাস

প্রথম পিরিয়ডের বেল পড়তেই ক্লাসে রেজিস্ট্রার খাতা হাতে প্রবেশ করলেন সৌম্যদীপ্তা ম্যাম। সবাই যখন দাঁড়িয়ে তাকে গুড মর্নিং বলতে যাচ্ছে তখনই ম্যামের ছায়া অনুসরণ করে অন্য একজন ক্লাসে প্রবেশ করলো। টিচার্স টেবিলে রেজিস্টার খাতা রেখে ম্যাম …

স্নেহ

লেখক : দেবাত্রেয়ী গুহ(দেবী)

-“ঘটি বাড়ির মাইয়া, ওই কতগুলো চিনির সিরা বানানো ছাড়া কি শিখছস রে? থু থু, তুই খা এই খাবার।”
-“জন্ম সময় তো মা তোমার মুখে মধু দেয় নি। তাই কাঁটা তার পার করে যখন এখানে এসেই পড়েছ …

ফলেন পরিচীয়তে

লেখক : জয়দীপ চক্রবর্তী

“পঞ্চাশ কেজি দই নিয়ে সামনের রবিবার তোদের বাড়ি যাচ্ছি। তোরা সকলে বাড়ি থাকিস।”

বন্ধু অনিকেতের হোয়াটস-অ্যাপ মেসেজটা পড়ে বেশ অবাক হল কাঁঠাল খান।  নর্থ বেঙ্গল থেকে হঠাৎ পঞ্চাশ কেজি দই নিয়ে আসার কারণটা বোধগম্য হল না …

Back to Top
error: লেখা নয়, লিঙ্কটি কপি করে শেয়ার করুন। ধন্যবাদ।