নববর্ষ ১৪৩০: সম্পাদকের কথা

সম্পাদক: সম্বিত শুক্লা

সববাংলায় ও লেখালিখির সঙ্গে যুক্ত সকল লেখক, পাঠক, কর্মীবৃন্দ, সদস্য ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের জানাই নববর্ষের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। সকলে আরও ভাল থাকুন সেই শুভকামনা নিয়েই ১৪৩০ বঙ্গাব্দের শুরু হোক।

সময়ের নিয়মে আমরা আরও একটা নতুন বছরের নতুন দিনে এসে উপস্থিত হয়েছি, আর সকলের মুখোমুখি আবার এই অধম সম্পাদক। দেওয়ালে ঝুলে থাকা ক্যালেন্ডার বদলের সময় এসেছে, একই রকম ভাবে লেখালিখিতেও এসেছে সম্পাদক বদলের সময়। ক্যালেন্ডার বদলের যদিও কিছু বাঁধা ধরা নিয়ম থাকে তবে লেখালিখির সম্পাদক বদলের সেরকম কিছু নিয়ম নেই। শুরুর বছরে তিন জন সম্পাদকের পর চতুর্থ সম্পাদক হিসেবে কার্যভার নেওয়ার পর দু’বছরের কিছু বেশি সময় দায়িত্ব পালনের পর এই পরিবর্তন।

আসলে আমাদের সব পরিবর্তনই হয় সববাংলায় পরিবারের সীমিত সামর্থ্যের মধ্যে সববাংলায় -এর বিপুল কর্মকান্ডকে সামাল দেওয়ার জন্য। তাই আমাকে তুলে নিতে হচ্ছে সববাংলায় এর মূল সাইটের প্রধান সম্পাদকের ভার আর লেখালিখির সম্পাদনার দায়িত্ব তুলে নেবেন মাননীয় রাজীব চক্রবর্ত্তী মহাশয়। রাজীব চক্রবর্ত্তী আপনাদের কাছে অপরিচিত কেউ নন, লেখালিখি ওয়েবজিনের সম্পাদনার ভার গত এক বছর ধরে সুদক্ষভাবে তিনি সামলেছেন। এবার তাঁর হাতেই তুলে দেওয়া হল সম্পূর্ণ লেখালিখি সাইটের ভার। আমি নিশ্চিত রাজীবদা লেখালিখিকে আরও অনেক এগিয়ে নিয়ে যাবেন এবং তিনিও আমারই মত নতুনত্ব আনার চেষ্টা করবেন সাইটে। আমি এও নিশ্চিত, আপনারা যেভাবে আমার দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছন ঠিক একই ভাবে নতুন সম্পাদককেও আপন করে নেবেন।

এ তো গেল পরিবর্তনের কথা। এবার সকল বাঙালির কিছু গুরু দায়িত্বের কথা মনে করিয়ে দিই – “মনে করিয়ে দেওয়া” বলছি কারণ এরপরের কথাগুলি আপনাদের কাছে নতুন নয়, সকলেই জানেন। পশ্চিমবঙ্গে বাংলা ভাষা ও বাঙালির দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে – একথা অস্বীকার করা মানে ঝড়ের থেকে বাঁচতে বালিতে মুখ গুঁজে থাকার সামিল। আর এই পিঠ থেকে যাওয়ার মূল কারণ আমরা বাঙালিরাই – আমরা বাচ্চাকে ইংরাজি মাধ্যমে দেব, বাড়িতে হিন্দি-ইংরাজি শেখাবো, দোকানে-বাজারে-রাস্তায় ইংরাজিতে (দমে না কুলোলে হিন্দিতে) কথা বলব আর বচ্ছরকার দুটো দিন অর্থাৎ পয়লা বৈশাখ আর আটই ফাল্গুন (দুঃখিত, একুশে ফেব্রুয়ারি) বাংলার জন্য দরদ উথলে দিয়ে বলব বাংলার কোন ভবিষ্যত নেই। ঠিক কথা – না নেই, এরকম বাঙালি মায়ের সন্তান থাকলে মায়ের যা পরিণতি হওয়ার তাই হবে। ভারতের ম্যাপে কয়েক বছর পর “ওয়েস্ট বেঙ্গল” “পশ্চিম বঙ্গাল” থাকবে কিন্তু বাঙালি থাকবে না। কেউ কেউ হয়ত বলবেন এসবই শহরে হচ্ছে, তাঁদেরকে শুধু একটা কথাই বলব, গ্রাম চিরকাল শহরকে অনুসরণ করে এসেছে তাই আজকাল গ্রামের দিকের বাবা-মাও বাচ্চাকে সামর্থ্য অনুযায়ী ইংরাজি মাধ্যমে পাঠাচ্ছেন। তাই গ্রাম বাংলার বিনাশও খুব বেশি দেরি নেই।

আজকের এই শুভ দিনে এই সব ঘ্যান ঘ্যান হয়ত আপনাদের ভাল লাগছে না – বিশ্বাস করুন আমারও এগুলো লিখতে একদমই ভাল লাগছে না। কিন্তু যে কারণে এতগুলো কথা লেখা সেটা হল : সববাংলায় ওয়েব সাইট প্রকাশ করার পর ৬ বছর পেরিয়ে গেল, বাংলায় তথ্যমূলক এরকম ওয়েবসাইট বুক ঠুকে বলতে পারি আর একটিও নেই। কিন্তু তারপরেও এই ওয়েবসাইটের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত সদস্য, শুভাকাঙ্ক্ষীর সংখ্যা হাতে গোনা কয়েক জন। পাঠকের সংখ্যা নিয়মিত বাড়লেও কেউ এসে বলছেন না – “চলুন আপনাদের সঙ্গে একই সঙ্গে পথ চলি, আপনাদের বোঝা একটু হালকা করার চেষ্টা করি”। এই বোঝা হালকা করার জন্য খুব বেশি কিছু করতে হবে না – যার যেটুকু সামর্থ্য – কেউ আর্থিক অনুদান পাঠালেন, কেউ পাঠালেন তথ্যমূলক লেখা, আর তেমন কিছুই না করলে নিয়মিত আমাদের পোস্ট (মূল সাইটের তথ্য মূলক লেখা, লেখালিখির লেখা, ইউটিউব/ফেসবুকের পোস্ট ) শেয়ার করলেন, সববাংলায় এর বই বা অন্য কোন সামগ্রী কিনলেন ইত্যাদি ইত্যাদি…

তবে আমরা কয়েকজন, যতক্ষণ দেহে আছে প্রাণ, লড়ে যাবো। সীমিত সামর্থ্য নিয়ে লড়ে যাওয়ারই এক বাহ্যিক প্রকাশ এই সম্পাদক পরিবর্তন – রাজীব চক্রবর্ত্তী দায়িত্ব বাড়িয়ে হচ্ছেন লেখালিখির পূর্ণ সময়ের সম্পাদক আর আমি ওদিকে নিচ্ছি প্রধান সম্পাদকের বাড়তি দায়িত্ব। আর অন্যান্য যাদের নাম এল না তারাও কিন্তু করে চলেছেন নিরলস পরিশ্রম – সেই একই লক্ষ্যে – বাংলা ভাষাকে সমৃদ্ধ করার লক্ষ্যে।


কিছু গুরুত্বপূর্ণ লিঙ্ক:

প্রকাশ – পয়লা বৈশাখ, ১৪৩০

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to Top
error: লেখা নয়, লিঙ্কটি কপি করে শেয়ার করুন। ধন্যবাদ।

রুচিশীল ও বিষয়ভিত্তিক আলোচনার জন্য ক্লিক করুন এখানে

sobbanglay forum