টিনএজঃ কীভাবে নিয়ন্ত্রণ সম্ভব

লেখক : সাখাওয়াতুল আলম চৌধুরী

টিনএজ কীঃ
ইংরেজি থার্টিন থেকে নাইন্টিন অর্থাৎ তেরো থেকে উনিশ বছর বয়সের ছেলেমেয়েদের টিনএজার বা বয়ঃসন্ধিকাল  বলা হয়। যদিও টিনএজারদের শারীরিক চারিত্রিক কিছু বিষয় থাকে যা আরও দু চার বছর পর্যন্ত চলতে থাকে। এই তেরো থেকে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া পর্যন্ত সময়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একজন মানুষের। বিশেষ করে একটি ছেলের জন্য।
 
টিনএজের চরিত্রঃ
 এই বয়সটি এতোই দুরন্ত উদ্দীপক উশৃঙ্খল যে তাদের চরিত্রের নির্দিষ্ট  কোনো ছবি আঁকা যায়না। এই বয়সে কখন কার কেন মন খারাপ হবে কেউ জানে না। কার কখন কী ভালো লাগে সেটা সে নিজেও ভাবতে পারে না। এই সময়টাতে প্রতিটি ছেলে তাদের শারীরিক এবং মানসিক নিত্যনতুন পরিবর্তন লক্ষ্য করে। সেসব পরিবর্তনের কথা সে কাউকে না বলতে পারে, না কেউ বুঝতে চেষ্টা করে। যার ফলে ছেলেরা যথেষ্ট সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগে।
 
সঠিক পরামর্শ এবং সিদ্ধান্তের  কারণে এই বয়সের সিংহভাগ ছেলে ভুল পথে পরিচালিত হয়ে যায়।কেননা তারা তাদের প্রয়োজন সঠিকভাবে সবার কাছে উপস্থাপন করতে ব্যর্থ হয়। এই চঞ্চল উদ্যমী বাঁধনহারা সময়টা হচ্ছে বয়ঃসন্ধীকাল। এটা হচ্ছে চরম অস্থির একটি সময়। এই সময়ের ছেলেদের মানসিক অবস্থা কেউ বুঝতে পারে না।
 
বয়ঃসন্ধিকালের যে দিকটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ তা হচ্ছে একটি ছেলের জৈবিক চরিত্র। এই জৈবিকতা একটি ছেলেকে হয় ধ্বংস করে দেয় নয়তো পারিপার্শ্বিক সাপোর্ট পেয়ে নিজেকে সুদৃঢ় রাখে। কেননা এই বয়সটা হচ্ছে খুবই স্পর্শকাতর বিশেষকরে বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ। এই বয়সে জৈবিক চাহিদার  যে ঝড়ের সূচনা হয় তা নিজের অনুকূলে নিতে অধিকাংশ ছেলেই ব্যর্থ হয়। তাই এই বয়সের চরিত্র বলতে যে বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ তা হচ্ছে জৈবিক চাহিদার নিয়ন্ত্রণের চরিত্র।
 
কীভাবে নিয়ন্ত্রণ সম্ভবঃ
এই  বাঁধনহারা চঞ্চল যৌবনের প্রারম্ভে কোন ছেলেই নিজের শারীরিক উত্তাল যৌবনকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনা। তবুও তাকে চেষ্টা করতে হয় এবং চেষ্টা করতে হবে। কিন্তু দিশেহারা এই বয়সে ১৩ /১৪ ছেলে কীভাবে নিজের উন্মাদনা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে? তাই তাকে কিছু বিষয় মেনে চলতে হবে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য।
১) ভালো বন্ধুত্বঃ
সৎ স্বর্গে স্বর্গবাস। এই কথাটি আমরা সবাই জানি। ঠিক এটা অনুসরণ করেই একটি ছেলেকে ভালো বন্ধুদের সাথে সম্পর্ক রাখতে হবে। ভালো বন্ধু মানে ক্লাসের ফার্ষ্ট বয় নয়। ভালো বন্ধু হলো সে, যার ভিতরে ধর্মীয় ভীতি বেশী কাজ করে। অর্থাৎ যে সর্বদা আল্লাহকে ভয় পায়। একমাত্র আল্লাহর আযাবের ভয়ে যে সমস্ত পাপ থেকে নিজেকে দূরে রাখে সে _ই হচ্ছে প্রকৃত ভালো বন্ধু। যদি এমন ভালো ভালো কিছু বন্ধু করা যায় তাহলে, কেউ কোনো খারাপ কিছু দেখলে, করলে বা খারাপ পরামর্শ করলেও সেই ভালো বন্ধু সাথে সাথে বাঁধা দিবে। এই বাঁধা যদি শক্তিশালী হয় তাহলে যে যারা খারাপ কিছু করা বা দেখার চিন্তা করলেও তা তৎক্ষণাৎ বন্ধ হয়ে যাবে। সুতরাং বেশী বেশী ভালো বন্ধু জোগাড় করে তাদের সাথে ভালো সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে।
২) একাকীত্বে না থাকাঃ
এই বয়সের সবচেয়ে বড় দোষ হলো একাকীত্ব। যেই একটু একা হওয়া যায় তখনই মাথায় খারাপ চিন্তা ভর করে বসে । নিজস্ব রুম থাকলে সবচেয়ে মারাত্মক। সিংহভাগ  ছেলেরা তাদের নিজস্ব রুমে খারাপ কাজে লিপ্ত হয়। তাই চেষ্টা করতে হবে যতকম একাকী থাকা যায়। বিশেষকরে এই বয়সের ছেলেদের সবচেয়ে বেশী খারাপ কাজ হয় বাথরুমে। তাই সময়ের অতিরিক্ত যেন বাথরুমে অবস্থান করা না হয় তার খেয়াল রাখতে হবে।
৩) যৌথ রুম ব্যবহারঃ
পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সাথে থাকলে কখনোই কোনো ছেলে খারাপ কাজ করতে পারে না। তাই উচিত হবে ব্যক্তিস্বাধীনতার নামে নিজস্ব একাকী রুম ব্যবহার না করে বড়ভাই বা ছোট ভাইয়ের সাথে রুম শেয়ার করা। অথবা এমন অবস্থানে থাকা যেখান থেকে পরিবারের যেকোনো সদস্য আপনাকে সহজে লক্ষ্য করতে পারে। যাতে আপনার যেকোনো কর্মকান্ড তাদের চোখের সামনে থাকে।
৪) সৃজনশীলতাঃ
যথেষ্ট খেলাধুলার মাধ্যমে পরিমিত শরীরচর্চা করার চেষ্টা করতে হবে। সেইসাথে সৃজনশীল কাজ যেমন সাহিত্য চর্চা, বইপড়া, বিভিন্ন সামাজিক সংঘটনে জড়িত হওয়া, ক্লাব করা ইত্যাদি জনকল্যাণমূলক  কাজে নিজেকে নিয়োজিত রাখার চেষ্টা করতে হবে। যাতে নিজের মন কখনোই কোনো অলস সময় আপনার থেকে না পায়। কেননা অলস মস্তিষ্ক শয়তানের কারখানা।
৫) পরিপূর্ণ ধর্মীয় অনুশাসনঃ
একটি ছেলে তখনই নিজেকে পাপ থেকে রক্ষা করতে পারবে যখন সে নিজেকে নিজে চেষ্টা করবে। আর এই চেষ্টা থাকতে হবে সম্পূর্ণ ধর্মীয় বিধিনিষেধ অনুযায়ী। আমাদের ধর্মীয় অনুশাসনে এইসব গোপন পাপের শাস্তি ব্যাপক। যদি ধর্মের  সত্যিকারের অনুসারী হয়ে থাকেন তাহলে আপনার ভিতর অবশ্যই আল্লাহর আযাবের ভয় কাজ করবে। সেজন্য ধর্ম যদি মানেন তাহলে মানার মতো করে মানতে হবে। সবসময় পাক পবিত্র থাকতে হবে। এই বয়সের ছেলেদের ইসলামের  সঠিক জ্ঞান না থাকার কারণে যখন তখন অপকর্মে লিপ্ত হয়ে যায়। তাদের ঐ ধারণা জন্ম নেয় না যে, এইসব পাপ কর্ম করার সাথে সাথে তারা নাপাক হয়ে গেছে। এই বিষয়টি যদি  তারা বুঝতো যে নিজের সাথে নিজে এই পাপ কাজ করার সাথে সাথে তাদের গোসল ফরজ হয়ে যায়। তাহলে  যখন তখন তাদের  শরীর উত্তেজিত হলেও তারা সময় অসময়ে গোসল করার চিন্তায় এই পাপ থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করতো।
শুধু তাই নয় নিয়মিত সালাত আদায়ের চেষ্টা করতে হবে। সর্বদা হক পথে চলতে হবে। নিজেকে আল্লাহর রাস্তায় সোপর্দ করতে হবে। সবসময় এই চিন্তা থাকতে হবে যে, আমি যা _ই করছি তা আমার আল্লাহ দেখছেন। তাই যখন পাপ করার ইচ্ছা জাগ্রত হবে তখনই চিন্তা করতে হবে এই পাপের জন্য আল্লাহ আমাকে দুনিয়া এবং আখিরাতে শাস্তি দিবেন। মনে রাখতে হবে আমাদের দৈনন্দিন যে বিপদ আপদ হয় তার সবকিছুই আমাদের হাতের কামাই। তাই আল্লাহর আদেশের বিপরীতে গিয়ে কোনো পাপ করলে সাথে সাথে এই চিন্তা যেন মাথায় আসে যে, এই পাপ করলে অবশ্যই আমার কোনো না কোনো বিপদ বা খারাপ কিছু ঘটবে। যদি এভাবে আমরা নিজেদের বুঝাতে পারি তাহলে ইনশাআল্লাহ অবশ্যই আমরা খারাপ চিন্তা এবং কাজ থেকে বেরিয়ে আসতে পারব।
৬) পড়াশোনায় মনোযোগীঃ
এই বয়সে যারাই খারাপ চিন্তা এবং কাজে লিপ্ত হয়ে যায় তাদের অধিকাংশই পড়াশোনা ঠিকম‌তো শেষ করতে পারে না। তাই নিজের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে পড়াশোনার প্রতি মনোযোগী হওয়ার যথেষ্ট চেষ্টা করতে হবে। সাময়িক কিছু আনন্দ যে আপনার কতবড় ক্ষতি হচ্ছে সেটা আগে চিন্তা করুন। নিজের ব্যক্তিত্ব বাড়ানোর জন্য পড়াশোনায় অধিক ভাবে জোর প্রচেষ্টা চালাতে হবে। প্রতিটি পরিবারই ছেলেদের পড়াশোনার জন্য চাপ দেয়। এই চাপটাকে খারাপ মনে না করে ঠান্ডা মাথায় সহ্য করে নিজের পড়াশোনার উন্নতি করার চেষ্টা করুন।
৭) দাওয়াতী  কার্যক্রমঃ
খারাপ সংস্পর্শ থাকে এবং খারাপ কর্মকান্ড থেকে নিজেকে রক্ষা করতে হলে অবশ্যই ভালো কাজে যোগ দিতে হবে। আর সেটা হতে পারে ইসলামের দাওআত। নিজে ইসলাম বুঝুন এবং তা আপনার আর দশজন বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন। যখন আপনি নিজেই ইসলাম নিয়ে চিন্তা চেতনা করবেন তখন আপনার ভিতরের খারাপ বিষয়টি আপনাকে নষ্ট করার সুযোগ কম পাবে। আপনি যখন আপনার বন্ধুদের সালাতের দাওয়াত দিবেন, ভালো কাজের জন্য উৎসাহ দিবেন ধর্মীয় পথে চলার আহবান জানাবেন,  তখন আপনার ভিতরে আর খারাপ কাজ করার স্পৃহা জন্ম নিবে না।
৮) বন্ধুদের সাথে পরামর্শঃ
বন্ধুরাই যেমন এই বয়সটিকে খারাপ করে, ঠিক বন্ধুরাই চাইলে এই খারাপ বদঅভ্যাস থেকে আপনাকে মুক্তি দিতে পারে। যখন খারাপ কাজে জড়িত হয়েই গেছেন। তখন চেষ্টা করতে হবে এর থেকে বেরিয়ে আসার জন্য। আর এই চেষ্টা করুন বন্ধুদের সাথে নিয়ে। আপনি যেমন খারাপে লিপ্ত হয়ে গেছেন তেমন আরো বন্ধু আছে যারাও এই কাজে রত আছে। তাদের সাথে সরাসরি পরামর্শ করে ভালো হওয়ার উপায় বের করুন। অনেকেই আপনাকে নিয়ে ঠাট্টা টিটকারী করবে। কিন্তু আপনার নিয়ত পরিষ্কার থাকলে আল্লাহ ই আপনাকে সাহায্য করবে। প্রথমে বন্ধুদের এর খারাপ দিকগুলো তুলে ধরে সাহায্য চান। তাদের থেকে পরামর্শ করুন কীভাবে আপনি ভালো হবেন। তখন দেখবেন তারাও তাদের সমস্যা আপনাকে বলছে। যদি ভালো কাজে সবাই উদ্যোগী হোন তবে সেই কাজ অবশ্যই সফল হবে।
এছাড়া কিছু কিছু বন্ধু থাকে খুব ভালো। তারা হয়তো নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছে। তাদের থেকে পরামর্শ নিন কীভাবে আপনি এই ভয়ানক ধ্বংস থেকে রক্ষা পাবেন। মনে রাখবেন বন্ধুই হচ্ছে একটি ছেলের শেষ ভরসাস্থল।
৯) মোবাইল ছেড়ে দিতে হবেঃ
বর্তমান সময়ে ছেলেরা খারাপ হওয়ার ৯০ ভাগ কারণ হচ্ছে মোবাইল ফোন। এন্ড্রোয়েড ফোনের কারণে পুরো খারাপ দুনিয়া আপনার হাতের মুঠোয়। আপনি এক ক্লিকেই যেকোনো খারাপ কাজ দেখতে এবং করতে পারছেন। তাই এই খারাপ সময়ে নিজে থেকেই এইসব মোবাইল বন্ধ রাখতে হবে। যদি আপনি নিজের ভালো চান। এই ফোনের কারণে আপনার ভিতরে দিনদিন নিত্যনতুন আগ্রহ জন্ম নিবে। আজ এটার কথা ভাবলে কাল অন্য আরেকটির কথা মাথায় আসবে। আজ এটা দেখলেন তো কাল ওটা দেখতে ইচ্ছা করবে। বিশেষ করে একাকী হওয়ার সাথে সাথে আপনার মোবাইল হয়ে যায় এক‌টি জ্যান্ত শয়তান। যে আপনাকে আপনার ইচ্ছা ছাড়াই আপনাকে দিয়ে খারাপ কাজ করিয়ে নিবে। সুতরাং আপনি যদি নিজেকে ভালো রাখতে চান অবশ্যই এই ধ্বংসাত্মক সময়ে মোবাইল থেকে দূরে থাকতে হবে। যখনই নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা পাবেন তখন চাইলে আপনি মোবাইল ব্যবহার করতে পারেন।
১০) নিজের ভবিষ্যতের চিন্তাঃ
এই খারাপ বয়সটিতে খুব কম ছেলেই নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা করে। কেননা খুব অল্প বয়সেই ছেলেরা বালেগ হয়ে যায়। খারাপ পরিবেশ পাওয়ার সাথে সাথে ছেলেরা নষ্ট পথে চলে যায় অনায়াসেই। তাই যে নিজেকে ভালো রাখার জন্য চেষ্টা করবে, তার কাছে এটা হতে পারে একটা হাতিয়ার। যে, আমাকে অবশ্যই ভালো কিছু করতে হবে। আমার পরিবার আমার কাছ থেকে অনেক কিছু আশা করে। আমাদের সামাজিক অবস্থান উচ্চ শ্রেণীর নয়। প্রায় প্রতিটি সংসারে অভাব অনটন রয়েছে। এই চিন্তা মাথায় রেখেই আমাদের খারাপ পথ থেকে ফিরে আসতে হবে। সবসময়ই চিন্তা থাকতে হবে যে, আপনার উপর আপনার পরিবার অনেক কিছুই আশা করে।
১১) ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি দৃষ্টিঃ
নিজের বা তারচেয়ে কিছু বড় বয়সী ছেলে আছে যাদের ক্রমাগত শারীরিক অত্যাচারের ফলে শরীর নষ্ট হয়ে গেছে। এইসব ছেলেদের দেখলেই বুঝা যায় যে তারা নিজেদের উপর অত্যাচার করে। যখন এইজাতীয় ছেলেদের দিকে গভীর দৃষ্টি দিবেন তখনই আপনার মনে ধাক্কা লাগবে। যে কাজ করে আজ এদের এই অবস্থা, সেই কাজ আমি যদি করি বা চালিয়ে যায় তাহলে আমার কী অবস্থা হবে? যদি এভাবে বিষয়টি চিন্তা করতে পারি তাহলে অবশ্যই আমরা নিজেকে রক্ষা করতে পারবো।
১২) ভালো গ্রুপে যুক্ত থাকাঃ
বর্তমানে যে সুযোগ সুবিধা আছে আগে তা ছিলো না। আজকাল এইসব নিয়ে আমরা কথা বলতে পারছি সাহায্য চাইতে পারছি। কিন্তু একটি সময় ছিলো এইসব শুধু লুকোচুরি করেই একে অন্যের সাথে আলাপ করতো। এই আধুনিক সময়ে বয়ঃসন্ধিকালীন ছেলেদের রক্ষা করার জন্য বেশ ভালো ভালো বই বেরিছে। সেইসাথে(মুক্ত বাতাসের খোঁজে এর মতো)  ভালো ভালো ফেইসবুক গ্রুপ সৃষ্টি হয়েছে। যেসব গ্রুপে একটি ছেলে অনায়াসে তাদের সমস্য চিন্তা ধারা অকপটে বলতে পারছে। সেইসাথে ভালো ভালো পরামর্শক তাদেরকে এই ধ্বংসাত্মক কাজ থেকে বেরিয়ে আসতে পরামর্শ দিচ্ছেন। এইসব গ্রুপে ঢুকলেই বুঝা যায় এই বয়সের ছেলেদের বর্তমান কী পরিস্থিতি। এই ভালো গ্রুপে নিয়মিত সময় দিলে কোনো কিছুই লাগবে না ভালো হতে। কেননা  এখানে যারা বিভিন্ন পরামর্শ নিচ্ছে তাদের সমস্যা গুলোর প্রতি দৃষ্টি দিলেই আপনার ভবিষ্যৎ দেখতে পারবেন। আজ আপনি যে খারাপ কাজে লিপ্ত আছেন, সেই একই খারাপ এরা করে আজ ধ্বংসের মুখে। সুতরাং এদের পরিনতির দিকে তাকালেই আপনি নিজেই ভালো হওয়ার চেষ্টা করবেন। সুতরাং এইজাতীয় ভালো ভালো গ্রুপে যুক্ত থেকেও চাইলে ভালো হওয়া যায়।
১৩) নিজেকে জরিমানাঃ
আপনার মাথায় যখন খারাপ কিছু করার চিন্তা চলে আসে তখন নিজেকে অনেকেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। এই নিয়ন্ত্রণ করতে না পারার কারণে সাথে সাথে ঐ খারাপ কাজ করে ফেলেন। এই কাজটি করার পর আপনিই আবার আফসোস করেন, কেন এই খারাপ কাজটি করে ফেললাম। অনেকে নিজেকে ধিক্কার দেন। কিন্তু যা আগে করার কথা তা পরে করে লাভ নেই। অতএব খারাপ কাজ করে ফেললেও যাতে ভবিষ্যতে আর না করেন তার জন্য জরিমানার ব্যবস্থা করতে হবে। প্রতিবার খারাপ কাজ করার শাস্তি স্বরুপ নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা জরিমানা করতে হবে নিজেকে। এই টাকা দান করে দিতে হবে ভালো কাজে। প্রতিবারে টাকার অংক বাড়তে থাকবে। যদি আপনি সৎ থাকেন নিজের প্রতি তাহলে এইভাবে টাকা চলে যাওয়ার কারণে হলেও আপনি একবার চিন্তা করবেন, আসলেই কাজটি ঠিক হচ্ছে কিনা? এই জরিমানার জন্য একটি ব্যাংক বানাতে হবে। যা আপনি চাইলেই পুনরায় নিতে পারবেন না। খারাপ কাজ করার চিন্তা আসার সাথে সাথে আপনাকে টাকা ফেলে দিতে হবে।
 
সর্বশেষ কথাঃ
এই বয়সটি খুবই আশ্চর্য। যারা এই বয়সে আছেন কেবল তারাই জানেন তাদের ভিতরে কী যাচ্ছে এবং চলছে। যারা এই বয়স পার করে এসেছেন তাদের অনেক কিছুই এখন মনে হবে খুব সহজ। কিন্তু ঐ বয়সে  আগুনের পাশে থেকে  মোম গলে না  যাওয়া খুবই বিস্ময়কর। তাই একমাত্র আল্লাহ যাদের রক্ষা করেন তারাই নিজেদের রক্ষা করতে পারেন। সুতরাং সর্বদা আল্লাহর পথে চলার এবং মানার চেষ্টা করতে হবে।
 

লেখক পরিচিতি : সাখাওয়াতুল আলম চৌধুরী
আমি সাখাওয়াতুল আলম চৌধুরী, জন্ম চট্টগ্রামে। বেশ কবছর প্রবাস জীবনযাপনে লেখালেখির হাতেখড়ি। প্রবাসী বিভিন্ন পত্রিকায় লেখালেখি করেছি একসময়। বর্তমানে কর্মরত। কাজের ফাঁকে এখনো সাহিত্য ও ধর্মীয় লেখালেখির চর্চা করি।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to Top
error: লেখা নয়, লিঙ্কটি কপি করে শেয়ার করুন। ধন্যবাদ।

লেখা আহ্বান - বিস্তারিত জানতে ছবিতে ক্লিক করুন