কবি: গৌতম চট্টোপাধ্যায়
ঋষিকেশ-প্রশান্তির কালো জীর্ণ-শীর্ণ
ম্যারিয়ানা-গভীরতার গোল চশমার
দুর্বাসা-পাঁজর লোকটি যখন
কোলকাতার হাজার উঁচু মুষ্ঠিবদ্ধ হাতে
আলতো ছোঁয়া দিয়ে নিস্তেজ করে সব প্রতিবাদ…,
তখন দিল্লীর বুকে লাখো শহীদের
চুঁয়ে চুঁয়ে পড়া রক্ত তিন রঙ হয়ে
সারা ভারত রাঙামাটি….।
অসাধারন প্রলেপের উদ্বেলিত মুখে
রাঙা সুখে মাতোয়ারা ভারতের হাসি
প্রতিবেশীর দৌরাত্মে আর খাদ্য আন্দোলনে
হাজার ছেলের লাশঘরে ম্রিয়মাণ….।
নকশালের অসহিষ্ণু-অসন্তোষ,
চাপানো কালো উদ্বেগ পেরিয়ে
ভারী বুটের বিক্ষিপ্ত পদচারনায়
ত্র্যস্ত আতঙ্কিত ভারতের চুল খামচানো…
কিছু হাত এদিক ওদিক ওঠা নামা,
কিছু উঁচু দেয়ালে বন্ধ রড গোনা,..থেকে
লর্ডসের সবুজালী হাওয়া…,
আর আমাদের উন্মাদ ধাওয়া….।
বুক ভারী টানটান উত্তেজনা
অযোধ্যায় রাম-বাবরের ইট গোনা
আর অস্থিরতার কারগিল, দ্রাস, সিয়াচিনে
নিঃশব্দ প্রতিশোধ শীত পদচারনা…।
আমরা স্বাধীন।
স্ব স্ব অধীন
বা নির্বিবাদী চলা গণতন্ত্রের মুখোশ,
কুরে কুরে খাওয়া উই….,
ওয়াংখেড়েতে ধোনির গর্বিত মুখ
আমার সর্বসুখ…তোমরা ঘুমোও আমিও শুই..।
বসুধৈব কুটুম্বকম্ আর সর্বধর্ম সমন্বয়ের
বেড়া ভাঙি রোজ..,রোজ গড়ি..।
স্টেশন থেকে চা-দোকান,..থেকে
খাকী প্যান্টের লম্বা উঠোন-ঝাঁট,
থেকে পাহাড়ে-কোন্দরে তপস্যা-সন্নাসীর
চওড়া-বুক আরো চওড়া দেশ থেকে বিদেশে..।
আমাদের ভোটধর্ম ভোটস্বর্গ।
আশা-নিরাশায় দোদুল্যমান হয়ে
কিছু লম্বা কিছু খর্ব
হয়ে মৃত মিছিলে বিদ্যাসাগরের
বিবর্ণ নীল বেদম আর্তনাদ-মুখ
লাশ হবার আগে
পতাকা উঁচু করে বলা
বন্দেমাতরম্….,আহা পরম সুখ।
ছা-পোষা গরীব মাঝারি মানুষের
এক স্পীচ ডিকোডরের
আজ বড় প্রয়োজন….।
আর বন্দে বন্দে বন্দে মাতরম্
হাতে চলা হনহন….।
ছবি: কুন্তল
লেখকের কথা: গৌতম চট্টোপাধ্যায়
কবিতা লেখা শুরু সেই ১৯৮৫ সাল থেকে। কলেজ পত্রিকায়। পরে দেশ বিদেশের বহু বিখ্যাত পত্র পত্রিকায় লেখা। পত্রিকা সম্পাদনা দীর্ঘ এগারো বছর। এরই মাঝে কোলকাতা বইমেলায় বের হয় পরপর দুটি কবিতা সংকলন। ঊনবিংশ শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ কবিতায় দু’ দু’বার বিখ্যাত মনীষীদের মাঝে ওনারও লেখা স্থান গ্রহণ করে নেয় নিজ দক্ষতায়। তৃতীয় কবিতা সংকলন, “সময়, ভালোবাসায় নেই নীলাঞ্জনা” যন্ত্রস্থ।
অসাধারণ…
অসাধারণ…
শব্দের শরীর ছুঁয়ে চলে যাব
বোধজল-সৃষ্টিসুধা-চিরঞ্জীব
সমৃদ্ধ কণিকায়,তারপর মহা-
চেতনায় জাগবে হুলুস্থুল ; কবি
আমি,ঈশ্বর সমান…
আমি সর্বান্তকরণে এই
সৃষ্টির অমরত্ব প্রার্থনা করি শ্রদ্ধেয়।
বিনম্রতায়-
” যাযাবর…….”