কবি: স্বাগতা আচার্য্য
দুধসাদা কাগজে মাখাতে হবে রং।
শিশুদের কলি কলি আঙুলে ছুটছে উদ্যম।
কেউ ঘষছে গেরুয়া সমতট।
এফোঁড়-ওফোঁড় হয়ে ফুটে উঠছে পোড়ামাটির খেলাঘর।
ধুলোবালির সংসারে অনাবাদি জমি
ওরা এখনও শেখেনি মাখাতে গেরুয়ায়।
মা বলে দিয়েছে এক ঘন্টায় স্বাধীনতা আঁকতে হবে।
নইলে প্রাইজ আসবে না।
কেউ পড়ে আছে সাদা রং নিয়ে।
কাকিমার সাদা থান এর মত!
আরো সাদা আরো সাদা-
মসৃণতায় পিছলে যাচ্ছে অকাল বৈধব্য!
গান চলছে সেই কাকভোর থেকেই
পুঁটুলি করে রাখা কাপড়টা বাঁশে ঝুলছে।
ঠিক বেণী পাগলীর কাছেও এরকম পুঁটুলি আছে।
সারাদিন ওটা পেটে বেঁধে ঘোরে
আর গান গেয়ে ঘুম পাড়ায়।
রাঙা দাদু এসে পুঁটুলি খুলে
উড়িয়ে দিলেন পাপড়ি।
ড্রাম বাজছে রতু মামার বিয়ের মতো।
আচ্ছা বেনী পাগলী পুঁটুলি খুললে
এরকম বাজনা বাজে না তো!
সবাই গান গায় না তো!
কম্পাসে চাকা ঘোরাতে গিয়ে মনে পড়ছে টায়ারটার কথা!
লুকিয়ে রাখা ছিল ছাদের কোণে।
বেশ মজা লাগতো ঘোরাতে
বনবন বনবন –
কালো রং ফিকে হয়ে আসত জোরে জোরে ঘোরালে।
বাবা ওটা ফেলে দিয়েছেন।
জমা জলে ডেঙ্গু মশা ডিম পাড়ে।
সে যাকগে, চাকায় এবার গুনে গুনে
দাগ টানতে হবে একটু বাঁকা বাঁকা করে।
সবুজ রংটা মাখাতেই হঠাৎ কাকাই ভেসে উঠলো!
কাকাই নাকি শহীদ!
তাই বেদিও রয়েছে গেটের পাশে।
এখন ওখানে শ্যাওলার ভিড়।
সেদিন কাকাই ঘরে এলো বাক্সে চেপে।
কত ফুল উড়ছিল!
এরকম গান বাজছিল!
তেরং কাপড়টা মুড়ি দিয়ে কাকাই ঘুমোচ্ছিল বাক্সে!
ঠিক মনে পড়েছে!
কাকাই তো কেবল সবুজ মেখে বসে!
বাকি বাকি দুটো রং এখনো বাকি!
রং লাগিয়ে একছুটে কাকাই এর পাশে।
বিস্ময়ে স্তব্ধ মেঘছুট এক আকাশ স্বাধীনতা টপকে –
ও রং মাখাচ্ছে অকাতরে!
মাথায় খেলাঘর, বুকে কাম্মার থানের মাঝে টায়ার ঘুরছে বনবন বনবন!
শুনে যান বাকি কথাটুকু-
ওর নাম স্বাধীনতা না দিয়ে
ঝুট শৈশব কিংবা ছুট শৈশব দিলে
বেশ লাগে।
তাই না?
ছবি: কুন্তল
লেখকের কথা: স্বাগতা আচার্য্য
নেশায় -আবোলতাবোল পাঠিকা। পেশায় -সেবিকা। নিবাস -পূর্ব মেদিনীপুর।
লেখকের ভাষায় – “যা ভাবি লেখা আসে তার সিকি; হইচই মার্কা মনন। এলোমেলো বুনন। গুণ খুব একটা নেই। কেউ লেখা চাইলে ধড়ফড় করে কেমন। ভুল ক্রুটি নিজগুনে ক্ষমা করে দেবেন। জানাবেন অকপটে। পরের বার শুধরে দেবার আশায় আছি।”