কবি: রাজীব চক্রবর্ত্তী
(১)
আনন্দ বেচেছি দুই হাতে,
ভরেছি লাভের পাত্র, কানায় কানায়।
তবু লোভের আগুন আরও গিলতে চায়।
আনন্দ কেনার ক্ষমতা
এই পৃথিবীতে অনেকেরই নেই।
তাই আজ পসরা সাজিয়ে বসেছি,
ভয় বেচতে।
(২)
বোধহীন পৃথিবী আত্মোন্মাদনায় সাবালক।
অক্লেশে পথ চলে খেয়ালের টানে,
গড়ে নেয় আনন্দ বাসর।
অনেক বিষন্নতার সুর চাপা পড়ে যায়,
উচ্ছ্বলতার ঢেউয়ে ভাসে
প্রাণের হাহাকার।
অবুঝ বোঝার ভার বুকে নিয়ে
জীবনের চোরাবালিতে ডুবে যেতে যেতে,
রক্তাক্ত মননের মৌন তপস্যায়
রত্নাকর বাল্মীকি হয়।
(৩)
বপন সুখের আনন্দ নেই,
পাশবিক উল্লাসে
রক্ত ঝরে সৃষ্টির গহ্বরে।
আদিকাল থেকে যে বুক বয়েছিল
নতুন প্রাণের স্পন্দন,
আজ তার হাহাকার ভরা চোখ
লজ্জার কালো মেঘে ঢেকেছে
ভীরু পৌরুষের অহংকার।
জীবনের উৎস মুখ
বেঁধে দাও ঘৃণার কঠিন পাথরে।
সব নারী অহল্যা হও
সাধু বেশে ভরা নষ্ট পুরুষের সংসারে।
(৪)
তুমি চাইলে,
ছুঁড়ে ফেলতে পারি পৈতেটা,
দূরে ঠেলে দিতে পারি
ফুল, মালা, গঙ্গাজল।
টুপি খুলে রেখে,
ভুলে যেতে পারি জুম্মার আজান।
সরিয়ে রাখতে পারি
আয়াত, দোয়ার সিঁড়ি।
ফিরিয়ে নিতে পারি মুখ
চার্চের দরজা থেকে।
সব করতে পারি
দ্বিধাহীন অনায়াসে। কারণ,
ক্ষুধার্ত তপ্ত দুপুরে
তুমি আমায় ধর্ম শিখিয়েছিলে।
মুখে তুলে দিয়েছিলে দু’মুঠো ভাত।
লেখকের কথা: রাজীব চক্রবর্ত্তী
জন্ম ১৯৭০ সালের ৩০শে ডিসেম্বর, কলকাতার সিঁথিতে। পেশায় কেন্দ্রীয় সরকারী কর্মচারী। দৈনন্দিনতার ক্লান্তি কাটাতেই মূলত: কলম ধরা। বেশ কয়েকটি লিট্ল ম্যাগাজিনে লিখেছেন গল্প, কবিতা। ২০১৭ সালে প্রকাশিত “সংশ্লেষ” নামক গদ্য সংকলনে স্থান পেয়েছে তাঁর মুক্তগদ্য। ঐ একই বছরে সোনারপুর কাব্যমঞ্চ আয়োজিত স্বরচিত কবিতা প্রতিযোগিতায় তৃতীয় স্থান লাভ করেন তিনি। ২০১৯ সালে প্রকাশিত “অন্য গদ্য” গ্রন্থে স্থান পেয়েছে তাঁর গদ্য। জীবনের বিবিধ অনুভূতি, বাস্তবতাকে ছন্দে বাঁধার প্রয়াসে তাঁর কবিতাচর্চা।
দুর্দান্ত
দারুন
খুব ভালো
সবাইকে ধন্যবাদ।