এক টুকরো সাদা কাপড়

লেখক : ইচ্ছেমৃত্যু

এক টুকরো সাদা কাপড় দেবেন ধর্মাবতার
এর বেশি কিছু চাই না।
আর চাইবোই বা কি মুখে
মধ্যবিত্ত আমি, আপনারা দিয়েছেন অনেক
রেশনে মোটা চাল, মাঝে মধ্যে গম
পেটে ভাতে বাঁচিয়ে রেখেছেন, কু গাইতে পারি?
গ্যাসেতে ভর্তুকি দেন, আমারই ভোলা মন
বিশ না তিরিশ টাকা- যাই ভুলে!
গিন্নিরও স্বভাব খারাপ, কাঠের উনুন না হলে নয়
গরমের ঝলকানি, পোড়া হাঁড়ি মাজতে ভালোবাসে
তাই ভর্তুকির গ্যাস বলে কত গ্যাস দিয়েছেন হিসেব করি না।
একশ দিনের কাজ দিয়েছেন ধর্মাবতার, তবে বারোদিন
“তাই বা কে দেয়!” এই বলে পাড়ার নেতা নিলো তিনদিনের টাকা
মুখে দাদা বলি, বয়সে ভাইপো সে, আহা তার আবদার কোন মুখে ফেলি?
ওদিকে ফি রোজ বাড়ছে তেলের দাম,
না না, আদার ব্যাপারী, পেট্রোলের দাম নিয়ে বলিনি কিছুই
ডাক্তারবাবু বলেন বয়স বাড়লে তেল মশলা কম খেতে
আপনারা খেয়াল রাখেন সবটুকু, তেল ছোঁয়ার উপায় রাখেননি।

এসবই আনাপসানাপ সেদিন বলেছি চায়ের ঠেকে
কে এক উজবুক, ভিডিও তুলে করেছে ভাইরাল।
দেশ আছে, দেশদ্রোহিতার আইনও আছে তাই
বাকি সব কিছুতেই যতই নিক কানে তুলো
এ ব্যাপারে তৎপর পুলিশ, চব্বিশ ঘন্টাও হল না পার
হলাম গ্রেপ্তার।
তারপরের গল্প প্রায় সবই আপনার জানা
ন মাসে ছ মাসে একবার কেস ওঠে জামিনের
বাকি সময় এক অন্ধ কুঠুরিতে – বছর যায় কেটে।
জামিনের প্রার্থনা করিনাকো আর
খোলা আকাশের নিচে দাঁড়াবার চাই না অধিকার
শুধু ধর্মাবতার, লিখে দিন দু এক কলম
জামিনের আশায় এ বৃদ্ধের ফুরালে পরমায়ু
একটুকরো সাদা কাপড়ে যেন ঢাকা হয় শরীর
যাতে বিচারের প্রহসনগুলো চাপা থাকে সমাজের কাছে।

অরিত্র চট্টোপাধ্যায়ের কন্ঠে লেখাটির পাঠ শুনুনঃ

লেখক পরিচিতি : ইচ্ছেমৃত্যু
জন্ম বর্ধমানের বর্ধিষ্ণু গ্রামে। পেশায় নরম তারের কারিগর আর নেশায় - রীতিমত নেশাড়ু, কী যে নেই তাতে - টুকটাক পড়াশোনা, ইচ্ছে হলে লেখা - সে কবিতা, গল্প, রম্যরচনা, নিবন্ধ যা কিছু হতে পারে, ছবি তোলা, বাগান করা এবং ইত্যাদি। তবে সব পরিচয় এসে শেষ হয় সৃষ্টিতে - পাঠক যেভাবে চিনবেন চিনে নেবেন।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to Top
error: লেখা নয়, লিঙ্কটি কপি করে শেয়ার করুন। ধন্যবাদ।

রুচিশীল ও বিষয়ভিত্তিক আলোচনার জন্য ক্লিক করুন এখানে

sobbanglay forum