লেখক : সৌরভ দেববর্মণ
মোহ
ডিনারের প্লেটে আলগোছে পড়ে থাকো
লালা আর লালসার মাঝে তুমি সাঁকো
খাওয়া শেষে দাঁতকাঠি বাড়তি তাড়ায়
যেভাবে বসতি বাড়ে পাশের পাড়ায়
বাড়তি ফিরিয়ে টিপস্ খোঁজে ওয়েটার
মোহের শৈত্য কবে ঢাকে সোয়েটার!
বৈপরীত্য
কফিতে চুমুক দিয়ে ধোঁয়া ওঠা কাপে
মাছ চিনে দরদাম মৃদু সংলাপে
কারও কারও নুন হলুদ বাড়ন্ত ঘরে
কেউ কি বেচছে মাছ আজকে সদরে!
আঁশবটি ধার দিতো সাইকেলশান
তার বউ দীঘি জলে পিদিম ভাসান।
অঙ্ক
ধারাপাত শিখে এসে জুঁই ফুল গুনি
সভায় ডাকলে বলি, আসছি এখুনি
আমারই সহপাঠী চুল্লু গিলেছে
রিক্সার ভাড়া গোণে, হিসেব মিলেছে?
নীলাঞ্জনাকে ভেবে নচিকেতা গায়
‘অঙ্কের খাতা ভরা থাকতো আঁকায়’
অঙ্ক মেলা না মেলা হিসেবের দায়।
নববর্ষ
বদল হবে না কিছু- থোড়-বড়ি-খাড়া
কাঠ পিঁড়ি পেলে ভাবি আরাম কেদারা
পান্তার পাড়া পাতে নুনের অভাব
পাঁজিটা নতুন শুধু সাবেক স্বভাব
খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলে চৈত্র বোশেখ
বারোমাসই ধারদেনা হিসেব কষে।
কদর
পাত যে পাড়াই ছিলো আর মাটি ভাঁড়
পাশেতে স্তুপিকৃত মাংসের হাড়
বিড়ালের অরুচিতে বেপাড়ার নেড়ি
খিদে পেটে ঘোরে ফেরে সইছে না দেরি
বাড়ি ফিরে নেড়ি বলে তার গিন্নিকে
বেড়ালের সাথে সেও যায় পিকনিকে
আবহাওয়া
মৃদুবায় বইছিল এতক্ষণ যা
রুখে দিল সে বাতাস বিরহী ঝঞ্ঝা
ওয়েদার খুব ভাল থাকবে না কাল
তাতেও পরোয়া নেই উড়ছে সি-গাল
ব্যারোমিটারের নলে দুলছে পারদ
বিনিদ্র রাত জাগে হাওয়া বিশারদ।
বইমেলা
আমার মজুদ ঘরে বড়ই আকাল-
আছে কিছু ‘দু’টাকায় রেশনের চাল’…
তা থেকেই পোয়াটাক ফুটিয়েছি জলে,
বেড়ে দিই ফ্যানাভাত, কবিতার ছলে!
ললাটের লেখা চায় মলাট কদর,
বইমেলা! সই বিলি করে কবিবর।
বন্ধু
জীবনের সাদাখাতা সযত্নে রাখা
তাতে কিছু সবুজের আঁকিবুঁকি আঁকা
তুমি ছিলে যাপনের জমকালো দেবী
বিধাতায় বাদ সাধে, সে বড়ো হিসেবি
তোমার ইচ্ছেরাই তোমার মনিব
আমাকে বন্ধু ভেবো। আপনজনই!…
ইমানদারি
রাজপথে ছুটে চলে ভারী-ভারী গাড়ি
আমার দু’চাকা যান, ‘আদার ব্যাপারী’
ইমানদারির ঠেকা হাত ব্যাগে ভরে
প্যাডেল ঠেলেই চলি সম্বৎসরে
‘ওবে দ্য ট্রাফিক রুল’ সেঁটে নিয়ে পিঠে
বেপরোয়া সাইকেলে, চলেছি সামিটে।
লেখক পরিচিতি : সৌরভ দেববর্মণ
পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগণা জেলার দক্ষিণেশ্বরের বাসিন্দা। কর্মসূত্রে ইছাপুর রাইফেল ফ্যাক্টরির সাথে সংশ্লিষ্ট। নিজের আনন্দে লেখেন। কী হয়, কতোটা হয় সে মূল্যায়ন পাঠকের এজলাসেই ছেড়েছেন🙂
লেখা বেশ ভালো লাগলো। সংযত ও সাবলীল প্রকাশ।
অশেষ ধন্যবাদ আপনাকে🙂
কবিতার পাঠসুখ ফিরে এলো। খুব ভালো লাগলো।
ধন্যবাদ দাদা🙏
Prof, bhalo laglo
Ei thanday phagun batas
প্রফ্!… এই আদরের ডাকটাতেই তো বসন্ত এসে গেছে ফিলিং হ’ল!… অনেক ধন্যবাদ ভাই🙂
বেশ লাগলো লেখাগুলো।
অশেষ ধন্যবাদ জানাই আপনাকে🙏
টুকরো টুকরো হীরের কণা
খুবই উৎসাহব্যঞ্জক পাঠপ্রতিক্রিয়া ভাই!❤️
অসাধারণ।👌
ধন্যবাদ দাদা❤️
নববর্ষ ছড়ার শেষ লাইনটা —-হিসাব মিলাক লেখা যেতে পারে।
বন্ধু ছড়াটি শেষ দুটি শব্দ —- বলেন গালিব লেখা যেতে পারে।কারণ আমাদের ইচ্ছারাই যে আমাদের মালিক এটা তাঁর ভাবনা। রতনদা।
আপনার সুপরামর্শ স্বাগত। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। 🙏
ছড়ার বুলেটে ঝাঁঝরা
পাঠক মন
কলম শিকারী
সৌরভ বর্মন।।