লেখক : আলী ইব্রাহিম
নওশীন,
শহর থেকে যে নদীটা গেছে তোমাদের গ্রামের দিকে
সেই নদীটা পার হলেই বিরাট মাঠ
আর ওই মাঠের প্রান্ত ছুঁলেই তুমি পেতে পাহাড়ের দেখা
আর প্রার্থনা শেষ করে এসেছে যে বনভূমি
তার সীমান্ত পার হলেই তুমি দেখতে নিরাপদ ভূখণ্ড।
আর একটু পথ বাকি ছিল। আর একটু পথ।
দেখ কত প্রজাপতি দহন দলন সহ্য করেই উল্লাস করে
দেখ কত সকাল রোদহীন। কত বিকেল মনছুঁয়ে যাওয়া।
তবু আরেকটি রাত ও সন্ধ্যার অপেক্ষায় ছুটছে দেহতরী।
বোধের বিপণনে তোমার এই প্রস্থান মানবো কি করে!
কত কৃষক বীজের আলোয় বেজে ওঠে। নড়ে ওঠে।
ব্রহ্মপুত্রের মাঝখানে মাঝির যাওয়ারও একটা উপলক্ষ থাকে।
অথচ চিরকুট লিখে তুমি চলে গেলে। একটা চিরকুট লিখে!
মৃত্যু এতটা সহজ হয়? বলো তো! বোকা মেয়ে একটা!
বৃক্ষের সংশয়ে এই ভয়ঙ্কর বিদ্যাভীতি আমি মানতে পারি না।
তোমাকে কেউ শেখায়নি জীবন একটা দীর্ঘ প্রক্রিয়া মাত্র?
এখানে মালভূমি আছে। উপত্যকা আছে। গিরিপথ আছে।
আকাশের প্রান্ত ছুঁতে চাইলে পাখির ডানায় উড়তে হয়।
আর জলসভ্যতা মৃত্যুর মতো এতটা সহজ নয়। শুভ্র নয়!
সমুদ্রের গহীনে মুক্তা ছোঁয়ার কী যে সুখ! তুমি দেখলে না।
নওশীন
আমি কিন্তু আমার মেয়েকে বিদ্যার পাঁচে দাঁড়াতে বলি না।
কেননা নিঃশব্দ এই জলপতন আমি মানতে পারি না।
লেখক পরিচিতি : আলী ইব্রাহিম
সহকারী সম্পাদক, দৈনিক করতোয়া, চকযাদু রোড, বগুড়া, বাংলাদেশ।