কবি: গোবিন্দ মোদক
সন্ধ্যা নামছে দিনের শেষে গ্রাম-বাংলার বুকে,
নদীর ধারে চাঁদ উঠছে পূব আকাশে ঝুঁকে।
মাঠের থেকে ফিরছে রাখাল গোরু নিয়ে ঘরে,
রাখালিয়া বাঁশির সুরে মন যে কেমন করে।
পাখিরা সব ফিরছে বাসায় ফিরছে ঘরে চাষি,
ফুটছে তারা একটি-দু’টি মুখটি হাসি-হাসি।
নদীর বুকে ছলাৎ-ছলাৎ উঠছে ভাঙছে ঢেউ,
জনশূন্য নদীর তীর নেই কোত্থাও কেউ।
একলা মাঝি বাইছে ডিঙি ভাটিয়ালি গান গেয়ে,
দূর আকাশের তারারা সব দেখছে চেয়ে চেয়ে।
গাছে গাছে জ্বালছে আলো জোনাকিরা যতো,
ধীরে ধীরে চাঁদ উঠছে সোনার থালার মতো।
মন্দিরে ঐ উঠছে বেজে শঙ্খ কাঁসর ঘন্টা,
মসজিদের ঐ আজান শুনে পবিত্র হয় মনটা।
গাজনতলায় কথকঠাকুর করছে কথকতা,
দুলছে হাওয়ায় ঝিরিঝিরি অশ্বথ্ গাছের পাতা।
চণ্ডীতলায় একলা পিদিম দিচ্ছে যে পাহারা,
বারোয়ারির ঘরে চলছে নাটকের মহড়া।
দাওয়ায় বসে খোকা-খুকুকে গল্প শোনায় মা,
ভূত-পেত্নি-দত্যি-দানো আজব রূপকথা!
মাদোলের বাজনা তখন বাজছে কোথাও দূরে,
গ্রামের বুকে সন্ধ্যা নামছে রূপকথার-ই সুরে।
ছবি: প্রণবশ্রী হাজরা
লেখকের কথা: গোবিন্দ মোদক
ছড়াকার-কবি গোবিন্দ মোদকের জন্ম 05-01-1967, নদিয়া জেলার আড়ংঘাটা-য়।শিক্ষাগত যোগ্যতা:- M.Com(C.U.)। পেশা:- প্রথম জীবনে অধ্যাপনা, পরবর্তীতে ডাক বিভাগের কর্মচারী।বাণিজ্য বিভাগের ছাত্র হওয়া সত্বেও ছোটবেলা থেকেই সাহিত্যের প্রতি ঐকান্তিক অনুরাগে হাতে তুলে নিয়েছেন কলম। কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ, রম্য রচনা, উপন্যাস ইত্যাদি লিখলেও ছোটদের জন্য ছড়া-কবিতা ও গল্প লেখার মধ্যেই খুঁজে পান অধিকতর তৃপ্তি। প্রচারবিমুখ আত্মমগ্ন এই মানুষটি লেখালিখি ছাড়াও ভালোবাসেন:- বই পড়া, গান শোনা, পত্রিকা সম্পাদনা, অনুষ্ঠান সঞ্চালনা, বেড়ানো, সাহিত্য বিষয়ক নির্ভেজাল আড্ডা, এলোমেলো ভাবনায় নিমগ্ন হওয়া। অপছন্দের বিষয়:- যে কোনও ধরনের রাজনীতি।
প্রকাশিতব্য গ্রন্থ:- পদ্য ভরা আমার ছড়া, ছন্দ ভরা আমার ছড়া, রূপকথার রূপ-কথা, ভয়ঙ্কর প্রতিশোধ, গুপ্তধনের সন্ধানে, জীবনের রোদ-রং ইত্যাদি।