পুনর্জন্ম

লেখক : রাজীব চক্রবর্ত্তী

হয়ত কয়েক দশক পর
এ শতাব্দী আধবুড়ো হলে,
একদিন মিশে যাব
মাটির গভীরে, অনন্ত জলে।

মিলিয়ে যাওয়ার আগে
শেষ অস্থি চিহ্নখানি হয়ত দেখবে চেয়ে
তখনও নিদারুণ ক্ষোভে,
ফুঁসছে জন্মভুমি বন্দিনী হয়ে।

ভুখা পেটে চিরজাগ্রত চিতা,
ছিন্ন বস্ত্রে শীতের আঁচড়,
সব ব্যথা ভুলে বিদ্রোহী মন
খুঁজে নেয় আপন শিকড়।

অভিমান জ্বালা নিয়ে বুকের আগুন
সব কিছু ভেঙে দিতে চায়,
অদৃশ্য বিভেদ বেড়ার
মিথ্যে আবরণ খসে যায়।

রঙ্গমঞ্চে কুশীলব দেখেছিল সবই,
অভিনয় দিনে।
অবহেলার নিরুত্তাপে
পারেনি নিতে আগুন চিনে।

জ্বলেছে নগর, পুড়েছে দেবালয়,
কেঁপেছে রাজপথ অস্থির উত্তাপে।
কেঁদেছিল প্রাণ, তবু নিশ্চিন্ত জীবন
দগ্ধ হয়নি জীবনের সন্তাপে।

এ আমার ফেলে আসা জীবনের পাপ,
মৃত্যুর অভিশাপ ছুঁয়ে
জেগে থাকে অস্থি পিঞ্জর শাখায়
অনুতাপ সয়ে।

নেই অলীক পরজন্ম অভিলাষ,
অমরত্ব আকাঙ্খাহীন
নশ্বর দেহের শেষ চিহ্ণটুকু
চুকিয়ে যেতে চায় জীবনের ঋণ।

পড়ে থাকা কণাটুকু মুছে যেতে যেতে
জ্বলে যাবে প্রায়শ্চিত্ত জ্বালায়,
আগুন জ্বালবে বলে আবার উঠবে জেগে,
ভর করে ফিনিক্স ডানায়।

লেখকের নিজের কন্ঠে শুনুন কবিতাটি:


লেখক পরিচিতি : রাজীব চক্রবর্ত্তী
জন্ম ১৯৭০ সালের ৩০শে ডিসেম্বর, কলকাতার সিঁথিতে। পেশায় কেন্দ্রীয় সরকারী কর্মচারী। দৈনন্দিনতার ক্লান্তি কাটাতেই মূলত: কলম ধরা। বেশ কয়েকটি লিট্ল ম্যাগাজিনে লিখেছেন গল্প, কবিতা। ২০১৭ সালে প্রকাশিত "সংশ্লেষ" নামক গদ্য সংকলনে স্থান পেয়েছে তাঁর মুক্তগদ্য। ঐ একই বছরে সোনারপুর কাব্যমঞ্চ আয়োজিত স্বরচিত কবিতা প্রতিযোগিতায় তৃতীয় স্থান লাভ করেন তিনি। ২০১৯ সালে প্রকাশিত "অন্য গদ্য" গ্রন্থে স্থান পেয়েছে তাঁর গদ্য। জীবনের বিবিধ অনুভূতি, বাস্তবতাকে ছন্দে বাঁধার প্রয়াসে তাঁর কবিতাচর্চা।

শেয়ার করে বন্ধুদেরও পড়ার সুযোগ করে দিন

3 Comments

  1. হারাধন চক্রবর্তী

    যবে থেকে লেখক আমার ফেস বুক বন্ধু, ওর সব লেখা আমি মন দিয়ে পড়ি। অত্যন্ত বলি ষ্ঠ লেখক এবং কবি। পরিচ্ছন্ন ভাবনা, নিত্যনতুন উপাদানে পরিপূর্ণ আমার ভীষণ ভালো লাগে। লেখকের শ্রীবৃদ্ধি কামনা করি।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to Top
error: লেখা নয়, লিঙ্কটি কপি করে শেয়ার করুন। ধন্যবাদ।