লেখক : সুঞ্জনা
রাস্তায় লোকে মার খাচ্ছে, আমি পাশ কাটিয়ে চলে যাচ্ছি।
পাড়ার লোক মার খাচ্ছে, আমি না দেখার ভান করে চলে যাচ্ছি।
একজন উপকারী লোক মার খাচ্ছে, এবার আমি ‘আহা রে’ করার জন্য একটু দাঁড়াচ্ছি,
কিন্তু প্রতিবাদ করছি না।
দিনের পর দিন প্রভাবশালী ‘ছোট নেতা’ অসভ্যতা করে যাচ্ছে,
এক অজানা ভয়ে চুপ করে আছি।
তারপর একদিন বন্ধুকে টেনে নিয়ে গেল, দেখলাম—বা হয়ত দেখেও না দেখার ভান করলাম।
একদিন আমাকে, যেখানে প্রহরী হয়ে দাঁড়িয়ে থাকার কথা ছিল,
সেখান থেকে বেরিয়ে যেতে বলল।
আমি বেরিয়ে গেলাম। যদিও এমনটা কথা ছিল না, তবুও বেরিয়ে গেলাম।
তারপর হঠাৎ কে যেন মার্টিন নিম্যোলারের কবিতা কানে আওড়াতে লাগল।
আমি ধর্ষিত হতে হতে যখন মৃত্যুকে একদম স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি,
কে যেন বলে যেতে লাগল কবিতাটা,
আমিও তার সঙ্গে সঙ্গে বলতে থাকলাম—
আমি কমিউনিস্ট নই, শ্রমিক নই, ইহুদি নই, ক্যাথলিক নই, খুনি নই, দেশদ্রোহী নই, ধর্ষক নই, অপরাধী নই…
আমি বলেই যাচ্ছি, এক সময় জীবনের সবটুকু জোর নিংড়ে নিয়ে চিৎকার করতে থাকলাম।
কিন্তু কেউ শুনল না, কারণ শোনার মত আর কেউ বেঁচে নেই।
এখন রাষ্ট্রই ধর্ষক।
লেখক পরিচিতি : সুঞ্জনা
১৪০ কোটির দেশে মানুষই আমার একমাত্র পরিচয়