আলোর সন্ধানে

লেখক : শুভাণ্বিতা রায়

বছর তিরিশের অনির্বাণ দত্ত।খুঁজতে খুঁজতে চলে এলেন নিষিদ্ধ পল্লীতে।রাত তখন দশটা।পল্লীর রাস্তার ধারে, চায়ের দোকানে, ঘরের বাইরে সারি সারি করে লেহেঙ্গা পরিহিতা মেয়েরা দাঁড়িয়ে। প্রত্যেকেরই চোখে মুখে এমন লোলুপ দৃষ্টি যেন পুরুষকে আকর্ষণ করে।অনির্বাণ অর্থাৎ অনির মন ভালো ছিলো না। সে তাদের দিকে এগিয়ে এলো। একটি মেয়ে তার হাত ধরে হ্যাঁচকা টান দিয়ে নিজের দিকে টেনে এনে বললো “খুশি করতে পারি?”

অনি “হুঁ” বললো।

মেয়েটা অনিকে ধরে নিয়ে যেতে থাকে। অনি দেখে গলির পর গলি। যেন রাস্তার শেষ নেই। মিনিট পনেরো হাঁটার পর মেয়েটা তাকে একটি বাড়িতে নিয়ে আসে। সেই বাড়িতে নিয়ে এলো তাদের সর্দারের কাছে। মেয়েটি তার সর্দার দিদিকে বলে “আজ ভালো খদ্দের পাওয়া গেছে।”

“বসতে বল এখানে।” সর্দার মেয়েটি বলার মুহূর্তেই মেয়েটি তাকে বসিয়ে দিয়ে চলে যায়।

সর্দার মেয়েটি বলে “কেমন মাল চাই?”

মাল কথাটি শুনেই অনি রাগে ফেটে পড়ে। কোনোদিন সে পতিতা পল্লীতে আসেনি। তার একটি ছোট অফিস ছিল। স্ত্রী কে নিয়ে সুখে দিন কাটত। নিয়তি যেন আজ এই পল্লীতে নিয়ে এলো। রাগ চাপা রেখে বললো “ভালো একেবারে নতুন মাল একদম।”

সর্দার বলল “ নতুন মাল এই মুহূর্তে পাওয়া যাবেনি। সব ঘর ভর্তি । একটা ঘর খোলা আছে, ওখানে যেতে পারেন।” অনি হুঁ করল। সরদার বললো “কতক্ষণের জন্য?”

অনি বললো “কাল ভোর পর্যন্ত। রেট একটু বেশি দেব।” সর্দার অবাক হলো। কোনো ছেলে এই রকম করেনি। রেটের কথা শুনে তার লোভ হলো। অনি রেট মিটিয়ে দেবার পর সর্দার ডাকলো “ও পোনা! খদ্দেরকে নিয়ে যা তো মালটার ঘরে। পোনা এসে নিয়ে যায়। অনি যেতে যেতে দেখে সমস্ত ঘরের দরজা বন্ধ। প্রতিটি ঘরের দরজা ভেদ করে চাপা গোঙানির আওয়াজ কানে আসছিল। অনি শিউরে ওঠে। নির্দিষ্ট ঘরে পোনা অনিকে এনে বলে “এই মালটার দায়িত্ব নাও।”

পোনা বিদায় নেয়।

ঘরে থাকা মেয়েটি দোর বন্ধ করে দেয়। অনি বিছানায় বসে বিশ্রাম নিতে থাকে। মেয়েটি ছেলেটির উপর পড়তে ছেলেটি বলে “ঠিক করে বসো তো। খবরদার! গায়ে পড়ো না। আজ রাতের জন্য এখানে এসেছি। অনেক সময় আছে তোমার। সোজা হয়ে বসো। কাল সকালে মুক্তি পাবে।”

মেয়েটি বলে উঠে “বাবা এতক্ষণ! কাওকে দেখিনি এত সময় দিতে।”

অনি বলে “আমি বিবাহিত।”

মেয়েটি বলে “ তো কি হয়েছে? খুশি করে দিমু।”

অনি রেগে তার গালে চড় লাগিয়ে দেয়। মেয়েটির চোখে জল আসে না। নির্লিপ্তের মতন চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকে। অন্য মেয়ে হলে দু’গাল বেয়ে পানি ঝরতো।

অনি বলে “একটা গল্প বলব। এখানে শান্ত হয়ে বসো।”

“গল্প! ” শুনেই মেয়েটি হেসে ফেলে। “কি হবে পতিতাদের গল্প? কে শুনে? আসে খুশি হয়ে চলে যায়। আমরা পতিতাই থেকে যাই।” মেয়েটি শান্ত হয়ে বসে বলল।

এই সময় অনি সিগারেটের সুখটান দিতে লাগলো। কিছুটা শান্ত হয়ে বললো “আপনার নাম কী?”

মেয়েটি বললো “কেন? নাম নিয়ে কি জলে ধুবেন?”

“না। আপনার নাম আমার দরকার নেই। আমি আমার স্ত্রী কে খুঁজতে এসেছি।” অনি বললো।

মেয়েটি কৌতুহলের সাথে বললো “আপনার স্ত্রী এখানে আছে আপনি জানলেন কীভাবে?”

অনি বললো “তুমি আমাকে সাহায্য করতে পারো? আমি সবই বলবো।” মেয়েটি বললো “হ্যাঁ পারি।” অনি বললো “কাওকে বলো না এইসব কথা। আমি এখানে কি জন্য এসেছি তা তুমি ভালো করেই জানো। এইজন্য বেশি সময় নিয়েছি। তোমার সর্দার দিদি এই লোভে পড়ে বেশি রেট নিয়েছে। কাল সকালের পর আর দেখাও হবে না। আবার কবে আসবো তাও ঠিক নেই।”

এবার অনি এলো আসল কথায়। অনি বললো “আমি অনির্বাণ। একটি কোম্পানিতে কাজ করি। আমার নতুন বিয়ে হয়েছিল এক বছর আগেই। আমার স্ত্রীর নাম তৃণা। বিয়ের পর থেকে বেশ সুখেই দিন কেটে গিয়েছিল। একদিন আমার অফিসের সহকর্মীর পারিবারিক অনুষ্ঠান থেকে আমার স্ত্রীকে নিয়ে রাতে বাড়ি ফিরছিলাম নিজের বাইকে করে। একটা রাস্তায় কয়েকজন দুষ্কৃতী আমার বাইক আটক করে। আমার হাত পা মুখ বেঁধে এমন মার দেয় আমি অজ্ঞান হয়ে যাই। অজ্ঞান হবার আগে আমার বউটাকে কোথাও জোর করে টেনে নিয়ে যেতে দেখি। তারপর আর কিছুই মনে ছিল না। জ্ঞান ফিরতে আমি নিজেকে পরেরদিন হাসপাতালে আবিষ্কার করি। কিন্তু বউকে না পেয়ে মন খুব খারাপ হয়ে গিয়েছিল। ধীরে ধীরে সুস্থ হবার পর অনেক খোঁজাখুঁজি করেও খুঁজে পাই না। শেষে থানায় নিঁখোজ ডায়েরি করি। কোনো লাভ হয় নি। বউকে খুঁজে না পেয়ে আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম।”

বলতে বলতে অনি কাঁদতে থাকে। কেঁদে কেঁদে বলে “প্রতিদিন স্ত্রীর কথা ভেবে কাঁদি। স্ত্রী-হীন সুখের সংসার যেন একটা কিছুর অভাব মনে হতো। এইভাবে অনেক মাস চলে যায়। একদিন অফিস থেকে ফেরার পর যেই একটু বিশ্রাম নিতে যাচ্ছি। ঠিক সেই মুহূর্তে একটি অচেনা নাম্বারে ফোন আসে। সন্দেহ হওয়া সত্ত্বেও ফোন রিসিভ করি। ও প্রান্ত থেকে হ্যালো শুনে মনে হলো চেনা চেনা গলা। ও প্রান্ত থেকে তখন বলতে থাকে আমি তৃণা। কারোর ফোন থেকে বলছি। সোনাগাছির নিষিদ্ধপল্লীতে আছি রমা নাম নিয়ে। প্রতিদিন হায়েনারা আমার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। আমি আর পারছি না এখানে থাকতে। আমাকে উদ্ধার করো। এই বলে ফোনটা কেটে দেয়। আমিও সেই নাম্বারে যোগাযোগ করার চেষ্টা করি । আর ফোনে পাওয়া যায়নি তাকে। ফোন নাম্বারটিও অচল।”

মেয়েটি শুনে মনে খুব কষ্ট পায়। ভাবে ছেলেরাও ভালো হতে পারে। কত ছেলে আসে তাকে ভোগ করে চলে যায়। এমন ছেলে যে থাকতে পারে সে আশাও করেনি।মেয়েটি বলল “আমি সুতিপা দাস। এখানে আমার নাম বীণা। আমি এখানে তিন বছর আছি। তবে রমা নামের কোনো মেয়ে এখানে নেই। খোঁজার চেষ্টা করবো। পেলে আপনাকে জানাবো। কিন্তু আমি জানাবো কীভাবে? আপনি প্রতিদিন আসুন।”

অনি বললো “আমার আসা সম্ভব নয়। আমি তোমাকে ফোন দিচ্ছি। সাবধানে রাখো। ধরা পড়লে সব শেষ। দেখো! এইটা আমার নাম্বার। খুঁজে পেলে এই নাম্বারে ফোন করে আমাকে জানাবে। কাওকে এই খবর ও ফোনের কথা জানাও না।”

বীণা বললো “আমার উপর বিশ্বাস রাখুন। খুঁজে পেলে নিশ্চয়ই আপনাকে ফোনে জানাবো।” দেখতে দেখতে সকাল হয়ে যায়। অনিও বিদায় নেয়। বীণাও নিজের চরকায় তেল দেয়।

এইভাবে কেটে যায় পুরো একমাস।একদিন সকালে বীণা ফোন করে অনিকে বলে “হ্যালো! অনিদা! আপনার স্ত্রীকে খুঁজে পাওয়া গেছে। রমা নাম?”

অনি বললো “হ্যাঁ।”

বীণা বলল “আমার এই বিল্ডিংয়ের আগের তিন নাম্বার বিল্ডিং এ সে আছে।”

অনি বললো “জানলে কীভাবে ?”

বীণা বললো “ওর বিল্ডিংয়ে জল ছিল না। একজনের সাথে আমাদের বিল্ডিংয়ে এসেছিল জল আনতে। বেশিক্ষণ ছিল না। তার সঙ্গীকে আমি চিনতাম। তাকে জিজ্ঞাসা করেই তার নাম জানতে পারলাম। ধরা পড়ার ভয়ে ফোনে বেশি কথা বলতে পারছি না।সব কথা সামনে আলোচনা হবে। এখন রাখছি।”

অনি খুব খুশি হলো। আর দেরি না করে অনি পুলিশে খবর দেয়। নিষিদ্ধপল্লীতে আবার চলে যায়। বীণাকেও ফোনে জানিয়ে দেয় সেখানে যাওয়ার কথা। সেখানে গিয়ে রমার বিল্ডিং খুঁজে পায়। সেই বাড়ির সর্দারকে বলে “আমি রমাকে খুশি করাতে চাই।”

সর্দার বলে “এখন তো হবে না। সন্ধ্যা বেলায় পাবেন।”

অনি বলে “আমি ততক্ষণ বসবো। রমাকে ছাড়া আর কাউকে খুশি করাতে চাই না।”

এদিকে সন্ধ্যা হয়ে যায়। এবার অনির পালা পড়ে। অনি যেতে যেতে দেখে রমার ঘর থেকে এক ছেলেকে বেরিয়ে যেতে। এরপর অনি ঢুকে। অনি ঢুকে দোর লাগিয়ে দেয়, জানলার দিকে মুখ করে রমা কাঁদছে। উন্মুক্ত ব্লাউজে পিঠ স্পষ্ট দেখা যায়। পিঠে নখের আঁচড়ের দাগের ঘা শুকিয়ে গেছে। অনি আস্তে করে ডাকলো “রমা! ” চেনা গলা শুনে রমা ঘুরে দেখে অনিকে। রমা অনিকে চিনতে পেরেছিল। রমার মুখের যা অবস্থা অনি রমাকে দেখে চিনতে পারলেও খুব কষ্ট পেয়েছিল। সর্বাঙ্গে নখের আঁচড় ও মুখে দাঁতের কামড়ের দাগ। হিংস্র পশুরা তার মাংস খুবলে নিয়ে গেছে। রমা অনিকে দেখে জড়িয়ে কাঁদতে থাকে। অনিও তাকে জড়িয়ে কাঁদতে থাকে। অনি বলে “আস্তে বলো। আমি তোমাকে উদ্ধার করতে এসেছি। পুলিশেও খবর গেছে।” রমা সাহস করে বলতে থাকে “একদিন সকালে একজন ছেলে আমাকে ভোগ করে চলে যাবার পর দেখি ফোন সঙ্গে নিয়ে যেতে ভুলে গিয়েছিল। ফোনটা বিছানায় ছিল। আমি ফোনটা পেয়ে মনে সাহস পেলাম। দরজা লাগিয়ে তোমাকে ফোনে সব জানালাম। এদিকে দরজা লাগানো দেখে বাকি মেয়েদেরও সন্দেহ হয়। তাদের একজন বন্ধ জানালার ফাঁকে উঁকি মেরে দেখে যে আমার হাতে ফোন ছিল। মালিকের কাছে নালিশ যাবার আগেই আমি তোমাকে কল করে সমস্ত কললিস্ট মুছে দিয়েছিলাম। এরপর মালিক এলে দরজা ভেঙে প্রবেশ করেন। ফোন ছাড়িয়ে নিয়ে আমাকে এত অত্যাচার করেন। প্রতিদিন একজন হায়েনার বদলে তিনজন হায়েনা আমাকে খুবলে নিয়েছে।”এই বলে কাঁদতে থাকে।

অনি বলে “আর কেঁদো না রমা। এর আগে একবার আমি এখানে এসেছিলাম। তোমাকে খুঁজে না পেয়ে একটা মেয়েকে ভার দেই তোমাকে খুঁজতে। সে খুঁজে পেয়ে আমাকে জানায়। তোমাদের এই পরের বিল্ডিং এ আছে।যার নাম বীণা। চেনো তাকে ?”

রমা বললো “ না”।

“সে না থাকলে তোমাকে আমি পেতাম না।” অনি বললো।

একটু পরেই দরজায় ধাক্কা দেবার শব্দ। অনি দরজা খুলতেই বীণাকে দেখে বললো “এ কী! বীণা তুমি এখানে?”

“হ্যাঁ। সঙ্গে অনেকে আছেন” বীণা বললো। অনি ভালো করে দেখলো বীণার পিছনে পুলিশের হেড বাবু, কয়েকজন মেয়ে, তাদের সর্দার, কয়েকজন পুরুষ।

পুলিশ বীণাকে নিয়ে ঢুকলেন ।রুমেই শুরু হলো জেরা পর্ব।

হেড বাবু রমাকে বললেন “তুমি এখানে এলে কি করে?”

রমা : গাড়িতে এলাম

হেডবাবু : কি রকম গাড়ি?

রমা: চার চাকার সাদা গাড়ি।

হেডবাবু : গাড়ির নাম্বার জানো?

রমা : না।

হেডবাবু : কত বছর আগে এলে?

রমা : একবছর হবে।

হেডবাবু :কার সাথে এলে?

রমা : আসিনি আমাকে জোর করে এখানে আনা হয়েছে।

হেডবাবু : করা এনেছে?

হেডবাবুর প্রশ্ন শুনে রমা কয়েকজন পুরুষের দিকে তাকালো।রমার এই ইঙ্গিতপূর্ণ দৃষ্টি হেডবাবুর চোখে এড়িয়ে যায়নি। রমা একজন ছেলের দিকে আঙ্গুল তুলে বলল “এই ছেলেটা।”

ছেলেটি ভয়ে ইতস্তত বোধ করতে থাকে। আঙুল তুলে বলে “এই মেয়ে তোর খুব অস্পর্ধা! মিথ্যে কথা বলার সাহস পাস কোথায়?”

রমা : না বড়বাবু আমি সত্যি বলছি।সেই দিন অনুষ্ঠান থেকে বরের বাইকে ফিরছিলাম। মাঝরাস্তায় এই ছেলেটা ও তার সঙ্গে কয়েকজন আটকে ছিল। কয়েকজন ছেলে আমার বরের মাথায় ভারী কিছু জিনিস দিয়ে আঘাত করে। আঘাতে বর অজ্ঞান হয়ে যায়। আমাকে কয়েক জন টেনে নিয়ে যায় পাশের পাটক্ষেতে। চলে নারকীয় পাশবিক অত্যাচার। অত্যাচারের পর ক্ষেতের ছোট্ট ঘরে আটকে রাখা হয়। পরদিন সকালে হাত মুখ বেঁধে সাদা রঙের চার চাকার গাড়িতে তুলে নিয়ে আসা হয়েছিল এখানে। এখানে একটা রুমের মধ্যে রাখা হয়। বুঝতে পরি আমি বিক্রি হয়ে গেছি। আমি পালানোর চেষ্টা করি। এই ছেলেটা ও তার মালিক আমাকে ধরে পেটাতে থাকে। অত্যাচারের মাত্রা খুব বেড়ে যায়। এখানে আনার পর খেতে দেওয়া হয়নি। তিনদিন পর খেতে দেওয়া হয়। একবেলা খেতে পাই। খাবারও খুব নিম্ন মানের। সারাদিন কত পুরুষের লালসার শিকার হই। প্রতিবাদ করলেই খুব প্রহার করা হতো। এই ছেলে আর মালিক মিলে আমাকে অত্যাচার করে…

মালিক (মেয়েদের সর্দার) : ও নিজের ইচ্ছায় এসেছে।

রমা মালিকের গালে চড় লাগিয়ে বলে : একদম মিথ্যে কথা বলবেন না।

বীণা অনেকক্ষণ ধরে তাদের গল্প শুনছিল। তারপর নিজেই বলতে থাকলো “ এই ছেলেটা প্রেমের মিথ্যা অভিনয় করে আমাকে এখানে নিয়ে আসে।”

হেডবাবু অনেক কিছুই শুনলো।তারপর মালিককে বললো “এই ছেলেটাকে চেনো?”

মালিক : হ্যাঁ ।এখানেই কাজ করে। মেয়ে জোগাড় করে আনে।

হেডবাবু অনেক কিছুই বুঝলো।বলল “ পুলিশ! পুলিশ! এদের সক্কলকে হাতকড়া বেঁধে থানায় নিয়ে যাও”।

এরপর হেডবাবু বললেন “এই পাড়ার পুরো পাঁচটা বিল্ডিংয়ের মেয়েদেরকে উদ্ধার করতে পেরেছি।তারপর এখানে এসেছি ।এই রাতেই পঁচিশ জন মেয়েকে উদ্ধার করলাম।প্রত্যেকেরই বয়স আঠারো থেকে ত্রিশের মধ্যে।আপনারা সাহায্য করায় আমি কৃতজ্ঞ।”

বীণা বলল “আমি বুঝেছি অনেক ছেলে মেয়েদেরকে ভুলিয়ে এই অন্ধকার জগতে টেনে এনে।আবার অনেক ছেলে অন্ধকার জগৎ থেকে মেয়েদেরকে উদ্ধার করে আলোর পথে নিয়ে যায়।অনির মতন মানুষের জন্য আজও পৃথিবীটা খুব সুন্দর। তাই আমি অনিকে সাহায্য করলাম। আমি সমাজের মূলস্রোতে ফিরে আসতে চাই। আলোর পথে ফিরতে চাই।

অনি বীণাকে বললো : বউকে খুঁজে পেলাম। তোমার মতন সাহসী মেয়েদের সাহসিকতাকে কুর্নিশ জানাই।

হেডবাবু বলল : চলি আমরা।

বাইরে তখন ভোরের আলো ফুটে উঠেছে।হেডবাবুর গাড়িতে অনির্বাণ, রমা, বীণা সবাই একসঙ্গে যাচ্ছে।পিছনে পড়ে আছে অন্ধকারময় জগৎ।


লেখক পরিচিতি : শুভাণ্বিতা রায়
পূর্ব মেদিনীপুরে বাড়ি।শিক্ষকতা করি।গল্প ও কবিতা লিখতে ভালোবাসি।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to Top
error: লেখা নয়, লিঙ্কটি কপি করে শেয়ার করুন। ধন্যবাদ।

লেখা আহ্বান - বিস্তারিত জানতে ছবিতে ক্লিক করুন