বেদনাদায়ক

লেখক : নাঈমুল হক

“কাপড়গুলো ভিজে গেল। দৌড় দে।”
টিনের চালে বৃষ্টির শব্দ শুনে বলে ওঠেন মা। দৌড়ে গিয়ে উঠোনে শুকোতে দেওয়া শার্ট, প্যাণ্ট, ফতুয়া, লুঙ্গি ইত্যাদি সরাচ্ছি, এমন সময় হাম্বা করে ডাক ছাড়ে গরুটা। কোরবানির গরু, গাছের সঙ্গে বাঁধা। ভিজে জবুথবু হয়ে যাচ্ছে। আহা রে বেচারা! তখনই প্রচণ্ড শব্দে বাজ পড়ে। আমি দ্রুত ফিরে আসি ঘরে। বারান্দায় মা দাঁড়িয়েই ছিলেন। আমি আসতেই কাপড় নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।
“দেখলি! আর সময় পেল না বৃষ্টি আসার! দিলো তো ঈদের বিছানার চাদরটা একদম ভিজিয়ে।”
মায়ের কথায় আমিও দ্রুত বের করি আমার ধুতে দেয়া ঈদের পাঞ্জাবিটা।
“বলেছিলাম মা, নতুন কাপড় ধুতে হয় না। দিলে তো কাপড়টা ভিজিয়ে।”
বিষণ্ণ মনে আমি আর মা যখন কাপড়গুলো রুমে ফ্যানের নিচে ছড়িয়ে দিচ্ছি, তখন বাইরে ঘন ঘন বাজ পড়ছে। শীতে কাঁপতে থাকা গরুটার হাম্বা ডাক তাই কেউ শুনছে না। নির্বোধ প্রাণীটি বোঝে না, কেন বোধশক্তিসম্পন্ন মানুষের কাছে জীবিত অনুভূতিশীল প্রাণীর চেয়ে জড় অনুভূতিহীন বস্তুর ভিজে কষ্ট পাওয়াটা অনেক বেশি বেদনাদায়ক।


লেখক পরিচিতি : নাঈমুল হক
লিখতে ভালবাসি। আমার আর গল্পঃ আছে প্রকাশিত, এই নামে বিগত বছর, ভালো লাগলে জানাবেন।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to Top
error: লেখা নয়, লিঙ্কটি কপি করে শেয়ার করুন। ধন্যবাদ।

দীপায়ন ৩ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে ছবিতে ক্লিক করুন