বৃষ্টির সাথে প্রাণীর সম্পর্ক

লেখক : ঐশী বসাক

বৃষ্টি তার দূত রূপে অম্বুবাহকে ধরাতলে পাঠাল। অম্বুবাহ তার স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে নভোমণ্ডলকে অন্ধকারাচ্ছন্ন করে তুলেছে। তৎক্ষণাৎ বুঝতে আর বাকি রইল না যে, বৃষ্টি নিজের সত্তায় ফিরতে চলেছে। এমন সময় সেই ক্ষণপ্রভা তার রূপ দেখিয়ে বারিধারাকে তথা বৃষ্টিকে স্বাগত জানাল। যেন মনে হ’ল, পুষ্পভূষণে ভূষিত হয়ে প্রকৃতি তার আধিপত্য বিস্তার করেছে—

অম্বর যখন মেঘাচ্ছন্ন
বর্ষিল তখন বারি,
প্রকৃতির কোলে উঠল হেসে 
প্রসূন সারি সারি।

পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ প্রাণীর মর্যাদা পেয়েছে মানুষ। কিন্তু, সব মানুষ কি এই বৃষ্টির মূল্য বুঝতে সক্ষম? মানুষ বড়ই বিচিত্র স্বভাবের প্রাণী। একদলীয় বৃষ্টির সাথে দ্বন্দ্ব করে প্রশ্ন করে – কেন সে অসময়ে চলে এল? অপরদিকে অন্যদলীয় প্রফুল্লিত তথা তোষিত হয়ে বৃষ্টিকে আপন করে নেয়। বৃষ্টির সাথে কিছু মানুষ যেমন আপোষ করে নেয়, অন্যদিকে কিছু মানুষ আবার জীবনের প্রথম অথবা শেষ আমোদেটুকু খুঁজে পায়। প্রফুল্লিত হয়ে আবার কেউ কেউ নিজের ভেতরের শিল্পী সত্ত্বাকেও প্রকাশিত করে।

আবার, অপরদিকে পশুপাখিদের জন্য বৃষ্টি স্বল্প উৎসাহের – আনন্দ নেই বললেই চলে। তারা নির্বাক হওয়ায় নিজেদের কষ্ট-অস্বস্তি-অসহায়তা প্রকাশ করতে অক্ষম। তবে, ব্যতিক্রমও রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, আমাদের সকলের খুব প্রিয় একটি পক্ষী ময়ূর। বৃষ্টিই তাদের সঙ্গমের একমাত্র উপকরণ হিসেবে পরিচিত। এই বৃষ্টিই ময়ূরের সঙ্গম ও নৃত্যের সঙ্গে যেন ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তবে, এই নির্বাক প্রাণীগুলো তথাকথিত “শ্রেষ্ঠ প্রাণী মানুষ”-এর থেকে বেশি বিশ্বস্ত এবং তাদেরও একটি প্রাণ রয়েছে। তাই এই বৃষ্টিমুখর দিনগুলোতে পক্ষী তথা পশুদের সহিত মানুষের কাছে মানুষের মত আচরণটাই কাম্য, মানুষরূপী পশুর মত নয়।

অতএব, মানুষ হোক, পশু হোক, কিংবা পাখিই হোক না কেন, সবার নিজেদের চরিত্রানুযায়ী বৃষ্টির গল্পটা অন্যরকম। কারও সুখের তো কারও কষ্টের। তাই চরিত্র যেমনই হোক না কেন, সকলের জীবনেই বৃষ্টির গুরুত্ব অপরিসীম।


লেখক পরিচিতি : ঐশী বসাক
ঐশী বসাক

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to Top
error: লেখা নয়, লিঙ্কটি কপি করে শেয়ার করুন। ধন্যবাদ।

মাসিক দীপায়ন প্রতিযোগিতা

মাসিক দীপায়ন পুরস্কার pop up