ঈশ্বরত্ব-দিব্যত্ব-বুদ্ধত্ব

লেখক : প্রভঞ্জন ঘোষ

মন্দিরের পীঠে হাত ছুঁয়ে দ্যাখো
ঈশ্বরত্ব আসে না-
যত না আসে
মানুষের মাথায় হাত ছোঁয়ালে।

মসজিদের বুকে হাত ছুঁয়ে দ্যাখো
দিব্যত্ব আসে না-
যত না আসে
মানুষের মাথায় হাত ছোঁয়ালে।

গীর্জার পীঠে হাত ছুঁয়ে দ্যাখো
বুদ্ধত্ব …

কাঁচের মন্দির

লেখক : প্রভঞ্জন ঘোষ

মা আছেন
বাবা ও
পুত-পবিত্র নদী আছে,
সংশ্লিষ্ট আবাস ডিঙিয়ে
সে এক আনন্দনিকেতন!
যখনি আসি
কি এক মোহে
হাত চলে যায় চরণামৃতয়:
শরীরের প্রতিটি কণা পবিত্র হয়
চক্ষু নির্মল হয়
অনিন্দ্য কাঁচের
নান্দনিক ঘেরে!
অতি মনোরম …

পুঁজি

লেখক : প্রভঞ্জন ঘোষ

চোখের কাছে যাই
চোখ বলে কি চাই?
হাতি-ঘোড়া, চিরুনি, দেশলাই
সোনা-রুপো, পুতুল, বাঁধানো বই
ইত্যাদি-ইত্যাদি-

পায়ের কাছে যাই
পা বলে কি চাই?
পাহাড়-পর্বত, রাজপথ
উচ্ছল নদী-প্রান্তর
ঘর-বারান্দা, ছাদ, সিঁড়ি,
দুব্বো দিতে পারি,
পিচ, ঝামা, বাতা-বাখারি
ইত্যাদি-ইত্যাদি-…

পুষ্প, সংশয় ও প্রচ্ছন্নে

লেখক : প্রভঞ্জন ঘোষ

পুষ্প

নিশ্চুপ-নীরব
শান্ত-সমাহিত প্রকৃতি
বুদ্ধবৎ,
তাকে তুমি যতই ধমক্ দাও
প্রত্যাঘাত নেই,
নেই কোন দ্বিরুক্তি
দন্দ্ব-কোঁদল
বিপরীত, দিয়ে যায় নৃত্যের দোল।

পেলব, চিকন,
নমনীয়,
ফুরফুরে তনু:
তাকে তুমি যত ডলো
কুটি করো অবয়ব সবি’
বিনিময় দিয়ে …

ভুজুংভাজুং

লেখক : প্রভঞ্জন ঘোষ

আজও চলে বুজরুকি
গোষ্টীপ্রথার গোঁয়ার্তুমি
এখনও হায় গেল কি?

আর কতদিন সময় দেবেন
উদারমূর্তি ভগবান
আজও সমান চৌর্যবৃত্তে
দস্যু-ডাকাত মূর্তিমান- – –

একলা খাবার দিনগুলো
(ফলমুল-দুধ-মাখন-ঘৃত)
আজও কি হায় শেষ হল!

আর কতকাল রশ্মি টেনে
এইভাবেতে …

চাষাভুষা ও নান্দনিক

লেখক : প্রভঞ্জন ঘোষ

চাষাভুষা

আমরা বাবু চাষাভুষা
মাঠ আমাদের মিতা
কুড়িয়ে বাড়িয়ে যা টুকু পাই
তাই গিলি, শাকপাতা- – –

বিদ্যালয়ের ধার ধারি না
মাড়াই না তার ছায়া
আল আমাদের ঝুল-বারান্দা
জমিন খানি দাওয়া।

খেতখামারের জল ঘুলিয়ে
মাছ টুকু …

পরাবাস্তব

লেখক : প্রভঞ্জন ঘোষ

স্বাতী নক্ষত্রের জল ঝরে পড়ছে
হরিৎবর্ণ হয়ে উঠছে প্রতিটি শস্যপ্রান্তর
আকাশের আয়নায় বিচ্ছুরিত আভরণ।

স্বাতী নক্ষত্রের জল ঝরে পড়ছে
রত্নগর্ভ হয়ে উঠছে আসমুদ্রসৈকত
ঝিনুকের বুক চেরা সুডৌল মুক্তো!
সে এক পক্ষী নৈসর্গিক কুয়াশার
ঊর্ধ অঞ্চলে বারি …

শুধুই নমস্কার

লেখক : প্রভঞ্জন ঘোষ

আর সকলি গেছে-
রিক্সো থেকে রিক্সো চাকা
ঘাট হয়েছে শূণ্য ফাঁকা
আকাশ থেকে সরে গেল
সেই যে চিত্রলেখা!- – –
শাখার পাখি উড়ে গেছে
কোন অজানার মাঝে।

চাকের থেকে মধুমক্ষী
কোথায় উড়ে গেল
দোরের থেকে দুরাত্মীয়…

সরকার ঠিক থাকলে

লেখক : প্রভঞ্জন ঘোষ

সরকার ঠিক থাকলে সবকিছু ঠিক
সংসার থেকে সীমানা,
সরকার ঠিক থাকলে শহর ঠিক
শহরতলি, পাড়াগাঁ।
সরকার ঠিক থাকলে
বিদ্যুৎ বিন্যাস শূন্য দিয়ে হতে পারে
কিংবা ভূতল-
সুবিন্যস্ত হতে পারে মনোরেল।
সরকার ঠিক থাকলে
গুম্ হওয়া যেতে …

সঞ্চালন

লেখক : প্রভঞ্জন ঘোষ

বরঞ্চ নিজেই তুমি ধরো না
খেয়ার রশ্মি,
বরঞ্চ নিজেই গুন টেনে
পার করো যোজন সরণী;

নৌকো চৌখস্ থাকে
তারপিনের গন্ধ এখনো ক্ষীণ-
বরঞ্চ, নিজেই করো মোট রপ্তানি- – –

নিজেই সমুদ্রের ভার নাও
চিতহিন্দোল, ঢেউমাতালিনি!-

উপল …

দুটি কবিতা (প্রাসাদ নগরী ও হায়েনা)

লেখক : প্রভঞ্জন ঘোষ

প্রাসাদ নগরী

চরম উৎকর্ষ নিয়ে একাধারে।
ঝুল ও ডালপালা নিয়ে
ল্যাম্পপোস্টের গোড়ালিগুলো করছে ভঙ্গুর
অন্যদিকে;
উগ্র গন্ধকযুক্ত উদজান
কোমল নাভিপদ্মে তুলছে
পরস্পরবিরোধী তরঙ্গ।

একাধারে
রঙের নিবিড়তা দেখি
আলোর উজ্জ্বল মঞ্চে
চুমকির মতো চিকমিকিয়ে ওঠে
প্রতিটি আহ্লাদ,…

দুটি কবিতা (যত বলি ও প্রত্নতাত্ত্বিক মন)

লেখক : প্রভঞ্জন ঘোষ

যত বলি

যত বলি আয়
হাত নেড়ে নটবর
বলে ওঠে- হায়।

যত বলি নে
অনুপম্ বলে ওঠে
নীচে ফেলে দে।

যত বলি দ্যাখ
ডাঁয়ে-বাঁয়ে ঘাড় নাড়ে
তিন-দুই-এক।

যত বলি ধর
অপলক চেয়ে থাকে
দাঁড়িয়ে দোসর।

যত …

দুটি কবিতা (প্রাকরণিক ও জলাঞ্জলি)

লেখক : প্রভঞ্জন ঘোষ

প্রাকরণিক

সবকিছুকে বাদ দিয়ে
হাঁটিয়ে, ঝেড়ে
দূরে হটাও,
ঠেল্ দিয়ে আর চাপ্ দিয়ে।

সরিয়ে ঘাটের পানাগুলো
তলতা বাঁশের ঘের দিয়ে
শক্ত দড়ির গিঁট্ দিয়ে
সূর্যেরে রোজ ফুটিয়ে তোল
সূর্যমুখীর ছোপ্ দিয়ে।

হর্ষে খেলুক শালিক-ঘুঘু
সরাও চাঙড় …

Back to Top
error: লেখা নয়, লিঙ্কটি কপি করে শেয়ার করুন। ধন্যবাদ।

লেখা আহ্বান - বিস্তারিত জানতে ছবিতে ক্লিক করুন

দীপায়ন