লেখক : মিটু সর্দার
কবিতা কেন লিখি?
কবিতা কি ঠাসা করে বুভুক্ষু পেট?
কবিতা লিখে কি উপার্জিত হয় অর্থ?
কবিতা লিখে কি বন্ধ করা যায় তকদিরে খোঁড়া গর্ত?
কবিতা উদর পূর্তি করে না তা সত্য, কিন্তু
কবিতা তৃষ্ণা মেটায়, মানুষ হওয়ার মন্ত্র শেখায়।
কেন অযথা ভাবনার অতলান্তে ডুবে
মস্তিষ্কের ক্ষয় সাধন করছি,
কেউ না-কি আমার সৃষ্ট কবিতা পড়ে না!
কেউ পড়বে সেই আশায় লিখিনা।
পাঠ্যসূচিতে লিপিবদ্ধ হবে, একুশে পদক পাবো
সেই আশাতেও কিন্তু লিখিনা।
কবিতা আমার প্রেম, কবিতা আমার ধ্যান,
কবিতা আমার শিরা-উপশিরা, ধমনিতে প্রবাহিত –
রক্তকণিকার মতো প্রবাহিত হয়।
কবিতার শব্দের ভান্ডারে আমি খুঁজে পাই
আমার হারিয়ে যাওয়া শৈশব, কৈশোর।
আমি খুঁজে পাই আমার প্রিয়তমার নির্মল হাসি,
আমি কবিতাকে প্রিয়তমার মতো ভালোবাসি।
কবিতা লিখে আমি নিজেকে হাল্কা বোধ কর্
অন্যান্য কারিগরদের মতো এতোটা পরিপক্ব নই,
নরম আর নগ্ন হাতের ছোঁয়ায় লিখে যাই।
যতক্ষণ কবিতার ভিতরে ডুব-সাঁতার কাটি
ঘাসফড়িং-এর মতো শব্দগুলোকে ধরে
কবিতার আকারে পান্ডুলিপিতে আটকিয়ে দেই,
ততক্ষণ আমার মস্তিষ্কে খারাপ ভাবনা আসেনা
অলস মস্তিস্কদের মতো ঝোঁকে না পর্নোগ্রাফিতে।
আমি কবিতার ভিতরে সুখ খুঁজে পাই।
কবিতা আমার কাছে আমার খুকীর মতো,
শব্দের অলঙ্কার পরিয়ে সাজিয়ে তুলি।
কেউ পড়ুক কিংবা না পড়ুক,
কেউ গ্রহণ করুক কিংবা না করুক,
হৃদয়ের প্রশান্তিতে লিখি, হৃদয়ের শান্তিতে শিখি।
হিজিবিজি লিখে কেন সময়ের অপচয় করি?
কেন মানুষ আর মানবতার কথা বলি?
জ্ঞানহীন মূর্খের আধিপত্য, জোরজুলুমের বিরুদ্ধে,
ক্ষুরধার লেখা কেন লিখি?
হারানো প্রিয়তমার স্মৃতি মস্তিষ্কে লালন করে
তার বিরহে কেন বিরহী কাব্য লিখি!
কবিদের হৃদয় সবুজ ঘাস কিংবা প্রস্ফুটিত গোলাপের মতো,
বিশাল বিস্তৃত তারকা খচিত আকাশের মতো,
চিন্তা চেতনা অরুণোদয়ের অরুণের মতো।
লেখক পরিচিতি : মিটু সর্দার
মোঃ আকাইদ-উল-ইসলাম (মিটু সর্দার)। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলাধীন কসবা উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের অন্তর্গত বড়মুড়া গ্রামে ১৯৮৭ সালের ১০ই নভেম্বর, এক সম্ভান্ত্রশালী মুসলিম পরিবারে কবির জন্ম। কবির পিতার নাম নূরুল ইসলাম (মাষ্টার) আর পিতামহের নাম আলতাব আলী সর্দার। কবির চার ভাই এবং দুই বোন। কবি যখন ছোট তখন মা এবং বড় ভাইকে হারান। ভাইবোনের মধ্যে কবি তৃতীয় এবং ভাইদের মধ্যে দ্বিতীয়। কবির যৌথ কাব্যগ্রন্থ "অনুভবের সব রঙে তুমি, রমজান সংকলন, কাব্যের উঠোনে শব্দ নাচে, ইত্যাদি। কবির ছোট বেলা থেকেই কবিতা লিখা সখ । স্কুল জীবন থেকে মাঝেমধ্যে কবিতা লিখতেন। কবি গ্রামের অন্যায়, অবিচার, নির্যাতন, জোরজুলুমের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী লিখা লিখতেন।