বাল্যবিবাহ: একটি নীরব সামাজিক অপরাধ

লেখক : দিয়া উদ্দীন রাকিব

আমাদের সমাজের নানান প্রথাগত সমস্যার অন্যতম হ’ল যৌতুক। বাংলাদেশের আইনে যৌতুক দেওয়া অথবা নেওয়া – দু’টিই নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে সমাজে এখনও যৌতুক দেওয়া-নেওয়া চলছে, যা দেখেও সরকার কিছুই ব্যবস্থা নিচ্ছে না। কিন্তু কেন?

বিয়ের সময় কনেপক্ষের তরফ থেকে যে অর্থসম্পদ বরপক্ষ নেয়, তাকেই যৌতুক বলা হয়। বাংলাদেশের প্রতিটি অঞ্চলের সমাজেই যৌতুকের প্রচলন কমবেশি রয়েছে। বাংলাদেশে যৌতুক বন্ধ করার জন্য ১৯৮০ সালে যৌতুক নিরোধ আইন প্রণয়ন করা হয়েছিল। এই আইন অনুযায়ী যৌতুক প্রদান বা গ্রহণ করলে সর্বোচ্চ এক বছরের কারাদণ্ড অথবা পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ড হতে পারে। ১৯৮৬ সালে এই যৌতুক আইন সংশোধিত হয়, ও সংশোধিত আইন অনুযায়ী যৌতুক প্রদান বা গ্রহণ করলে অপরাধী সর্বনিম্ন এক বছর এবং সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবে।

নারী ও শিশু নির্যাতন: বাল্যবিবাহ

যৌতুকের কারণে আজ বাংলাদেশের নারীরা নির্যাতনের শিকার। যৌতুকের কারণে বিভিন্ন সময়ে নারীদের নির্যাতন, আঘাত ও অপমৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। ১৯৮৩ সালের অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী যৌতুকের কারণে নির্যাতন করে নারীর মৃত্যু ঘটালে বা মৃত্যু ঘটানোর চেষ্টা করলে অপরাধীকে মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করা যাবে।

এই কারণেই যৌতুকের প্রথা তখন বাল্যবিবাহের মাধ্যমে ঘটানোর প্রচেষ্টা শুরু হয়। ছেলের কিংবা মেয়ের যখন বাল্যবয়সে বিবাহ হয়, তাকে বাল্যবিবাহ বলে। বাল্যবিবাহ নিরোধী আইন ১৯২৯ (The Child Marriage Restraint Act, 1929, ACT NO. XIX OF 1929 and Bangladesh officials approved child marriage prevention Act of 2014) – অনুযায়ী, শিশু বলতে ১৮ বছরের কম বয়সী মেয়ে এবং ২১ বছরের কম বয়সী ছেলেকে বোঝায়। সুতরাং, যাদের মধ্যে বিয়ে হয় তাদের মধ্যে যদি ছেলের বয়স ২১ বছর এবং মেয়ের বয়স ১৮ বছরের কম অর্থাৎ বিয়ের জন্য আইন অনুমোদিত বয়সের চেয়ে উভয়ই যদি কম বয়সী হয়, তাহলে সে বিয়েকে বাল্যবিবাহ বলে। শুধু ছেলের বয়স ২১ বছরের কম বা শুধু মেয়ের বয়স ১৮ বছরের কম হলে সে বিয়েও বাল্যবিবাহ হিসেবে গণ্য হবে।

According to the Child Marriage Prevention Act, 2017, child marriage is a crime. If an adult commits this crime, they can be sentenced to imprisonment for up to 2 (two) years or fined 1 (one) lakh taka or both. If an underage woman or man commits child marriage, according to this law, they can be sentenced to one month imprisonment or fifty thousand taka fine or both. Parents, guardians, or any other person who conducts or manages a child marriage ceremony can be sentenced to a maximum of 2 (two) years imprisonment or fifty thousand taka fine or both.

তথ্যসূত্র : জাতীয় পাঠ্যপুস্তক / NCTB


লেখক পরিচিতি : দিয়া উদ্দীন রাকিব
দিয়া উদ্দিন রাকিব একজন প্রতিভাবান তরুণ লেখক, যিনি ২০১৮ সাল থেকে সাহিত্যচর্চায় নিযুক্ত আছেন। ২০২৪ সাল থেকে তার লেখা বই আকারে প্রকাশিত হচ্ছে, যার মধ্যে শিশুতোষ গল্প, ইসলামী আন্দোলন, জীবনী এবং কবিতা অন্তর্ভুক্ত। তিনি 'ছাত্র কণ্ঠ' শিশু পত্রিকার সম্পাদক হিসেবেও কাজ করছেন। শিক্ষা: * মনিপুর হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ (২০২২ - বর্তমান) * লিটল ফ্লাওয়ার প্রিপারেটরি স্কুল (২০১৭ - ২০২২) প্রকাশিত বই (২০২৪): * স্বাধীনতার অগ্নিশিখা (শিশুতোষ গল্প) * ইসলামিক শাসনতন্ত্রের পুনরুদ্ধার (ইসলামী আন্দোলন) * মোহাম্মদ: আবু তাহের কর্মজীবনী (জীবনী) * শহীদের রক্তস্রোত পথ (কবিতা) * নিষ্পাপ ফুল (কবিতা) সম্পাদনার ভূমিকা: * ছাত্র কণ্ঠ (শিশু পত্রিকা) দক্ষতা: সাহিত্য রচনা, সম্পাদনা, সৃজনশীল লেখা।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to Top
error: লেখা নয়, লিঙ্কটি কপি করে শেয়ার করুন। ধন্যবাদ।