লেখক : ডঃ অসীম কুমার নস্কর
সময় – তুমি বড়ই একগুঁয়ে,
কাউকেই তুমি করো না তোয়াক্কা।
কার কী ঘটল, কে মরল, কে বাঁচল –
তাতে তোমার কিছুই যায় আসে না!
তাতে নেই তোমার মাথা ব্যথা।
তুমি বড়ই পবিত্র স্বার্থপর।
সব কিছু ফেলে –
আপন মনেই আগিয়ে যাও,
আপন স্বার্থ সিদ্ধিতে!
তুমি বড়ই একগুঁয়ে গো!
বড়ই একগুঁয়ে!
কখনো কোন প্রসব-সম্ভবা গর্ভবতী –
মুখ থুবড়ে পড়ে গিয়ে –
কাতর যন্ত্রণায় ছটফট করছে,
তা দেখেও কোনো ভ্রুক্ষেপ করো না!
স্বার্থপরের মতো –
আপন গতিতে আগিয়ে চলেছ।
যুগ সৃষ্টি করাটাই তোমার স্বার্থ সিদ্ধি।
তুমি বড়ই স্বার্থপর, বড়ই একগুঁয়ে।
কতো শিশু না খেয়ে রুগ্ন হ’য়ে যাচ্ছে,
কতো মানুষ না খেয়ে মরছে,
অর্থাভাবে চিকিৎসার অভাবে –
কতো মানুষের অকাল মৃত্যু হচ্ছে –
এসব দেখেও তুমি –
অন্ধের মতো দেখতে পাও না।
আসলে তুমি বড়ই একগুঁয়ে স্বার্থপর।
যুগ সৃষ্টি ক’রে তুমি খ্যাত হতে চাও।
তাই সব সময়ই –
তুমি করো একগুঁয়েমিপনা।
সেদিন জাতীয় সড়কে –
এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা হল!
রক্তাক্ত অবস্থায় কতো মানুষ কাতরাচ্ছিল,
জীবন-মরণের পাঞ্জা লড়ছিল,
শেষে অসহায় হার মেনে-
অবশ্যম্ভাবী মৃত্যুকেই বরণ করেছিল!
অথচ তুমি ঘুরেও তাকালে না!
কারোর জন্য অপেক্ষা করলে না!
আপন তালটি বজায় রেখে –
ঠিক আগিয়ে, আগিয়ে চলে গেলে!
উদ্দেশ্য তোমার যুগ সৃষ্টি করা!
তুমি কারোর জন্যই দাঁড়াও না।
তুমি বড়ই একগুঁয়ে স্বার্থপর।
কতো জরা জীর্ণ বৃদ্ধ বাবা মাকে –
নিজের সন্তানেরাই -নিজেদের দায়িত্ব এড়িয়ে – বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসছে ,
আর তারা জীবনের অবর্ণনীয় অবস্থায়-
মৃত্যুর দিকেই তাকিয়ে থাকছে!
কত মানুষের জীবন কাটছে পথে ঘাটে,
কতো মানুষের অনাহারেই দিন কাটাচ্ছে,
হয়তো কেউ হিংসার আগুন জ্বালিয়ে-
অন্যকে নৃশংস পুড়িয়ে মারছে।
কেউ বা হিংসার ছুরিতে –
অন্যের প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে!
আবার কেউ বা –
জীবনের কাছে হেরে গিয়ে –
যমের কাছে নিজের প্রাণ নিবেদন করছে!
আরো কতো কি! আরো কতো কি!
অজস্র নির্মম ঘটনা-ঘটে চলেছে এখানে।
অথচ তুমি সকলকেই –
বুড়ো আঙুলের কলা দেখিয়ে-
আগিয়ে চলেছ আপন গতিতে।
বুঝেছি যুগ সৃষ্টি করেই তুমি –
ধনী হতে চাও, বিখ্যাত হতে চাও
যুগ সৃষ্টি করাই তোমার জীবনের
একমাত্র লক্ষ্য।
তাই কাউকেই, কোন কিছুকেই তুমি-
করো না তোয়াক্কা।
তুমি বড়ই স্বার্থপর, জেদী, একগুঁয়ে!
বড়ই একগুঁয়ে!
বড়ই একগুঁয়ে!
লেখক পরিচিতি : ডঃ অসীম কুমার নস্কর
আমি ডঃ অসীম কুমার নস্কর। ভারতীয় রেলে Addl.CMS. আমি। ইতিমধ্যে অনেক বই লিখেছি।আমি গত বছর সাহিত্য সম্মান এওয়ার্ড পেয়েছি।