এমনও স্বজন

কবি: স্বাগতা আচার্য্য

একটা ঘর খুঁজছি অনেকদিন।
বসতভিটে।
কেউ ফেলে গেছে হয়তো আম জামরুলের ছায়ায়-
অনাবাসে অনাদরে পড়ে আছে স্মৃতি ফলকের মতো।
হলুদ রঙা ফুলে অমলতাস ঘর বেঁধেছে অনেকদিন আগেই উঠোনের ঢেঁকিপাড় কোণে।

শুকনো পাতা মুচড়ে বহুকাল কেউ ও পথে হাঁটেনি।
ঝরাপাতার জীবাশ্মে পুকুরের জল কালচে।
বটফল ঝরে পড়া টুপ্ শব্দ অচিরেই আটকে যায় কচুরিপানার গলায়।

কোনো পরিজন ওখানে থাকেনি কোনোকালেই।
প্রেমিক জাতিস্মর হলেও ও পথের ঠিকানা স্মরণে আনতে পারবে না।
তাহলে?

ওখানে একটা পাগল থাকে।
পা গোল গোল করে গোল্লাছুট খেলে
সযতনে হাত বুলিয়ে দেয় ভাঙ্গা চাল বেয়ে ওঠা পুষ্টু লতায়।
বিছুটির জঙ্গল আলতো হাতে সরিয়ে পথ খোঁজে।
গড়িয়ে পড়া লালা ঠোঁটের কোণ থেকে জিভ দিয়ে চেটে নেয় অবলীলায়।

আমার শুকনো পাতা মোচড়ানোর শব্দে ও ফিরেও তাকাবেনা।
হাঁ করে তাকিয়ে থাকবে শেয়ালের ছুটে যাওয়ার পথে।
আমি আলগা পায়ে উঠোনে উঠবো।
পিঠ মুছিয়ে দেব ওড়নায়।
তারপর বলব-
“ভালো আছো বন্ধু?”
ও হাসতেই থাকবে, হাসতেই থাকবে।
মাথা ভরে আছে ঝরা বকুল।
বুক বেয়ে নামা আরশোলা তখন নাভিকুন্ডে।

ফিরব ওই বিচুটির পথ ধরে নিশ্চুপে!
ও তখন শ্রান্তিতে ঢুলবে।
বাঁকে ফিরে কান্না উঠবে দমকে।
ভাঙা আলোয় তখন ঘরের মাথাটুক আগুন!
বাঁকে ফিরে কান্না উঠবে দমকে।
এ কেমন চির স্বজন – বিদায়?


লেখকের কথা: স্বাগতা আচার্য্য
নেশায় -আবোলতাবোল পাঠিকা। পেশায় -সেবিকা। নিবাস -পূর্ব মেদিনীপুর।
লেখকের ভাষায় – “যা ভাবি লেখা আসে তার সিকি; হইচই মার্কা মনন। এলোমেলো বুনন। গুণ খুব একটা নেই। কেউ লেখা চাইলে ধড়ফড় করে কেমন। ভুল ক্রুটি নিজগুনে ক্ষমা করে দেবেন। জানাবেন অকপটে। পরের বার শুধরে দেবার আশায় আছি।”

2 Comments

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to Top
error: লেখা নয়, লিঙ্কটি কপি করে শেয়ার করুন। ধন্যবাদ।

রুচিশীল ও বিষয়ভিত্তিক আলোচনার জন্য ক্লিক করুন এখানে

sobbanglay forum