প্রথম বাইক কেনা

কবি: শর্মিষ্ঠা দেবযানী

দু’চাকার বাইকটাকেই ভেবেছিল উড়োজাহাজ
হরদম চালাতে লাগল দু’দিকে দুটো ডানা মেলে
উচ্চারণ না-করে বই পড়ার মতো
ঠিক টপকে যেতে লাগল রাস্তার বাম্পারগুলো
হতাশা তখন কোথায় ?
সে তো উড়ে গিয়েছে ফিফথ্ গিয়ারে
বইগুলোকে তখন মনে হতে লাগল
অনেকদিন ধরে বন্ধ করে রাখা ঘর
আর বাইকটা ঠিক যেন ইচ্ছাপূরণের দেবতা
ঠিক যেন সেই ম্যাজিক জুতো
যেখানে যেতে বলব, এক নিমেষে নিয়ে যাবে
কখনো নঞর্থক শব্দ উচ্চারণ করবে না —
মা-বাবার মতো।
বাসা বেঁধে নিয়েছিল সেই বাইকের উপরই
বাবুইপাখির আদলে হাওয়ার দিক নির্ধারণ করে
আর ভেবেছিল, বই যখন শিকেয় তুলেই দিয়েছি
তখন অলস হলে হবে না
ঘুরেই যাব আমার এই পক্ষীরাজকে নিয়ে সর্বত্র
কারণ, অলস মস্তিষ্ক শয়তানের বাসা।


কবি পরিচিতি: শর্মিষ্ঠা দেবযানী

জন্মসূত্রে চন্দননগর এবং বর্তমানে বিবাহসূত্রে চুঁচুড়া নিবাসী এই কবি এবং অলংকরণ শিল্পী-প্রচ্ছদ শিল্পীর আসল নাম শর্মিষ্ঠা দাস। জন্ম ২৩শে সেপ্টেম্বর, ১৯৯১ হুগলি জেলার চন্দননগরের রাজরাজেশ্বরী তলায়। ২০০৯ সালে প্রবর্তক নারী মন্দির বিদ্যালয় থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে, চন্দননগর গভর্মেন্ট কলেজ (ডুপ্লে কলেজ) থেকে ২০১২ সালে সংস্কৃত অনার্সে স্নাতক পাঠ শেষ করেন। এরপর ২০১৫ সালে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সংস্কৃতে এম.এ অধ্যায়ন করেন। বর্তমানে ২০১৭ সাল থেকে তিনি শেওড়াফুলি সুরেন্দ্রনাথ বিদ্যানিকেতন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষিকা হিসাবে নিয়োজিত। এর আগে তিনি আজকের অনির্বাণ পত্রিকায় কিছুদিন চাকুরি করেন। পেশায় শিক্ষিকা এই কবির অন্যতম শখ কবিতা লেখা, সংগীত চর্চা এবং ছবি আঁকা। তাঁর বহু কবিতা বাংলার বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। অলংকরণ এবং প্রচ্ছদ শিল্পী হিসাবে ২০১৮ সাল থেকে নানান কাজ করছেন। ২০১৮ থেকে ২০২০ সাল অবধি শুকনো ফুলের পারফিউম, অসুখের হরস্কোপ, আমাদের পিতার নাম ভারতবর্ষ, বিনিম্র অনন্ত বীণায়, কবিকন্ঠ, ভাঙা সে সাম্পান, প্যাপিরাসের অতলে প্রভৃতি বইয়ের প্রচ্ছদ করেছেন।

শেয়ার করে বন্ধুদেরও পড়ার সুযোগ করে দিন

10 Comments

  1. অজ্ঞাতনামা কেউ একজন

    ভালো লেগেছে কবিতাটা, গতিময় এবং প্রথম লাইন থেকেই আগ্রহ উৎপন্ন করে। এই কবির আরও লেখা পড়তে চাই।
    অর্ঘ্য রায় চৌধুরী।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to Top
error: লেখা নয়, লিঙ্কটি কপি করে শেয়ার করুন। ধন্যবাদ।