লেখক : অর্দ্ধেন্দু গায়েন
আজও সুমনা’র জন্য অপেক্ষা করে তমাল।
দীর্ঘশ্বাস আর হতাশা ওকে ঘুমোতে দেয় না। আকাশের সমস্ত ঘন কালো মেঘ জড়ো হয়েছে যেন কোনও এক গভীর চক্রান্তের অভিপ্রায়ে, তমালের ব্যথাতুর হৃদয়ের এক কোণে।
একাকিত্বের কুহেলিকাময় নিঃসঙ্গ দ্বীপের মতোই নিঃশব্দ ক্রন্দনের আলিঙ্গনে বেঁচে আছে সে।
এইতো কয়েকদিন আগেও ছিল সুমনা।
সেইসব তরতাজা স্মৃতিরা আজও খেলে বেড়ায় মনের অলিগলিতে। রাত্রির সঙ্গে সঙ্গে দীর্ঘশ্বাস আরও গভীর হয়ে বুকের মাঝে ব্যথা হয়ে বাজে। ছলছল চোখের আগে ভেসে ওঠে কিছু খণ্ড খণ্ড দৃশ্যপট।
অভিমানগুলো জল হয়ে ঝরে পড়ে মুক্তো দানার মত।
কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে উঠে দাঁড়ায় ছাব্বিশটি বসন্ত পেরিয়ে যাওয়া অসহায় তমাল। চাঁদের সমস্ত ঊজ্জ্বলতাকে ঢেকে দিয়ে রাত্রিটা হঠাৎ গভীর অন্ধকারে ডুবে যায়। বেল ফুলের তীব্র গন্ধ লাগে নাকে। তমালের হৃদয়ের মত প্রকৃতিও যেন উত্তাল হয়ে উঠেছে। ঘন অন্ধকারের মধ্যেও শ্বেত পাথরের কবরটা স্পষ্ট দৃশ্যমান। উন্মাদের মত চিৎকার করে ওঠে তমাল – “আমাকে একা ফেলে কোথায় গেলে তুমি? তোমাকে ছাড়া আমি যে বাঁচতে পারব না।”
মেঘ সরিয়ে চাঁদের আলো যেন হাত বাড়িয়ে তমালকে ছুঁতে চায়, প্রতিবন্ধকতার সমস্ত সীমানা পেরিয়ে।
লেখক পরিচিতি : অর্দ্ধেন্দু গায়েন
জন্ম উত্তর চব্বিশ পরগনার যোগেশগঞ্জের মাধবকাটী গ্রামে। পেশায় সরকারী চাকুরী হলেও নেশা পড়াশোনা, ইচ্ছে হলেই লেখা-সে কবিতা, ছোটগল্প, অণুগল্প, প্রবন্ধ যা কিছু হতে পারে, অবসরে বাগান করা,ছোট্ট ছোট্ট বাচ্চাদের সঙ্গে খেলা ইত্যাদি। তবে সব পরিচয়ের সমাপ্তি ঘটে সৃষ্টিতে - পাঠক যেভাবে চিনবেন আমি সেভাবেই থেকে যাবো।