কবি: সায়নী মুন্সী
মলাটের ওপর
সমস্ত বই প’ড়ে ফেলতে হবে আমায়
পাতা উল্টোই
কালো কালো অক্ষরগুলো
নেশা ধরায়-
শিরায় শিরায়;
হাতের উল্টো পাতায়
মুছে ফেলতে হবে এ নশ্বর
জীবন-
এক পৃথিবী
পড়ি আমি;
আরেক পৃথিবী
আমায় পড়ায়
বটগাছ, গুল্মলতা,
আকর্ষী মূল- এদের
বিভাজন।
সবটাই সংসারের
আয়োজন
হাত উপুড় ক’রে
দিতে দিতে
পৃথিবী ভাবে
কতোটুকুই আর এ যাপন!
রক্তাল্পতা
হাওয়ার তরোয়াল চালাই
শব্দ কেটে নিই
কবিতার শরীর থেকে
রক্ত ঝরতে থাকে
কী ক’রে বাঁচাই?
একটু ভিটেমাটি নেই-
মাথা গোঁজার ঠাই
তবু আমাদের দাম্পত্য
অনেকদিনের
ডায়েরির পাতা নষ্ট করি
দেখি, আকাশ
জানু পেতে ব’সে আছে
কাগজের নৌকা ভাসাই
কবিতা একটু একটু ক’রে
আড়মোড়া ভাঙে
শেকড় গজায়।
এবং সপ্তর্ষি
দেওয়াল থেকে ঝুপ্ ক’রে
নেমে পড়ে বেড়াল
ঠিক যেন সন্ধে নামলো
দুই কিশোর ভাঙা-অন্ধকার
মুখে নিয়ে চ’লে
গেল।
মুখোশটা আর পরলে না-
আধো-অন্ধকারে ঠোঁট
চেটে নিলো মৃত্যুকে
এখনও কি বিজ্ঞপ্তির আশায়
ব’সে থাকবে, তারাদের
ঝাড়লন্ঠনের নীচে?
নিজের বুকের ভেতরটা
দেখো- কবে থেকে
খসেছে পাতা, জড়ো
করা প্রেমে লেগেছে
আগুন, বধ্যভূমিতে মরেছে
বক
তবু তুমি অন্ধকারের
আঙুল ছাড়ছো না
ম’নে পড়ে যাচ্ছে
দুর্বাশার
তর্জনীকে।
ছবি: প্রণবশ্রী হাজরা
লেখকের কথা: সায়নী মুন্সী
জন্ম – ২৪ আগস্ট, ১৯৮৮, মালদা
পেশায় – সরকারি চাকুরে
লেখালিখি – কলেজবেলা থেকে। তবে সিরিয়াস চর্চা সাম্প্রতিক। কবিতা আজন্মের সহচর। আবৃত্তি এবং লেখা সমান তালেই চলে।
নেশা- চারুকলা। নতুন নতুন শব্দ উদ্ভাবন এবং তার অনুরণন যা ‘অন্তর্গত রক্তের ভিতরে খেলা করে’।
অসামান্য
ধন্যবাদ
অতি সুন্দর
দারুণ লেখা সায়নী!