তুলনা

শিখা চক্রবর্তী

চলো যাই চলে যাই অতীতের
সেই দিনে
ঘটেছিল যে ঘটনা ফের তাকে
করি মনে

দুটি ঘটনাই বড়ো তাতে ভরা
কত ছবি
জানিয়েছিলেন যাঁরা দুজনেই
মহা কবি

দুজনেরই নামে মিল খুঁজে
কেউ পেয়েছ কি
ব এ ব এ গাঁথা নাম
ব্যাসদেব বাল্মীকি

দুটি রাজ পরিবার
তাদেরই তো কথা সেটা
দুই পরিবার ঘিরে
ঘটনার ঘনঘটা

তাই সেই রামায়ণ
আর মহাভারতের কাছে
ভাবলাম খুঁজে দেখি
মিল এতে কি কি আছে

রামায়ণে গিয়ে দেখি
সেখানে তে তিন রাণী
সতীন হলেও তারা
ভাব বেশ ছিল জানি

এবারে তে যাই যদি
মহাভারতের ঘরে
কুন্তী ও মাদ্রীর
প্রীতি টা নজরে পড়ে

গান্ধারী কুন্তীর ও
হৃদ্যতা ছিল ভালো
বৃদ্ধ বয়েসে দেখো
এক সাথে বনে গেলো

দুটি বই এ বড়ো ভাই
সত্য আকরে ধরে
গিয়েছিল বনবাসে
বউ ভাই সাথে করে

ভাইয়ে ভাইয়ে যে একতা
বড়ো ভাই রাখে ধরে
সহোদর সৎ ভাই
চেনো কি আলাদা করে

মন্ত্রণা দিয়েছিল
শকুনি ও মন্থরা
রাম ও যুধিষ্ঠির
সেজন্যে ঘর ছাড়া

দুটি বন বাস কাল
ভাবলাম মাপা যাক
দেখি তেরো চৌদ্দ তে
এক বছরেরই ফাঁক

রাবণ দুর্যোধন
অহং এর দুই নাম
ভালো পরামর্শে তে
কখনো দে য় নি কান

স্ত্রী লোকের অপমান
যুদ্ধে গড়িয়েছিল
জেদ ও অহং কারে
দুজনেই শেষ হোলো

এবারে তে দেখি মিল
লক্ষ্মণ বলরামে
স্নেহ, প্রীতি ,ভালোবাসা
রাগ আর অভিমানে

আজীবন জুড়ে থাকা দু ভাইকে
একা রেখে
দুজনে ত্যজেন দেহ
ঘটনার শেষ ভাগে

রাম ও কৃষ্ণ তাই
সেই শোকদুখ্খেতে
করেন দেহত্যাগ
লেখা দুই গ্রন্থে তে

অন্যায় পথ ছেড়ে ন্যায় কে
সমর্থন
যুযুৎসু বিভীষণ
এও তো উদাহরণ

এই যে মহাভারত
আর রামায়ণ খানা
মন দিয়ে পড়ে সেটা
কত কিছু যায় জানা

সারাটি ভারত আজও এরই সুরে আছে বাঁধা
আজও এ প্রাসঙ্গিক
এ ও এক বড়ো ধাঁধা

উদ্যম হীন আর হীনবল হলেপরে
কৃষ্ণকে মনে করে
লোকে আজও গীতা পড়ে

স্ত্রীলোকের মর্যাদা কেউ যদি
করে হানি
মনে কেন এসে যায়
রাবণ দুঃশাসন ই

হিতৈষী মানুষের করা
সাবধান বাণী
না শুনলে কি যে হয়
সীতা মা কে দেখে জানি

জুয়া রেস বেটিং এর খুব বেশি
নেশা হলে
যুধিষ্ঠিরের কথা
মনে দেখি আসে চলে

স্নেহে তে অন্ধ পিতা
ধৃতরাষ্ট্রের মতো
ও রকমই বাবা মাকে
আজও মোরা দেখি কতো

বিদুরের মতো কোনো মন্ত্রী কে
আজ পেলে
দুর্নীতি, জুয়াচুরি
সবই ঠিক যেতো চলে

দুঃখের দিনে ভরা
সে জীবন সংগ্রামে
ভাইয়ে ভাইয়ে সে একতা
বড়ো বেশি চোখ টানে

ভাইয়ে ভাইয়ে এতো মিল
আছে আজও কারু ঘরে??
খুঁজে পেলে জানিও তা
দেখবো দু চোখ ভরে।।

লেখকের কথা: শিখা চক্রবর্তী
হাউস ওয়াইফ- নানা ধরনের লেখা পড়তে এবং ভারতবর্ষের বিভিন্ন রাজ্য ঘুরে দেখতে ভালো লাগে। প্রিয় বই তো অনেক। তার মধ্যে মহাভারত একনম্বরে। এছাড়া বঙ্কিমচন্দ্র, রবীন্দ্রনাথ, বিভূতিভূষণ, কালকূট খুবই পছন্দের। নির্মল বুদ্ধি যুক্ত হাস্যরস খুব আকর্ষক লাগে তাই সুকুমার রায় খুব পছন্দের। উপেন্দ্রকিশোর এবং সত্যজিৎ রায় তো আছেনই। সত্যি বলতে আরো কত নাম যে ভালো লাগার লিস্টে আছে তা বলে শেষ‌করা যাবে না। কবিতার ‌চেয়ে ছড়া একটু বেশিই টানে এবং তাই‌ মাঝে মাঝে একটু চেষ্টা ‌করা হয়‌ আর কি।

শেয়ার করে বন্ধুদেরও পড়ার সুযোগ করে দিন

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to Top
error: লেখা নয়, লিঙ্কটি কপি করে শেয়ার করুন। ধন্যবাদ।