উল্কি

লেখক : রুবাই শুভজিৎ ঘোষ

সামনের সপ্তাহে পাখির বিয়ে। বাড়িতে তাই একটা খুশির তরঙ্গ বইছে। শুধু বাড়ির মানুষজনের মধ্যেই না, বাড়ির ইট কাঠ পাথরেও সে খুশি বইছে। বইবে নাই বা কেন! পাখি যে বাড়ির বড় মেয়ে। এই প্রজন্মের প্রথম বিয়ে এটা। আর শুধু সেই কারণেই তো নয়, পাখির মত সবসময় হাসিখুশি আর প্রাণবন্ত মেয়ের উপস্থিতিই সবার মধ্যে একটা খুশির তরঙ্গ ছড়িয়ে দেয়।
আজ পাখি কেনাকাটি করতে মার্কেটে গেছিল। তবে একটু দেরি করেই ফিরল বাড়ি। এমনিতেই দেরি হওয়ার কথা ছিলই। বাড়ি যখন ঢুকলো, মুখে তার খুশির ঝলক। রাতে খাবার পর মুখ ধুয়ে এলো যখন তখনও খুশিটা লেগে তার মুখে।
মা জিজ্ঞেস করল, “কিরে? সৌনকের সাথে দেখা করলি নাকি? খুব খুশি। “
“ধ্যাৎ!” উত্তর দিলো পাখি, “খুশি হতে গেলে কি ওর সাথেই দেখা করতে হবে? পরের সপ্তাহ থেকে তো সারাদিন ওর সাথেই থাকতে হবে।”
“তাহলে?” জিজ্ঞেস করল মা।
“অন্য কারণে দেরি হলো আজ।”
পাখির ঠোঁটের হাসি দেখে মা বুঝলো মেয়ে কিছু একটা খুব পছন্দের জিনিস কিনেছে। এবং সেটা মাকে না দেখালে শান্তি পাবে না। মা অপেক্ষা করতে থাকলো। পাখি উঠে দাঁড়ালো। মায়ের দিকে পিঠ করে চুলের গোছাটা সরিয়ে জিজ্ঞেস করলো, “কেমন হয়েছে?”

পাখির মা চমকে উঠে দাঁড়ালো। মধ্যবিত্ত পরিবারে থেকেও যতটা সম্ভব আধুনিকভাবেই মেয়েকে মানুষ করেছে সে। তাই তার সাথে মেয়ের সম্পর্ক বন্ধুর মতো। সৌনকের সাথে যখন কলেজের শুরুর দিনগুলোতে বাড়ি থেকে লুকিয়ে দেখা করতে যেত, তখনও একমাত্র মা’ই পাখির সম্পর্কের কথা জানতো। তাই আজ ও বিকেলে মার্কেটে গিয়ে যখন পিঠে উল্কি এঁকে বাড়ি ফিরলো পাখি, তখন মাকে সেটা দেখানোর জন্যই পাখি ছটফট করছিল। কিন্তু পাখির আনন্দে পুরো জল ঢেলে মা বেশ জোরে জিজ্ঞেস করলো, “এটা কি করলি তুই?”
“কেন মা?”
“কেন মানে? উচ্ছন্নে গেছিস নাকি তুই?”
“এখন সবাই করে। এতে খারাপের কি ?”
“কি বুঝলে,গায়ে এরম সব করে, আবার সেই নিয়ে তর্ক করতিস না।” একটু থামলো মা। তারপর বলতে শুরু করলো আবার, “লোকেরা কি বলবে? সবচেয়ে বড় কথা এই সামনে বিয়ে!শ্বশুরবাড়ি কি বলবে?” আরও একটু থেমে গলাটা আগের থেকে একটু নরম কিন্তু গম্ভীরভাবে জিজ্ঞেস করলো মা,”সৌনক জানে?”
মাথা নাড়লো পাখি। সৌনক এটা জানে না। সৌনক কে সারপ্রাইজ দেবে বলে সে জানায়নি।
মা চলে গেলো অন্যঘরে। যাওয়ার সময় সজোরে ঘরের দরজাটা বন্ধ করে গেল। সেই শব্দে চমকে তাকালো পাখি। তার সমস্ত আনন্দ ইতিমধ্যেই মাটি হতে গেছে। চোখদুটো ঝাপসা হয়ে এলো তার।
পরের দিন অফিসে পাখি ঢুকল যখন, তখন অনেক চোখ তার পিঠের ওপর আটকে থাকলো। অনেকেই বুঝতে পারলো না উল্কিটা কিসের, কিন্তু একটা রসালো আলোচনা চালু হয়ে গেল। কেউ কেউ আবার উল্কি দেখেই পাখির চরিত্রবিচার করে দিলো।
একজন বলল, “যেখানে ট্যাটুটা করেছে, ওটা পুরো পিঠ খুলে করতে হয় জানিস!”
“ইস! কি মেয়ে রে বাবা। লজ্জাও করল না?”
“লজ্জা থাকলে কি আর এসব করে? আর বাড়িটাই বা কিগো!”
“যা বলেছ। আমাদের বাড়ি হলে তো বারই করে দিত।”
“এই!” ফিসফিস ভঙ্গিতে একজন বলল, “ট্যাটু তো ছেলেরাই করে  দেয়, তাই না?”
“হ্যাঁ আবার কি?”
“এমা! একটা ছেলের কাছে… ছি ছি ছি!”
“আরে এগুলো আহবান গো! বোঝো না।”
“তা নয়তো কি? আর দেখোনি কেমন ঢলে ঢলে রঞ্জনদার সাথে কথা বলে!”
“বা! ট্যাটু টা খুব সুন্দর হয়েছে”, চা খেতে খেতে রঞ্জনদা বলল।
“থ্যাঙ্ক ইউ।” হেসে বলল পাখি।
“নিডল টা দেখে নিয়েছিলে তো?”
“হ্যাঁ। নতুন প্যাক থেকে বার করল। সাইনও তো করিয়ে নিল।”
“দেন ওকে।” চায়ের কাপে শেষ চুমুকটা দিয়ে বলল রঞ্জনদা। রঞ্জনদার সাথে কথা বলে ভালো লাগে পাখির। অন্যদের মত একদমই নয়। নিজের বুদ্ধি দিয়ে সবকিছু বিচার করে। কথাবার্তায় সবসময় সততা বোঝা যায়। তেমনই কারও ভুল কথাও এতটুকু সহ্য করে না। অনেকেরই তাই পছন্দ হয় না তাকে। তবে অন্য অনেকের মত পাখিও খুব শ্রদ্ধা করে তাকে।
বাড়ি যখন ফিরল তখন বাবার মুখ দেখেই পাখি বুঝল কি হয়েছে।
“ফ্রেশ হয়ে আয়। কথা আছে।”
কি কথা পাখি সেটা জানে। ফ্রেশ হয়ে আসতে বাবার থেকে একটু বকা খেল, একটুখানি জ্ঞান শুনতে হল। তার বাবা মায়ের চিন্তা একটাই, বাইরের লোকে, বিশেষ করে শ্বশুরবাড়ির লোকে কি বলবে? এমন সময় ঘরে এসে ঢুকল পাখির বয়স্কা পিসি।
“কি হয়েছে রে বুড়ো?” পাখির বাবাকে জিজ্ঞেস করল পিসি।
“কিছু না গো দিদি…” পাখির মা ব্যাপারটাকে কাটাতে চাইলেও পিসিই তাকে চুপ করিয়ে দিল, “তুমি থামো বৌমা। এই বুড়ো ! বলতো কি হয়েছে?”
বলতেই হল পিসিকে কি হয়েছে। শুনে তো পিসি খেঁকিয়ে উঠল, “ভদ্দরবাড়ির মেয়েরা এসব করে? ছি ছি!” তারপর পাখির মায়ের দিকে ঘুরে বলল, “সব তোমার জন্য। একেবারে মাথায় তুলে রেখেছিলে না। “
এর আগে অনেকবার পাখির হয়ে পিসির সাথে তর্ক করেছে মা। আগেকার যুগের চিন্তাভাবনা থাকা পিসির এযুগের অনেককিছুই পছন্দ হয় না, কিন্তু পাখির মা মেয়ের সেই সব অধিকার নিয়ে লড়েছিল এতদিন, সে মেয়ের বন্ধুদের সাথে বাইরে ঘুরতে যাওয়াই হোক, বা কলেজে-অফিসে আধুনিক জামাকাপড় পরে যাওয়াই হোক। কিন্তু পাখির জন্য লড়তে থাকা মা’ও আজ পাখির পক্ষ ছেড়ে দিয়ে চুপ করে রইল। যা বলার পিসিই বলল। সিদ্ধান্ত যা দেবার পিসিই দিল।
পিঠে উল্কি থাকলে মেয়ের তথা বাড়ির সম্মান যাবে। তাই উল্কি ঢেকে রাখা চাই। যতক্ষণ লোকসমাজে থাকবে, ততক্ষণ ঢেকে রাখতে হবে উল্কি। তার বিয়ের জন্য কেনা অনেক ব্লাউজ, যাতে পিঠের এতটুকুও দেখা যায়, সব বাতিল করা হল। বদলে দর্জি ডেকে নতুন করে পিঠঢাকা সমস্ত ব্লাউজ বানানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। পিঠে পিঠঢাকা ব্লাউজ নয়, যেন পায়ে তার শেকল উঠল। নিজের ঘরে চলে এল সে। দরজায় তুলল ছিটকিনি। তারপর তার হবু বর সৌনককে ফোন করল সে।
সৌনকের সাথে তার সম্পর্ক সেই কলেজের শুরু থেকেই। এবার বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হতে চলেছে তারা। সৌনক তাকে সবসময় সব পরিস্থিতিতে সমর্থন করে এসেছে। বিয়ে ঠিক হবার পরেই তো একদিন যখন সৌনকের বাবা পাখিকে বলেছিল, “এবার তাহলে অফিস থেকে মুক্তি পাবে বলো?”
পাখি কিছু বলার আগে উত্তর দিয়েছিল সৌনকই,”মুক্তি বলছ কেন বাবা? আমার যেমন কেরিয়ার আছে, ওরও তো আছে।”
সৌনকের বাবা বলেছিল, ” সেটা ঠিক, কিন্তু সংসারও তো সামলাতে হবে।”
“তার জন্য চাকরি ছাড়ার কি দরকার।”, বলেছিল সৌনক ,”চাকরি করেও তো সংসার সামলানো যায়। আর দায়িত্ব তো ওর একার নয়। দুজনে মিলেই সামলাবো সংসার।”
পাখির পাশে সবসময় থাকা সেই সৌনককে ফোন করল পাখি।
আশ্চর্যের বাকি ছিল এখানেই। পাখির কথা শুনে খেপে গেল সৌনক,
“আমায় একবারও জানালে না তুমি?”
একটু থেমে কিন্তু পাখির উত্তরের অপেক্ষা না করেই সে বলল, “মনে হল আর করে নিলে। একবারও জিজ্ঞেস করলে না তুমি।”
পাখি আর অপেক্ষা না করেই ফোন কেটে দিল। যে সৌনককে ভেবেছিল সবার থেকে আলাদা, ওর চলার পথের সাথী, সেও তাহলে আলাদা নয় বাকিদের থেকে। পাখি তো চিরটাকাল উড়ে বেরিয়েছে, কথা তো ছিল সৌনকও উড়বে তারই সাথে। কিন্তু ওড়া তো দূরে, সৌনক তো বাকিদের মত যেন শেকলই তুলতে চাইছে পাখির পায়ে। ফোনটা কাটার পর পাখির চোখের জল বাধ মানল না আজ।
দেখতে দেখতে বিয়ের দিন চলে এল। পিসির কথামত হাইনেক, কলারনেক, চাইনিজ নেক, এবং আরও সমস্ত পিঠঢাকা ব্লাউজ এল তার জন্য। সেই ব্লাউজে তার পিঠের উল্কি ঢাকা পড়ল। কেউ জানল না সেই উল্কির কথা। বরং অনেকে ব্লাউজের প্রশংসা করে বলল, “বেশ ক্লাসি লুক!” কিন্তু পাখির মনে হল, এতে তার উল্কি না, তার আসল সত্ত্বাকেই যেন ঢেকে রাখা হচ্ছে। পিঠঢাকা ব্লাউজে বড় দমবন্ধ লাগছে তার।
ফুলশয্যা অবধি কোনোরকমে শেকলের মত ব্লাউজগুলো সে সয়ে নিল। কিন্তু আর পারছে না সে। অন্যের কথায় কোনদিনও চলেনি সে। চিরটাকাল উড়ে বেরিয়েছে সে নিজের মত। তবে তখন তার পাশে ছিল মা, পাশে ছিল সৌনক। এখন তো তারাই তার পায়ে শেকল বাধছে। খুব অভিমান হল পাখির। শেকলটাকে খুলে ফেলে দিতে ইচ্ছে হলেও অভিমানে সে বসে রইল। তার ভালবাসার মানুষই যখন শেকল পরাতে চেয়েছে তাকে, তাহলে সে খুলবে কেন? শুধু আজ রাতে আদর করবে বলে? কখনই না।

সৌনক উঠে এল বিছানায়। পাখির কাঁধে হাত রাখতেই কনুই দিয়ে তার হাতটা সরিয়ে দিল পাখি। সৌনক মন জানে পাখির। কেন তার রাগ হয়েছে বুঝতে দেরি হল না।
“সরি পাখি! সেদিন আমার রাগ হয়েছিল খুব!”, আবার পাখির কাঁধে হাত রেখে বলল সৌনক। যতবারই সে হাত রাখছে কাঁধে, ততবারই পাখি কনুই দিয়ে তার হাত সরিয়ে দিতে থাকল। সৌনকও বলে চলেছে, “একা না জানিয়ে ওরকম ট্যাটু করতে চলে গেলে, কোথায় করলে, ঠিকঠাক জায়গা কিনা, ঠিকভাবে করে কিনা সেখানে, এইসব ভেবেই হঠাৎ করে রেগে গেছিলাম। স্কিনের ব্যাপার না!” গলার স্বর আরও আবেগপ্রবণ করে বলল সে, “কই দেখি না! কি বানিয়েছ?”
“না দেখতে হবে না!” যখন কথা বলতে গেল, পাখি বুঝল তার গলা বুজিয়ে এসেছে অভিমানের কান্নায়। সৌনকও বুঝল। পাখির চোখে একবিন্দু জল। চোখ থেকে সেই জল গালে পড়ার আগেই সৌনক ধরল সেটা। পাখির রাগ ভাঙানোর চেষ্টা করল সারারাত। সে জানে কিভাবে পাখির রাগ ভাঙবে। অবশেষে ভোররাতে রাগ ভাঙল পাখির। যখন তার শেকল ভেঙে তার পিঠের উল্কিটা দেখতে পেল সৌনক, সৌনকের চোখদুটো ছলছল করে উঠল। নিজের ওপর রাগ হল তার। পাখি তাকে এত ভালবাসে। আবেগে জড়িয়ে ধরল তাকে।
কলেজের প্রথম দিনগুলোতে তারা প্রায় প্রতিদিনই দেখা করত বাইরে। একদুদিন দেখা না হলেই ছটফট করত দুজনে। একবার পাখির বাড়িতে একটু সমস্যা হওয়ার কারণে পাখি আসতে পারেনি, সৌনক চিঠি লিখেছিল তাকে। পরের দিন দেখা হতে চিঠিটা দিয়েছিল তাকে। চিঠির শেষের দিকে পেন দিয়ে এঁকে দিয়েছিল একটা পাখির ছবি। নিতান্তই আনকোরা হাতের আঁকা। তবে সেটা পাখির ছিল খুব প্রিয়। চিঠিটা আজও তার কাছে যত্ন করে রাখা আছে। চিঠির সেই পাখিটাকেই সে পাকাপাকিভাবে নিজের শরীরে স্থান দিল বিয়ের আগে, ভাবল সৌনককে দারুণ সারপ্রাইজ দেবে। কিন্তু এই নিয়ে এত ঝামেলা।
পরের দিন সন্ধেবেলা সৌনক বাড়ি ফিরে একটা প্যাকেট উপহার দিল পাখিকে। প্যাকেটটা খুলেই পাখির মনের দমবন্ধ সেই ভাবটা কেটে খুশির জোয়ার এল তাতে। এটা শুধু একটা উপহার না, এটা তাকে আবার আগের মতই আকাশে ওড়ার আহ্বান। সৌনকও যে তার ওড়ার সঙ্গী, এটা তার প্রমাণ। সৌনককে আবেগের সাথে জড়িয়ে ধরল সে।
সৌনকের আনা ব্যাকলেস ব্লাউজটা যখন পিঠে তুলল পাখি, তখন কিছুদিন আগের মতই অনেক গুঞ্জন শোনা গেল আবার। কিন্তু সেই গুঞ্জন কানে তুলল না সে। সৌনক ততক্ষণে তার হাত নিজের মুঠির মধ্যে শক্ত করে ধরেছে। পাখি জানে আর কোনও চিন্তা নেই তার। নিশ্চিন্তে সৌনকের কাঁধে মাথা রাখল সে।


ছবি – অর্ক ধারা

লেখকের কথা: রুবাই শুভজিৎ ঘোষ
লেখকের জন্ম পশ্চিমবাংলায়। পেশায় একটি বহুজাতিক সংস্থার তথ্যপ্রযুক্তিবিদ। নেশায় লেখক এবং পরিচালক। বাঙালির জনপ্রিয় ওয়েবসাইট সববাংলায় এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা তিনি। কবিতা থেকে শুরু করে গল্প, প্রবন্ধ, উপন্যাস, চিত্রনাট্য সবকিছুই লিখতে ভালবাসেন। লিটিল ম্যাগাজিন থেকে শুরু করে বাণিজ্যিক বিভিন্ন ম্যাগাজিনে নিয়মিত লিখেছেন। স্রোত থেকে প্রকাশিত তাঁর কবিতার সংকলন দৃষ্টি এবং বালিঘড়ি। এছাড়া তথ্যচিত্র, শর্ট ফিল্ম বা অন্যান্য বিভিন্ন ধরনের ভিডিও পরিচালনা করেন। ধর্ম এবং বিজ্ঞান তাঁর প্রিয় বিষয়। ভ্রমণ তাঁর অন্যতম শখ। অন্যান্য শখের মধ্যে রয়েছে স্কেচ, ফটোগ্রাফি, ছবি ডিজাইন করা।


লেখাটির অডিও স্টোরি শুনুন এখানে

2 Comments

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to Top
error: লেখা নয়, লিঙ্কটি কপি করে শেয়ার করুন। ধন্যবাদ।

লেখা আহ্বান - বিস্তারিত জানতে ছবিতে ক্লিক করুন