লেখক: অভিজিৎ চৌধুরী
ঝুলনদা। ঝুলনদা কবিতা লিখত আবার গানও। তোতলা ছিল আর ট্যারা। একটা বেঢপ সাড়ে ৬ ফুটি চেহেরা। তিনবার জন্ডিস হয়। হাওড়ায় থাকত। প্রমোদ বসু, ব্রত চক্রবর্তীরা ঝুলনদার কবিতার আক্রমণে অস্থির হয়ে উঠেছিল। ভালোবেসে দীর্ঘকবিতা লিখল – শিলংএর চিঠি। বইমেলায় স্টলে স্টলে বিনে পয়সায় বিলি হল। করলাম আমি। মামার বাড়িতে কোন বিয়ে হলে বাসর জাগত ঝুলনদা আর শোনাত ওর লেখা গান। আমাকে ওসব হারমোনিয়াম ইত্যাদি ধরাধরি করে দিতে হতো। তারপর পালাতাম। ফুডে চাকরি করত। অফিসের জমে থাকা ফাইলগুলিতে কি হয় জিজ্ঞেস করলে, যা বলত- দুর্বোধ্য। আমার মাসির ছেলে। আসল বাড়ি মালদার সামসি। জরুরি অবস্থায় ৬ মাস জেলও খেটেছিল। মাসি ছাড়া ঝুলনদাকে ভালোবাসত ছোটমাসির বর। মানে মেসোমশাই। তাঁর কাছে অনেক কবিতার বই দেখতাম। পার্টি করতেন তবে খুব সাচ্চা মানুষ ছিলেন। আমাকে একবার সহকার শব্দের অর্থ জিজ্ঞেস করাতে পারিনি। ঝুলনদা বিয়ে করল। লাইট চলে গেলে হ্যাজাক জ্বলে উঠেছিল। ঝুলনদার একক ইউনিটে আমিও যে লিখতাম প্রকাশ করিনি কোনদিন। তবে ঝুলনদা আমার লেখার রিভিউ বের হলেই ফোন করত। অসূয়া ছিল হয়তো। আমল দিইনি কখনও। আর যোগাযোগ ছিল না। অনেক বছর পর খবর পেলাম ঝুলনদা সপরিবারে খুন হয়েছে। প্রায় ৬ মাস পর। টিভি নিউজে নৃশংসতম খুন হিসেবে খবর হয়। ঝুলনদা স্বপ্ন দেখত, তার সৃজন খবর হবে। পরিবর্তে যা হলো রাতে বসে ভাবতে ভাবতে স্নানে গেছি। শাওয়ারের জলে চোখ বুজে আসছে। দেখলাম স্পষ্ট এক দীর্ঘদেহী আমায় ছায়া হয়ে দেখছে। আমার চোখে শ্লেষ নয়, বেদনা ফুটে উঠেছিল।
লেখকের কথা: অভিজিৎ চৌধুরী
অভিজিৎ চৌধুরীর জন্ম মধ্য কলকাতায়। পেশায় উচ্চপদস্থ সরকারী কর্মী। এখনও পর্যন্ত রাধারমণ, গোপা, সমাগত মধুমাস, অনুগামিনী, অগ্নিঋষি, ধর্মান্তর, মর্ম-মা , ঈশ্বরের পাড়া ইত্যাদি ষোলটি উপন্যাস লিখেছেন। তাঁর লেখা মন্থরা উপন্যাসটি ওড়িয়া ও ইংরাজি ভাষায় অনুদিত হয়েছে। ২০০ টির মত গল্প লিখেছেন। মদনমোহন তর্কালংকার সন্মাননা – ২০১৭, নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী স্মৃতি পুরস্কার, কবিতা পাক্ষিক সম্মান, তারা বাংলা বিশেষ লেখক সন্মাননা সহ নানান পুরষ্কার ও সম্মানে ভূষিত হয়েছেন।
The books you have written are described in beautiful and fluent language .
All the books are of very high quality .
Go ahead .
Thank you sir ,
Good evening .
অশেষ ধন্যবাদ