বসন্ত আবার রঙিন

লেখক : দীপালী ভট্টাচার্য (Dipali Bhattacharjee)

মিত্র বাড়িতে বছর দুয়েক হল দোল উৎসব বন্ধ আছে। কিন্তু এ’বছর মিত্রগিন্নি নিজে উদ্যোগ নিয়ে উৎসব করবেন শুনে অমল বলল, ‘মা ভুলে গেলে, বছর দুয়েক আগে দোলের দিনেই সীমান্ত থেকে দাদার কফিন বন্দি দেহটা এসেছিল বাড়িতে’! ‘কিছুই ভুলিনি বাবা’, গিন্নি বলেন, ‘বৌমা যখন সামনে এসে দাঁড়ায়, তোমার ঠাকুমার সাথে একাদশী করে,  হবিষ্যিগুলি খায়, বুকের ভিতর হু হু করে ওঠে। বিমু চলে গেছে। কয়েকদিন আগে ওর একরত্তি ছেলেটার যখন কঠিন অসুখটা হল গোবিন্দকে মানত করেছিলাম, তিনি রক্ষে করছেন। আজ দোল, তাই একটু  পুজোর ব্যবস্থা করেছি।’

অমল সবই জানে! সেই যমে মানুষে টানাটানি দেড় বছরের বাচ্চাটাকে নিয়ে ভোলা যায়! রাত জেগে সেই তো সঙ্গ দিয়েছিল বৌদির!

মিত্রবাবু আড়ালে দাঁড়িয়ে সব শুনছেন আর ভাবছেন, ‘আজ যদি বৌমার বাবা মা থাকতেন, তাঁরা কি মানতেন বৌমার এই বৈধব্য যন্ত্রণা! হয়ত আবার বিবাহ দিতেন!  আমিও তো পিতা! বাড়ির অনুশাসনগুলোকে কি চাইলেই শিথিল করতে পারি না? পারি না কি বৌমার সেই হাসি মুখখানি ফিরিয়ে আনতে?’ বৌমার প্রতি ছোটছেলের অনুরাগ মিত্রবাবুর দৃষ্টি এড়ায় নি! বাচ্চাটিকেও অমল বড় ভালবাসে!’

দোলের পূজা শেষ হয়েছে। সবাই ঠাকুরের পায়ে আবির ছুঁইয়ে পরস্পরকে আবির মাখিয়ে দিচ্ছে। বৌমা একা ঘরে। মিত্রবাবু অমলকে বললেন, ‘ভালবাসো তো বৌমাকে?’ সে যেন লজ্জা পেল! মিত্রবাবু তার হাতে আবির দিয়ে বললেন, ‘তবে তার ঘরে যাও, রাঙিয়ে দাও তাকে! আমি অনুমতি দিলাম’।

লেখক পরিচিতি : দীপালী ভট্টাচার্য (Dipali Bhattacharjee)
আমি একজন গৃহবধূ। লেখালেখির শখ আছে। আমি সাধারণত গল্প এবং প্রবন্ধ লিখি। তবে দু একটি কবিতাও লিখেছি বর্তমানে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to Top
error: লেখা নয়, লিঙ্কটি কপি করে শেয়ার করুন। ধন্যবাদ।

লেখা আহ্বান - বিস্তারিত জানতে ছবিতে ক্লিক করুন