ফিরে আসা

লেখক: অর্পিতা

– ‘প্লিজ এক্সপেক্ট করিস না, আমি তোর বুকে মুখ গুঁজে কাঁদব তার তুই আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিবি।’

কথাটা বলেই অনুমিতা অন্যদিকে মুখ ঘোরালো। বিকেলটা ধুসর হয়ে আছে, একটু হাওয়াও নেই। বৃষ্টির আগের গুমোট ভরে আছে শহরে। অনিন্দ্যর ভ্রু কুঁচকে যায়। অদ্ভুত! কথা নেই বার্তা নেই মাঝখান থেকে একটা সেনটেনস্ বলে মহারাণী এগিয়ে চললেন।
অনুমিতা কয়েক পা এগিয়ে গেছে, অনিন্দ্য পা চালিয়ে পাশে এল।
– ‘মানেটা ঠিক বুঝলাম না।’
– ‘মানে বুঝতে হবে না। উফ! বাবা এতটা রাস্তা কি করে হাঁটব,  আমার তো কান্না পাচ্ছে।’
অনিন্দ্য আশ্বাস দেয়, ‘এই তো আর একটু একটা মোড় ঘুরলেই তো তিনমাথাটা তারপর আর একটু এগিয়ে গেলেই…’।
অনুমিতা বলে ওঠে, ‘ কে.সি. দাস।’
 
ধুসরের মাঝে সাদা ছেঁড়া মেঘ উঁকি মারছে বারেবারে। অনিন্দ্যও আড় চোখে অনুমিতাকে দেখে, কাঁধ পর্যন্ত খোলা চুল, ঘন সবুজ রঙের কুর্তি, বাঁ হাতে কালো বেল্টের ঘড়ি, কাঁধে সাইড ব্যাগ, চোখে রিমলেস চশমা আর ঠোঁটে গোলাপী লিপস্টিক। কত বছর হয়ে গেল? নয়… না না আট… সময়টা তো জুলাইয়ের মাঝামাঝি ছিল। এখনও তো জুলাই, আজও রবিবার। থুতনির কাছটা একটু ভরাট হয়েছে আগের থেকে। বয়সটাও তো থমকে নেই।
– ‘তুই আমার দিকে তাকিয়ে আছিস? ‘অনুমিতা দাঁড়িয়ে পড়ে, ঘুরে তাকায় অনিন্দ্যর দিকে।
অনিন্দ্য ভাবে মেয়ে নাকি কুনো ব্যাঙ। বেশ করেছে দেখছিল ইচ্ছা তো হয় বলে ফেলে হ্যাঁ দেখছিলাম। বেশ করেছি দেখেছি। মুখে বলল,  ‘দেখছিলাম কিভাবে ভুল ট্র্যাকে হাঁটছিস। ‘
– ‘ভুল ট্র্যাক!’
– ‘হ্যাঁ তো আর একটু হলে ধাক্কা খাবি গাড়িতে।’
কিসের মিটিং কিসের মিছিল ওরা জানে না, কেবল জানে বাস আজ চলছে না। থমকে গেছে শহর। রাস্তায় নেমে গেছে লোকজন। গুমোট গরম আর ঘামের গন্ধে বিকেল রাস্তা পার হয়।
বাংলা সিনেমার সাদামাটা স্ক্রিপ্টের মতন আট বছর পর একই বাসে দ্যাখা হয়ে গেল দুজনের। প্রায় মিনিট কুড়ি বাস জ্যামে আটকে থাকার পর যখন জানা গেল সামনের রাস্তায় মিছিল নেমেছে বাস এখন এগোবে না, অনিন্দ্য বাস থেকে নেমে পড়ল। নামতে গিয়েই চোখাচোখি হয়ে গেল। এতগুলো বছর এতগুলো সময় মুহূর্ত পেরিয়ে আবার কোনদিন মুখোমুখি হতে হবে এমনি ভাবে দুজনের কেউই ভাবেনি। অনুমিতার চোখগুলো গোল গোল হয়ে গেছিল,  ‘কিরে তুই?’ ‘কেমন আছিস?’ ‘কোথায় চললি?’ গোছের দু একটা কথা আশেপাশের মানুষদের বিব্রত করার মতন স্কেলে  বলে দুজনে হাঁটা লাগায়।
কিছুটা হেঁটেই অনুমিতা বলে ওঠে, ‘প্লিজ এক্সপেক্ট করিস না, আমি তোর বুকে মুখ গুঁজে কাঁদব তার তুই আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিবি।’
 
পরিচয় হয়েছিল স্পোকেন ইংলিশ ক্লাশে তখন ওরা সবে উচ্চমাধ্যমিক দিয়েছে। সেখানে আলাপ আর খুব সাধারণ গল্পের মতনই প্রেম এবং বছর দুয়েক জোড়ায় জোড়ায় ঘোরার পর ব্রেক আপের ফান্ডা নিয়ে আলাদা হয়ে যাওয়া। তারপর এত বছর এক শহরে থেকেও দুজনের ভুল করেও কোনদিন দেখা হয়নি। আজ আট বছর পর থমকে যাওয়া শহরে ধরা পড়ল দুজনে আবার। মাঝের অসোয়াস্তি কেটে গেছে অনেকক্ষণ আসলে টিন এজ প্রেম ভুলে দুজনের হার্টবিটস এখন ম্যচিওর তাই পাশাপাশি হাঁটলেও দামামা বেজে ওঠে না।
 
– ‘তা কি করছিস এখন?’
– ‘বাবার হোটেলে খাচ্ছি।’
-‘ধ্যাত!’ অনুমিতা হাসে।
আসলে যখন ওরা রিলেশনসিপে ছিল ও বারে বারে বলত ‘কিছু তো কাজ কর। বাবার হোটেলে আর কত দিন?’ সেটাই মনে পড়ে দুজনেই হেসে উঠল।
অনিন্দ্যর দিকে তাকায় অনুমিতা, আগে ব্যটা এত হ্যান্ডু ছিল না। সাদা টি শার্ট আর ব্লু ডেনিম পরেছে, পছন্দটা তাহলে আগের মতনই আছে। চশমাটার জন্য একটু গম্ভীর লাগছে বটে ।
– ‘ম্যডামের কি করা হয়?’
– ‘বলব কেন? সিক্রেট।’
– ‘নাহ্ থাক কোন গোপন কথা জানতে চাই না আমি।’
 
বহু বছর আগে যে স্বপ্ন বুনতে চেয়েছিল ওরা অথচ বয়েসের হাওয়ায় উড়ে গেছিল সব কিছু আজ আট বছর পর পালটা হাওয়ায় ছেঁড়া ছেঁড়া স্মৃতিগুলো রঙ বদলে ওদের আশে পাশে ঘুরতে থাকে।
শহরের কোলহলে টুকরোগুলো উড়ে যেতে না দিয়ে অনুমিতা জিজ্ঞেস করে, ‘প্রেম ট্রেম করছিস না কি?’
অনিন্দ্য হাসে, ‘নাহ্ করছি না।’
– ‘সে কি!  তুই আবার বলে বসিস না আমার বিরহে দেবদাস হয়ে আছিস।’
অনিন্দ্যর ইচ্ছা করে আগের মতন গাট্টা মারে একটা। সামলে নেয় নিজেকে।
– ‘ওফ্ আবার মেয়েটা রাস্তার মাঝখান দিয়ে হাঁটে’। এবার হাত ধরে অনুমিতাকে সরিয়ে আনে বাঁদিকে।
– ‘আরে গাড়ি তো চলছে না ধাক্কা দেবে কে! উজবুক একটা!’
– ‘ম্যডাম রাস্তায় আমি আপনি ছাড়া আরো লোকজন আছে যাদের অসুবিধা হতে পারে।’
– ‘বটে!…তা বললি না তো?’
– ‘কি বলব? ওহ্! না না রিসেন্ট কেস ব্রেক আপ হয়ে গেল বছর খানেক তাও হতে চলল। তখন চাকরিটাও পাইনি আটকাতে পারলাম না।’
অনুমিতা চশমার ফাঁক দিয়ে দেখল,  অনিন্দ্যকে আপসেট করে দিল ইস!
কিছুক্ষণ চুপ থাকার পর অনিন্দ্য বলল, ‘তোর খবর কি?’
– ‘আমি বাবা প্রেম ট্রেম করার সময়ই পেলাম না। জানিসতো ব্যস্ত সিডিউল ম্যানেজ করে সময় দেওয়াটাই…  তোকেওতো সময় দিতে পারতাম না, আর এখন ওসব ভাবি না ডাইরেক্ট বিয়ের পিঁড়িতে বসব।’
অনুমিাতার কথা বলার ধরনে অনিন্দ্যর হাসি পেয়ে গেল। আর কিছুটা রাস্তা সামনে বাস পেয়ে যাবে দুজনেই। আবার রাস্তা আলাদা হয়ে যাবে। অনিন্দ্য একবার ভাবল ওর কি পুরনো প্রেম পাচ্ছে আবার করে? এখন তো ও চাকরিও করে, চাইলে বিয়েও করতে পারবে অনুকে। কিন্তু মাঝে কেটে যাওয়া সময়ের পাহাড় ডিঙিয়ে আসা কি সোজা হবে!
হঠাৎ হাতে টান পড়ল, ‘কি হল?’
– ‘চল আইসক্রিম খাই, এতদিনপর দেখা সেলিব্রেট করব না!’
অনিন্দ্য পার্স বার করতে গেলেই হাত চেপে ধরল অনু, ‘একদম নয়, হয় আমি দেব না হয় খাবই না, তুইইতো বরাবর দিয়েছিস।’
– ‘ওহ্! শোধ করছিস বুঝি?’
– ‘থাম তো!’ দোকানিকে বলল, ‘একটা চকলেট কাপ আর একটা বাটার স্কচ।’ তারপর অনিন্দ্যর দিকে ঘুরে বলল, ‘তাই তো? নাকি পছন্দ বদলে গেছে?’
আইসক্রিম ততক্ষণে হাতে চলে এসেছে। না, অনিন্দ্য এখনও বাটার স্কচই খায়।
– ‘একটা সিগারেট ধরাতে পারি?’
– ‘ইমা! তুই স্মোক করিস! ‘
– ‘কেন! তোর চলে নাকি?’
– ‘না না আমি স্মোক করি না।’
– ‘কেন করিস না?’
– ‘এ আবার কি কথা! দেরী হচ্ছে হাঁট।
অনিন্দ্য খানিকক্ষণ চুপ থেকে আবার বলে, ‘ওই বুকে মুখ গুঁজে কান্নার কেসটা কি?’
– ‘ওহ! ওইটা,  আরে অনেকদিন পর পুরনো প্রেমিক প্রেমিকার দেখা হলে শেষে মিল টিল হয়ে কান্নাকাটির ব্যাপার থাকে সেটাই বলছিলাম।
– ‘ওহ্।’
 
ধ্যাত!  জাস্ট ওহ্! অনুমিতার ভালোই লাগছে কথা বলতে। এতদিন থুড়ি বছর পর দেখা, মন চাইছে আরো একটু গল্প হোক। এখন ওরা দুজনেই ম্যচিওর। ভুল ভাল সিদ্ধান্ত আর নেবে না আশা করা যায়। তবে মনের মাঝে সংকোচ লাগে পুরনো বন্ধুর কাছে অনেক দিন পর বন্ধুত্বটাকে জাহির করলে খচখচানি লাগাটাই স্বাভাবিক নয় কি?  তার মধ্যে বিশ্রী গুমোট গরম। আইসক্রিমটাও শেষ করে কাপটা ছুঁড়ে ফেলল ফুটপাতের ধারে।
অনিন্দ্য শেষমেশ বলেই ফেলে, ‘তুই না অনেক বদলে গেছিস।’
– ‘মানে?’
– ‘মানে লুকসটা… ‘
– ‘আমি মোটা হয়ে গেছি তাইনা!  জানতাম আমি জানতাম!  তুইও বললি! অনুমিতা ব্যাগ থেকে ফোনটা বার করে স্ক্রীনে নিজের মুখ দেখতে থাকে।
– ‘আহ্, আমি কখন বললাম মোটা হয়েছিস?’
– ‘তার মানে হইনি?’
– ‘না তা নয়….’
– ‘দেখেছিস আবার বললি।’
– ‘আরো সুন্দর হয়েছিস সেটাই বলছি।’
খিলখিল করে হেসে অনু বলল,  ‘ও তাই, ঠাঙ্কু ঠাঙ্কু।’
কথা বলতে বলতে ওরা তালতলা পেরিয়ে গেল। আর একটু হাঁটলেই মৌলালি তারপর আবার নিজের রাস্তায় আলাদা হয়ে যাওয়া। মাঝের বছরগুলো যেন কোনদিন আসেইনি এমনি ভাবেই ওরা হেঁটে চলল। তারপরই কয়েক ফোঁটা জল আকাশ ফুটো হয়ে নীচে নেমে এল। বেশ বড় বড় ফোঁটা পিচের রাস্তা প্রথমে শুষে নিল তারপর চলল বৃষ্টির নৃত্য।
অনিন্দ্য বলল, ‘চল ওপাশে দাঁড়াই, ভিজে যাবি না হলে।’
অনুমিতা আকাশের দিকে মুখ তুলে দুচোখ বন্ধ করে বলল, ‘আমার কাছে ছাতা আছে।’
হতবাক অনিন্দ্য বলে ওঠে,  ‘খোল ছাতা,  কি ছেলেমানুষি করছিস।’
ততক্ষণে অনুমিতার গাঢ় সবুজ কুর্তি আরো গাঢ় হয়ে উঠেছে, হাওয়ায় উড়তে থাকা অবাধ্য চুল বশ মেনে চুপ করে গেছে।
– ‘অনিন্দ্য!  তুই বুড়ো হয়ে গেছিস। মনে নেই আগে তুই কত ভিজতিস, আজ কি হল?’
অল্প ঘেঁটে যাওয়া কাজলে অনুমিতাকে আরো রহস্যময়ী মনে হল। মনে হল এমন করে কোনদিন অনিন্দ্য কাউকে দেখেনি, কোনদিন কাউকে ভালোবাসেনি অনুকে ছাড়া। মুখে বলল, ‘আগে তো তুই ছিলিস সঙ্গে।’
অনিন্দ্যর সাদা শার্ট গায়ের সঙ্গে বসে যাচ্ছে। মুখ গলা হাত সবটা ভিজে উঠেছে। অনুমিতা সেই পুরনো গন্ধটা পেল বহু বছরপর। কোন পারফিউম কোন ডিওতে এই গন্ধ নেই কেবল অনিন্দ্যর কাছে আছে।
কি জানি কি হতে চলেছে, নতুন কোন অধ্যায়ের সূচনা নাকি ফেলে আসা অতীতের সুখকর পরিণতির সূত্রপাত আজ হবে। পায়ে পায়ে দুজনে এগোয়। একটা শেষ হয়ে যাওয়া অধ্যায়ে কেউ যেন উপসংহার জুড়ে দিতে চাইছে।
– ‘তোর বাস… ‘। অনিন্দ্য বাস দেখায়।
অনুমিতা ছুটে এগোয় বাসের দিকে, ছুটে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে অনিন্দ্য। তাহলে আর কি কোনদিন দেখা হবে না!
বাসটাকে ধরে ফেলে অনু। পা চালিয়ে এগিয়ে আসে অনিন্দ্য। অন্ধকার ভিড়ে অনু মিশে যায় কুহেলীকার মতন। অনিন্দ্য ভিজতে থাকে, চৌখুপি জানলায় চোখ খুঁজতে থাকে আজকের অনুকে।
 
– ‘কিরে শোন না…।’
-‘ কি হল?’ গলা উঁচিয়ে বলে অনিন্দ্য। বাস স্ট্রার্ট নিয়ে নিয়েছে ততক্ষণে।
দরজার সামনে এসে মুখ বাড়িয়ে অনু বলে,  ‘ফোন নম্বরটা বদলে ফেলেছিস?’
– ‘নাহ্, একই আছে।’
বাসটা বেড়িয়ে যায় অনুকে নিয়ে অনিন্দ্য ভিজতে থাকে রাস্তায় তবে এখন ও একা নয় আর। ফোনটা বার করে রিং করে ৯১৬******০। রিং হচ্ছে!
আজ আট বছর পর আবার সেই চেনা নম্বর থেকে ফোন আসে অনুর ফোনে  মৃদু হাসে বাইরে বৃষ্টির বেগ বেড়ে যায়। কান্নাকাটির ড্রামাটা তাহলে বৃষ্টির মধ্যে দিয়ে হল। নিজের মনেই অনু হেসে ওঠে।
 
‘হ্যালো….’।
 
“…..সমাজ সংসার মিছে সব,
মিছে এ জীবনের কলরব ।
কেবল আঁখি দিয়ে আঁখির সুধা পিয়ে
হৃদয় দিয়ে হৃদি অনুভব –
আঁধারে মিশে গেছে আর সব॥”


লেখকের কথা: অর্পিতা
অর্পিতা কলকাতার বাসিন্দা। নেহাত খেয়াল বশেই একদিন ডায়েরির পাতা থেকে লেখাটা মেইল করে পাঠিয়ে দিয়েছিল পরিচিত বানিজ্যিক ম্যগাজিনে ৷ সেই ছাপার অক্ষরে প্রকাশ পেল অনুগল্প। তারপর খোলা চোখে বাস্তব অভিজ্ঞতায় কখনও কল্পনার আঁচড় মিশিয়ে একের পর এক লেখা প্রকাশ পেল কখনও ফেসবুকের দেওয়ালে কখনও বা লিটিল ম্যগাজিনের পাতায়। কখনও বা প্রকাশিত হল গল্প সংকলনে।

14 Comments

    • অনিন্দ্যসুন্দর বিশ্বাস

      চেনা বাস, চেনা রুট,
      চেনা রুটি-বিস্কুট,
      চেনা চেনা চায়ের গেলাস,
      চেনা সিগারেট খাওয়া,
      চেনা ছবি হেঁটে যাওয়া,
      চেনা স্বপ্নের লাশ,
      চেনা রাগ, চেনা ক্রোধ,
      চেনা চেনা প্রতিশোধ,
      চেনা ছুরি, চেনা আক্রোশ,
      চেনা ঘৃণা – বিদ্বেষ,
      চেনা লজ্জা এই দেশ,
      চেনা ভয়ের অচেনা আপস।

      সুমনের কাছ থেকে ধার করা। কিন্তু এর থেকে ভালো বাবে আমি বোঝাতে পারতাম না।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to Top
error: লেখা নয়, লিঙ্কটি কপি করে শেয়ার করুন। ধন্যবাদ।

লেখা আহ্বান - বিস্তারিত জানতে ছবিতে ক্লিক করুন