অম্লানটাইমস-৬

লেখক : অম্লান ভট্টাচার্য

নিজেকে ভাঙ্গুন নিজেকে গড়ুন

এই পেজে যাঁদের নিয়মিত আসা যাওয়া আছে, তাঁরা এতদিনে বুঝতে পেরেছেন যে লেখক কোন অদ্ভুত বা রহস্যময় কোন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেননি। আলোচনাগুলো যদি সাজিয়ে ফেলা যায় তাহলে নিম্নলিখিত রূপে বোঝা যায় এইরকম:

প্রথমত বলা হয়েছে যে (এখন থেকে লেখকের ভাষায় বলা হবে), আমাদের সর্বপ্রথম নিজেকে চিনতে হবে, নিজেকে জানতে হবে। ব্যাপারটা হচ্ছে যে, আমি জানব আমাকে – আমাকে, অর্থাৎ আমার সাবকনশাস মাইন্ডকে জানতে হবে। আমি অর্থাৎ কনসাস মাইন্ড – এই কাজটা করবে। সাবকনশাস আর কনশাস এর মধ্যে যে দ্বন্দ্ব, সেটা ফুটে ওঠে আমাদের চারিত্রিক ছবিতে। সাবকনশাস মাইন্ড কিন্তু একাই কাজটা করে, কিন্তু কনশাস মাইন্ডকে অনেকে মিলে সাহায্য করে। সাবকনশাস মাইন্ডকে কন্ট্রোল করা যথেষ্ট পরিমাণে কষ্টকর, অত্যন্ত অ্যাকটিভ কনসাস মাইন্ড না হ’লে হয় না।

দ্বিতীয়ত বলা হয়েছে যে, এই সাবকনশাস মাইন্ডকে খুব থরোলি ছানবিন করতে হয়, তা না করলে পুরোটা চেনা বা জানা যাবে না। অনুরূপভাবে কনসাস মাইন্ডকেও অর্গানাইজ করতে হয়, কনসাস মাইন্ডকে যত্ন করে তৈরি করতে হয়। না হলে সাবকনশাস মাইন্ডের মোকাবিলা করা যায় না।

তৃতীয়ত, সাবকনশাস মাইন্ডের মধ্যে ভাল-মন্দ মেশানো একটা অস্তিত্ব আছে। সাবকনশাস মাইন্ডকে ব্যক্তিস্বার্থে ব্যবহার করা যায় একটা ভাল কাজের উদ্দেশ্যে। যে বস্তুর উপর জ্ঞান যত গভীর হবে, তার মধ্যে থেকে মানুষ তত বেশি শিক্ষা অর্জন করতে পারবে। সাবকনশাস মাইন্ড কিন্তু অটোঅ্যাকটিভ, তদ্রূপ কনসাস মাইন্ডকে অ্যাকটিভেট করতে হবে, না হলে সাবকনশাস মাইন্ড জয়লাভ করবে।

এছাড়া আরও কিছু বিষয়ের উপর ফোকাস করতে হবে। যেমন, সাবকনশাস মাইন্ডের গঠন সম্বন্ধে বিস্তারিত বিশেষ জ্ঞান থাকা দরকার। তা না হলে অনেক ফাঁক-ফোকর থেকে যায়। কনসাস মাইন্ডকেও তদ্রূপভাবে স্ট্রাকচারালি বিল্ড আপ করা দরকার।

বস্তুবাদ ও ভাববাদের উপর বিশেষ জ্ঞান অর্জন করতে হবে, নইলে মানসিক গঠনে একটা বিরাট ফাঁক থেকে যায়। ঈশ্বর সম্পর্কে প্রভূত বস্তুবাদী ব্যাখ্যার প্রয়োজন। ঈশ্বর বলতে ব্যক্তিজীবনের নিজের ও বৃহত্তর অর্থের ডিটেইলসকে অ্যানালাইসিস করার প্রয়োজন। তা না হ’লে সারা জীবন পরের মুখে ঝাল খেয়ে থাকতে হবে। বিজ্ঞান, পরিবেশ ও প্রযুক্তি বিষয়ে যুক্তিনির্ভর আলোচনার মাধ্যমে নিজের সমৃদ্ধি ঘটাতে না পারলে যে ঘাটতি তৈরি হবে, তা পূরণ করা এক কথায় অসম্ভব।

অবশেষে নিজেকে বিভিন্ন বিষয়ে, যথা কালচারাল অ্যানথ্রোপোলজি, মাইথোলজি, ওয়ার্ল্ড হিস্ট্রি, আর্টস ও লিটারেচার (এনসিয়েন্ট, মধ্যযুগ এবং মডার্ন পিরিয়ড), এবং পোস্ট-মডার্ন পিরিয়ডের অ্যাফেয়ারস সম্বন্ধে যথাযথ নলেজ নিজের ভিতর সংরক্ষণ করা দরকার, এবং এর কোন বিকল্প নেই।

আজ এখানে বন্ধ করছি, পরে কোন সেশনে আবার কিছু বলা যাবে। ধন্যবাদ।

অম্লানটাইমস।


আগের ও পরের পর্বের লিঙ্ক<< অম্লানটাইমস-৫

লেখক পরিচিতি : অম্লান ভট্টাচার্য
জন্ম ২৫ ডিসেম্বর ১৯৫৭, কলকাতা। স্কুল - ঢাকুরিয়া রামচন্দ্র হাইস্কুল, কলেজ - সেন্টপলস, বিজ্ঞান বিভাগে স্নাতক, কলা বিভাগে স্পেশাল স্নাতক, কারিগরি শিক্ষা, কম্পিউটার ডিপ্লোমা ও টেগোর রিসার্চ ইনস্টিটিউটে শিক্ষা গ্রহণ, কেন্দ্রীয় সরকারি চাকরি অবশেষে ৩১ ডিসেম্বর ২০১৭ অবসর। এযাবৎ তিনটি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত, মূলত কবিতা প্রাধান্য পেয়েছে লেখালেখিতে এবং এই সূত্রে চতুর্থ কাব্যগ্রন্থের প্রকাশ।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to Top
error: লেখা নয়, লিঙ্কটি কপি করে শেয়ার করুন। ধন্যবাদ।