হা অদৃষ্ট! এই কি নিয়তির লিখন?

লেখক: রতন চক্রবর্তী

এ এক ভয়ঙ্কর সময়। আমরা করোনা নিয়ে ঘর করছি। এরই মধ্যে ধ্বংসাত্মক হানাদারি চালালো আম্ফান বা উম্পুন। নিদারুণ হতাশায় অনেকেই বলে উঠেছেন, ‘অদৃষ্টে এটাই ছিল। নিয়তির লিখন কে রোধ করতে পারে?’
যাঁরা একটু অতিমাত্রায় বামপন্থী, তাঁরা অবশ্য এ সব কথা কানে গেলে বলে বসবেন, ‘অদৃষ্ট বা নিয়তির ব্যাপারটাই গাঁজাখুরি। ঘটনাচক্রে এখন মানুষ ‘লক ডাউন’ বা ‘সোশ্যাল ডিস্ট্যান্সে’ রয়েছে; কাজেই নিয়তি ও অদৃষ্ট নিয়ে চায়ের কাপে বাঙালি-সুনামির কোনও সুযোগ নেই। এরই মধ্যে একটি ধর্ম সম্প্রদায়ের মানুষ রোজা বা উপবাসের কৃচ্ছ্র পালন করে ঈদ উৎসব উদযাপন করলেন। ঈদ উৎসবের ‘করোনা নিয়তি’ হল উম্পুন ছোবলে করুণ ভাবে অ-সঙ্ঘবদ্ধতায় উৎসব যাপন। অথচ, সঙ্ঘবদ্ধতা বা মিলনই হল উৎসবের প্রাণ। উৎসবের করণীয় হল জাকাত বা দান।

আমি ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকবার ‘নিয়তি’ ও ‘অদৃষ্ট’ শব্দ দুটি ব্যবহার করেছি। আসলে আমি নিয়তি মানি। অদৃষ্টও মানি। তার মানে অবশ্য এটা নয় যে, আমি অদৃষ্টবাদী বা নিয়তিবাদী প্রচলিত অর্থে। কেউ কেউ হয়তো আমার বকবকানি শুনে ভাবতেই পারেন যে, লোকটা স্ববিরোধিতায় ভুগছে। তবে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছনোর আগে ‘আমার কৈফিয়ৎ’টা একটু ভেবে দেখার অনুরোধ করবো।
আমি মনে করি, একজন বিজ্ঞানমনস্ক মানুষ একই সঙ্গে বস্তুবিজ্ঞানে বিশ্বাসী থেকে শব্দগত ও নিহিত অর্থে নিয়তিবাদী এবং অদৃষ্টেও বিশ্বাস রাখতে পারেন। যা কিছু আমরা চোখে দেখতে পাই না সেটাই হল অ-দৃষ্ট। অ-দৃষ্ট হলেই যে সে অস্তিত্বহীন হবে, তা কিন্তু নয়। প্রোটন, ইলেকট্রন, নিউট্রন থেকে কোভিড নাইন্টিন করোনা ভাইরাস সবই অ-দৃষ্ট। অথচ এরকম বহু বাস্তব শক্তিযুক্ত অদৃষ্ট বস্তু ও ভাইরাসের অস্তিত্ব প্রমাণিত সত্য। তাই এই অ-দৃষ্টে বিশ্বাস স্থাপন করা প্রচলিত হতাশ অদৃষ্টবাদের সমগোত্রীয় নয়। এটা বিজ্ঞানমনস্কতা। আবার এটা না মেনে উপায় নেই যে, আমাদের এ পর্যন্ত জানা বিশ্ব ও মহাবিশ্ব একটি সুনির্দিষ্ট নিয়মে বাঁধা। পৃথিবী যে দিন তার নিয়ম লঙ্ঘন করে তার নির্দিষ্ট পরিক্রমণ কক্ষপথ বদল করবে সে দিন সে অস্তিত্ব হারাবে।
নিয়ম আর নিয়তি এই শব্দ দুটি কিন্তু একই উৎসজাত। এই দুই শব্দের মূল হল যম্‌ ধাতু। অতি প্রাচীন ভাষাচার্য যাস্ক শব্দের অর্থ বের করার পদ্ধতি হিসেবে ধাতুকেই গ্রহণ করতে বলেছেন। সমকালীন পন্ডিতপ্রবর নোম চামস্কি জানিয়েছেন, শব্দের একটি ডিপ স্ট্রাকচার বা গভীর গঠন আছে। আর তার ওপরে গড়ে ওঠে বাইরের গঠিত রূপ। বাইরের কাঠামো থেকেই গভীর কাঠামোর পরিবর্তন বোঝা যায়। শব্দের সঙ্গে শব্দের সম্পর্ক এবং শব্দ প্রয়োগের পারিপার্শ্বিকতার উপর শব্দের অর্থ নির্ভর করে, রূপ বদলও হয়। শব্দতত্ত্বগত এই সামান্য দু’চার কথা বলে নিতে হল নিয়তি শব্দের নিয়তি স্থির করার ভূমিকা হিসেবে।

যম্‌ (বা য়ম্‌) ধাতুর অর্থ অনেক। যেমন বন্ধন করা, বেষ্টন করা, নিবৃত্ত করা, অবস্থান করা প্রভৃতি। যম্‌ (য়ম্‌) ধাতুর আগে নির্দিষ্টতা বোধক ‘নি’ উপসর্গ যুক্ত হয়ে বিশেষ্য ও বিশেষণ পদ বাচক নিয়তি, নিয়ম শব্দের সৃষ্টি। নিয়ত ক্রিয়াশীল বলেই নিয়তি বা নিয়ম। জীবনের অবশ্যম্ভাবী পরিণতি মৃত্যু বলেই সরাসরি ‘যমে নেওয়া’ শব্দবন্ধটির প্রয়োগ হয়ে থাকে। অর্থাৎ এই শব্দবন্ধটির ক্ষেত্রে আচার্য যাস্ক এবং নোম চামস্কির সূত্রে কোন বিরোধ নেই। সমকালের ব্যাপক-মান্য বুদ্ধিজীবি চামস্কি বাম-মনস্ক, অন্যার্থে বিজ্ঞানমনস্ক, সুপণ্ডিত রূপে পরিচিত। অতএব, নিয়তি এমনকি অদৃষ্টকে মান্য করা হলে বিজ্ঞানমনস্কতা ক্ষুণ্ণ হওয়ার কথা নয়। বিশ্ববিধানকে মান্যতা দিয়ে তাকে জেনে ও বুঝে মানুষের অনুকূলে তাকে কিছু পরিবর্তন করা বিজ্ঞান সাধনার অঙ্গ। অর্থাৎ মানুষ এই নিয়তির নিয়ন্তা কল্পিত খোদার উপরে কিছু খোদকারি করার অধিকার অর্জন করেছে নিয়তির পাঠ বুঝতে বুঝতেই। এটাই তার অন্বেষণ, বিজ্ঞানমনস্ক জীবন অন্বেষণ নিয়তিবাদী হয়েই। করোনা কোভিড নাইন্টিনের গঠনতন্ত্র কোন নিয়তি অনুযায়ী, কোন নিয়মে সে মিউটেশন করে – দ্রুত তার হদিশ পেতে নিয়তির পথ ধরেই এগোতে হচ্ছে বিজ্ঞানীদের। খোদকারি করে চলছে ভাইরাস ধ্বংসের টীকা, ওষুধ আবিষ্কারের অন্বেষণ, গবেষণা। যেমন সাইক্লোন কোন নিয়তি অনুযায়ী হয় সেই নিয়তি বা নিয়মটি এপর্যন্ত যতটা জানা গিয়েছে, তার জোরেই আবহাওয়া বিজ্ঞানীরা অনেকটা আগেভাগেই জানিয়ে দিতে পেরেছেন উম্পুন কবে কখন কোথায় ঝাঁপাবে। এই নিয়তি যম-সদৃশ। তাকে প্রতিহত করার খোদকারি এ পর্যন্ত করা সম্ভব হয়নি। নিয়তি বলছে, এ চেষ্টা অসম্ভব। কোনও কোনও বিজ্ঞানী, প্রযুক্তিবিদ ও আবহাওয়াবিদ মনে করছেন, মানুষ নিয়তির পাঠ যথেষ্ট রপ্ত করেছে বলে অতিরিক্ত খোদকারি করেছে প্রকৃতির ওপর, তাই এই বিপর্যয়।

আসলে মানুষ তো তার নিয়তিতেই সবচেয়ে অবাধ্য প্রজাতি হিসেবে বিকশিত হয়েছে। প্রকৃতির নিয়ম অনুযায়ী পৃথিবী তার নিজের কক্ষপথেই ঘুরবে, জঙ্গল জানোয়ারদের, জল জলচর প্রাণীর, আকাশ খেচরদের জন্য নির্দিষ্ট। সমুদ্র, নদী, পর্বত প্রভৃতি অপ্রাণীর স্থানও নিয়তি নির্দিষ্ট। মানুষ ক্রমে ক্রমে এই নিয়তির পাঠ রপ্ত করে খানিক বুঝে নিজের সাম্রাজ্য বিস্তারে মনোযোগী হয়েছিল; প্রথমে অবশ্যই প্রয়োজনের দায়ে। তারপর এই দায় মেটাবার সাফল্য পেতে পেতে তার অবাধ্যতা ক্রমাগত অভ্রংলিহ হতে থাকে। ভোগবাদের অসীম বিস্তৃতি তার ব্যক্তি জীবন, পারিবারিক জীবন, সামাজিক জীবন, অর্থনৈতিক জীবন, রাজনৈতিক জীবন, রাষ্ট্রীয় জীবন এমনকি সাংস্কৃতিক বিনোদনের জীবনকেও গ্রাস করতে থাকে, গ্রাস করেই চলেছে। অবাধ্যতায় অবাধে নিয়তি লঙ্ঘন ডেকে আনছে বিপত্তি। নিয়তি অনুযায়ী পশুপাখি, জলচর, খেচরদের অসুখের ভাইরাস ও ব্যাক্টেরিয়া তাদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকার কথা। মানুষেরটা থাকার কথা মানুষের মধ্যে। কিন্তু মানুষ সর্বত্রগামী হতে গিয়ে এই নিয়তি লঙ্ঘন করেছে। মিক্সিং বা মিশ্রণ অনিবার্য করেছে। গাছপালা, নদী-পর্বত প্রভৃতি নানা প্রাকৃতিক ক্ষেত্রে অতিরিক্ত অবাধ্যতায় হস্তক্ষেপ নিয়তির ভারসাম্যে বিঘ্ন ঘটিয়েছে। বাড়ছে প্রাকৃতিক বিপর্যয়।

অথচ সৃষ্টির ও বিবর্তনের নিয়তি অনুযায়ী, মানুষের মধ্যে প্রজাতিগত ভাবে অবাধ্যতার উপাদান থাকলেও প্রজ্ঞার উপাদানও রয়েছে। নিজেকে নিবৃত্ত করার শক্তি তার মধ্যেই রয়েছে। আবার সম্পদশালী হওয়ার লোভে প্রজ্ঞাকেও বিকৃত করার চতুরতা এক শ্রেণীর মানুষের করায়ত্ত। এরাই নিয়তি ও অদৃষ্টবাদ অন্য মানুষের ওপর চাপিয়ে দিয়েছে ধর্মীয় আবরণ জুড়ে। ওই দুই শব্দের মতো ভাগ্য বলে আর একটি বিষয়কেও জুড়ে নেওয়া হয়েছে ধর্মের সঙ্গে। ভাগ্য শব্দের আদি লৌকিক অর্থকে বিকৃত করে অলৌকিকতার সাথে জুড়ে নেওয়া হয়েছে। ভাষাতাত্ত্বিকদের একাংশ দেখিয়েছেন ‘ভাগ’ শব্দ থেকেই ‘ভাগ্য’ শব্দটির সৃষ্টি। ভাগ এবং ভাগ্য এই দুই শব্দের উৎস ধাতুটি হল ‘ভজ’- অর্থ ভাগ করা বা বিভক্ত করা। আদি সাম্যের সমাজে ব্যক্তি সম্পদ বলে কিছু ছিল না। সংগ্রহ বা শিকার করা সব কিছুতেই ছিল গোষ্ঠীর সকলের সমান ভাগ। শ্রেণি বিভক্ত পরবর্তী সমাজ ও রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাগুলিতে একদল চতুর এই ভাগ করে দেওয়ার অধিকারটি দখল করে নেয়। তারাই হয়ে ওঠে ভাগ্যের নিয়ন্ত্রক ভাগ্যবিধাতা!

সভ্যতার আদিযুগে মানুষ কার্য-কারণ সম্পর্কগুলো বুঝতো না। দাবদাহ, ঝড়, বন্যা, বজ্র-বিদ্যুৎ সম্পর্কে তার অভিজ্ঞতা ছিল ভয়ের। এই ভয় থেকেই গোষ্ঠীজীবনে জন্ম নিয়েছিল অতি-প্রাকৃত শক্তির কল্পনা এবং তাকে নিঃশর্ত মান্যতা দেওয়ার বশ্যতা। এক একটি ঘটনার ভয় থেকে সেই ভয় পাইয়ে দেওয়ার এক একটি শক্তিই হলো নানা দেবতা সৃষ্টির পৃষ্ঠভূমি। বলা হয়ে থাকে পৃথিবীর প্রথম অজ্ঞ মানুষটি যখন প্রথম তঞ্চকের দেখা পেল, তখনই গড়ে উঠলো ধর্মের শোষণ-কল। এই শোষণ-কলেই নিয়তি, অদৃষ্ট, ভাগ্য ইত্যাদির ব্যবহারিক অর্থ বদল হতে থাকে। এই ধারণা তৈরি করে দেওয়া হয় যে, কোনও কার্য-কারণ সম্পর্ক নয়, প্রতি মানুষের নিয়তি, অদৃষ্ট ও ভাগ্য ঈশ্বর কর্তৃক নির্দিষ্ট। এই ঐশ্বরিক বিধান কার্যকরী করার অধিকারী হল পুরোহিত ও তাদের পৃষ্ঠপোষক শাসককূল। এরই সঙ্গে তৈরি হল গণকঠাকুর। গণনার কু-ফলাফলকে সু-ফলাফলে পরিবর্তিত করা বা কুফলকে আটক করে দেওয়ার নানা বুজরুকি ব্যবসা শুরু হল রমরমিয়ে। নিয়তি, অদৃষ্ট আর ভাগ্যের এই করুণ পরিণতি মেনে নেওয়াই হল অবিজ্ঞান।

নিয়তি বা বিশ্ববিধানের কার্যকারণ বুঝে নিতে নিয়তিবাদী থেকে অদৃষ্ট শক্তিগুলিকে মানব প্রগতিতে কাজে লাগানোর গবেষণায় অদৃষ্টবাদী থাকা অসঙ্গত কিছু নয়। এর সাহায্যেই ‘সমান ভাগ পাওয়ার অধিকার সকলের সমান’ এই ভাগ্য নির্ধারক আন্দোলনেও সহায়তা করা সম্ভব।


ছবি: প্রণবশ্রী হাজরা


লেখকের কথা: রতন চক্রবর্তী
অর্ধশতক সাংবাদিকতার সঙ্গে যুক্ত থেকেছেন। দৈনিক, সাপ্তাহিক বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় চাকরির পাশাপাশি কাজ করেছেন বিদেশি দূতাবাসের কলকাতা তথ্য দপ্তরে। তথ্যচিত্র পরিচালনা করেছেন। লিখেছেন ছোট গল্প, নাটক চিত্রনাট্যও। মার্কসীয় দর্শনে বিশ্বাসী।
জন রিডের টেন ডেজ দ্যাট স্যুক দ্য ওয়ার্ল্ড নামে রুশবিপ্লবের দশ দিনের কাহিনি নিয়ে বিশ্বখ্যাত রিপোর্টাজ গ্রন্থ অবলম্বন করে লিখেছেন নাটক অভ্যুত্থান যা ৭৪ জন কুশীলব নিয়ে অভিনীত হয়।

শেয়ার করে বন্ধুদেরও পড়ার সুযোগ করে দিন

31 Comments

    • tripti santra

      অসাধারণ!
      যুক্তি দিয়ে যে ভাবে শব্দ দুটিকে বিশ্লেষণ করলেন,তা একমাত্র রতন দার মতো প্রাজ্ঞ সাংবাদিক এবং শাস্ত্র বিশারদই পারেন।
      রসজ্ঞান আর পরিবেশন অতুলনীয়।
      শেয়ারিলাম..

      • অজ্ঞাতনামা কেউ একজন

        ছোট থেকে দুটো শব্দের যে নেতিবাচক অর্থ জানতাম আজ তা আমুল বদলে গেল। এমন একটা চোখ খুলে দেওয়া লেখার জন্য রতনদাকে প্রণাম।

  1. tripti santra

    অসাধারণ!
    যুক্তি দিয়ে যে ভাবে শব্দ দুটিকে বিশ্লেষণ করলেন,তা একমাত্র রতন দার মতো প্রাজ্ঞ সাংবাদিক এবং শাস্ত্র বিশারদই পারেন।
    রসজ্ঞান আর পরিবেশন অতুলনীয়।
    শেয়ারিলাম..

    • Asim

      Ratanda, Valo achhen ? সক্রেটিসের যুক্তিমনস্কে তার পরে এসেছিল বিজ্ঞান manaskata। রেনেসাস এর পর আজ বহু বছর কেটে গেছে। অনেক marak আর যুদ্ধের স্মৃতি নিয়ে, । আজ নতুন করে সভ্যতার সংকট। Manovumi একটা নাচার উত্তেজনায়, ।পুরোনো daily life, এমনকি পুরোনো দর্শন, স্টেট power এর চেহারা পাল্টে যেতে পারে। যদি বেঁচে থাকি paltabo আমি আর আপনিও। আপনি বাঁচলে ব্যাপার নাম। এই ভাবনাকে ঘৃণাই টো করেছি বারবার। নিয়াতিবাদিকে দুর্বলই ।

      • কমলেশ গুপ্ত

        অসাধারন লেখা পরে মুগ্ধ হয়ে গেলাম। বাস্তবতার
        ছোয়ায় কিছু গাম্ভীর্যতার পরম্পরা

      • অজ্ঞাতনামা কেউ একজন

        খুব informative. পড়ে মুগ্ধ হলাম. আরো অসাধারণ এইরকম লেখার অপেক্ষায় রইলাম!

      • অজ্ঞাতনামা কেউ একজন

        Very informative. পড়ে মুগ্ধ হলাম. এইরকম আরো অসাধারণ লেখার অপেক্ষায় রইলাম…. Manali.

  2. অজ্ঞাতনামা কেউ একজন

    অভূতপূর্ব একটা বিশ্লেষণ ধর্মী লেখা , পড়লে শেখা যায়,চিন্তার রসদ সংগ্রহ করা যায় । ভাষা এবং শব্দ বন্ধের মুন্সিয়ানা পাঠক কে পালাতে দেয়না ।
    ধন্যবাদ রতন দা । আরও চাই ।

  3. Mouli Mitra

    ঋদ্ধ হলাম। খুব ভালো লেখা।বর্তমান পরিস্থিতিতে কিছু সংখ্যক মানুষের চিন্তা বিভ্রান্ত হচ্ছে তার পারিপার্শ্বিক অনাকাঙ্ক্ষিত তর্ক-বিতর্কে এবং অস্পষ্ট ধ্যান-ধারণায়।এই পরিস্থিতিতে আপনার এই লেখা অস্পষ্ট ধ্যান-ধারণার মানুষদের দৃষ্টিকে করবে স্বচ্ছ ও সুদূরপ্রসারী। আগামীতে এ ধরনের আরও অনেক ভালো লেখার আশায় রইলাম। অনেক শুভেচ্ছা রইল।

    • কমলেশ গুপ্ত

      অসাধারন লেখা। বাস্তবতার সঙ্গে গাম্ভীর্যতার মিশ্রন
      লেখকের মুন্সীয়ানাকে ধরে রেখেছে।

  4. আলোক মুখার্জি

    লেখাটি পড়ে আমার একটি প্রাচীন গল্প মনে পড়েছে।নবরত্নসভার সেরা কালিদাস কেন?- এই প্রশ্ন ওঠায় রজার নির্দেশিত একটি গাছের বর্ণনা দিতে গিয়ে এক রত্ন বলেছিলেন, — শুষ্কং কাষ্ঠং তিষ্ঠেৎ অগ্রে।আর কালিদাসের উক্তি ছিল— নিরস তরুবর পুরত ভাগে।
    এই লেখায় দেখা গেল,একটি জটিল বিষয় নিয়ে প্রতর্ক কত তীক্ষ্ণতায় মধুরভাবে ব্যক্ত করা যায়।

  5. অজ্ঞাতনামা কেউ একজন

    আমার লেখাটি ভালো লেগেছে বলে অনেকে মন্তব্য করেছেন,ফোন হোয়াটসঅ্যাপ ম্যাসেঞ্জারে বার্তা দিয়েছেন।প্রতিক্রিয়ার বহর দেখে মনে হচ্ছে পাঠক সংখ্যাও নেহাত কম হবে না হয়তো।লেখার যুক্তি বিন্যাস,আঙ্গিক,এবং পরিবেশেনের সপ্রশংস উল্লেখ লক্ষ্য করেছি কয়েকটি মন্ত। এ সবে কিছু আধিক্য থাকায় আমি এই বয়সে খুবই বিব্রত বোধ করছি।সবিনয়ে জানাচ্ছি মার্ক্সবাদী দর্শ, যুক্তিবাদে যাঁরা বিশ্বাসী ও বিজ্ঞানমনস্ক তাঁদের সকলের ভাবনাই এই খাতে বয়ে চলেছে দেশে বিদেশে।এ নিয়ে লেখালিখিও কম হয়নি।অতেব এই চিন্তা সামনে তুলে ধরার কৃতিত্ব একা আমার মোটেই নয়।আমি ঐ ধারার একজন নগণ্যবাহক ও প্রন্তবাসী কলমচি।পাঠকদের প্রশ্রয় আমাকে আরও বেশি পড়া,ভাবা ও পৃথিবীর মুক্ত পাঠশালায় বোঝার ক্ষেত্রে প্রণোদিত করবে।আমি আপনাদের পাঠপ্রতিক্রিয়ায় আপ্লুত ও কৃতজ্ঞ।আরও কিছু লিখতে আমাকে আপনারা প্রণোদিত করলেন।ধন্যবাদ। রতন চক্রবর্তী।

  6. Manashi Banerjee

    ভাল লাগলো লেখাটা। সুন্দর বিশ্লেষণ করেছেন। যুক্তিনির্ভর। তবে কিছু জায়গায় ভাষা আরও প্রাঞ্জল হলে ভাল হত।

  7. অজ্ঞাতনামা কেউ একজন

    দারুণ !! এভাবে গভীরে গিয়ে শব্দগুলোর ব্যুৎপত্তিগত অর্থ কখনও ভেবে দেখিনি। “নিয়তি”, ” নিয়ম”, “ভাগ্য”…… শব্দগুলোর প্রচলিত ধারণাদেই বিশ্বাসী ছিলাম। শ্রদ্ধেয় লেখক নতুন করে ভাবতে শেখালেন। শব্দের ব্যবহারিক চলন মানুষের দ্বারা পরিবর্তিত হয়ে কীভাবে অর্থের প্রচলন হয়, তারও একটা সম্যক ধারণা পাওয়া গেল। নতুন করে ভাবতে শিখলাম। প্রণাম, দাদা।

  8. বিপুল বিশ্বাস

    মার্ক্সবাদী দর্শনে অল্পস্বল্প বিশ্বাস নিয়ে এতদিন যে শব্দগুলোকে ভাবতাম ভাববাদী শব্দ,এনং সেগুলি পরিহার করেই চলতাম,অন্যকে এগুলোর অসারতা নিয়ে বিদ্রূপও করতাম,এই লেখা পড়ার পর তা যে সম্পুর্ন ভ্রান্ত তার উপলব্দি হলো।অদৃষ্ট, নিয়তি বা ভাগ্য শব্দগুলো ব্যবহার যে পরিত্যাজ্য নয়,তা সুপন্ডিত মার্ক্সবাদী
    প্রবন্ধকার সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন।এমন লেখা আরো কিছু পেলে নিজের ক্ষুদ্র জ্ঞানভান্ডারকে সমৃদ্ধ করা যায়।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to Top
error: লেখা নয়, লিঙ্কটি কপি করে শেয়ার করুন। ধন্যবাদ।